Pages

প্রকাশিত গ্রন্থ-সমূহ

শনিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৬

তিন’শ ষাট আউলিয়ার বিবরণ

মদীনা মসজিদের সামনে কবি, লেখক ব্লগার ওঁ পূবালী ব্যাংকার চৌধুরী ইসফাকুর রহমান কুরেশী

১। শাহজাদা শেখ আলী ইয়ামেনি

তিনি ইয়ামেনের রাজপুত্র ছিলেন। হজরত শাহজালালের অতিপ্রিয় এই সহচর ইয়ামেনের সুলতান ওমর আশরাফের পুত্র। ইয়ামেনের  রাজসিংহাসনের মায়া পরিত্যাগ করে তিনি শাহজালালের  অনুগামী হন এবং চিরকুমার অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করেন। হজরত শাহজালালের সমাধির ঠিক দক্ষিণপূর্ব পাশে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। 

২। হাজি ইউসুফ

তিনি শাহজালালের ঘনিষ্ঠ অনুচর। হজরতের নির্দেশে তিনি বিবাহ করেন ও তাঁর বংশধরগণ পবিত্র দরগার খাদেম নিযুক্ত হন। বর্তমান সরেকওম (সরদারে কওম) পরিবার তাঁর বংশধর এবং এই পরিবার হতে পুরুষানুক্রমে দরগার মোতাওয়াল্লি নিযুক্ত হন। শাহজালালের সমাধির ঠিক দক্ষিণপার্শ্বে চার কবরের সর্বপূর্বের সমাধিতে তিনি সমাহিত আছেন।

৩। হাজি দরিয়া

হজরতের সমাধির ঠিক দক্ষিণের চার কবরের মধ্যে হাজি ইউসুফের ঠিক পশ্চিমে তিনি শায়িত আছেন। তাঁহার কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৪। হাজি খলিল

হজরতের সমাধির ঠিক দক্ষিণের চার কবরের মধ্যে হাজি দরিয়ার পশ্চিমে তিনি শায়িত আছেন। তাঁরও কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৫। শাহদাউদ কুরায়শি

আরব হতে আগত শাহজালালের প্রথম বারজন সঙ্গীর অন্যতম শাহদাউদ কুরায়শি পবিত্র মক্কা নগরীর অধিবাসী ছিলেন। দক্ষিণসুরমা উপজেলার রেঙ্গা পরগনার দাউদপুর গ্রামে সহধর্মিণী ও একমাত্র পুত্র  রহিম দাউদ কুরায়শিসহ তাঁর পবিত্র মাজার শরীফ বিদ্যমান। দাউদপুরের সুবিখ্যাত চৌধুরী পরিবার তাঁরই বংশধর। 

আসামের এম এল সি খাঁন বাহাদুর গৌছউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, প্রাক্তন পুলিশ প্রধান ই এ চৌধুরী, সচিব ও মন্ত্রী ইমামউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, এম পি শফি এ চৌধুরী, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা নাসির এ চৌধুরী, খাদ্য সচিব নূরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, কবি লেখক ব্লগার ব্যাংকার চৌধুরী ইসফাকুর রহমান কুরেশী, সরকারি আমলা চৌধুরী নিসাতুর রহমান কুরেশী, স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহিদ শামসুদ্দোহা কুরেশী, পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান কুরেশী, ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর এবং সিলেট বিমানবন্দরের প্রাক্তন পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমাউন দাউদ কুরেশী, অধ্যাপক ডাঃ নিয়াজ আহমদ চৌধুরী, রূমানা শরিফ, দানশীল রিয়াজ এ চৌধুরী, জমিদার মোহাম্মদ মোফজ্জিল চৌধুরী, শিক্ষাগুরু সফিকুর রহমান চৌধুরী, জমিদার মোহতাছিন আলী চৌধুরী, জমিদার ইসহাক রাজা চৌধুরী, জমিদার আব্দুল জব্বার চৌধুরী, ডাঃ আব্দুল হক চৌধুরী, গ্রিনডেল্টার এম ডি ফারজানা চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিফ একাউন্টেন্ট ওঁ লেখক রজিউদ্দিন কুরেশী, ব্যবসায়ি আরিফ এ চৌধুরী, আতিফ এ চৌধুরী, ভূমিদাতা ফজিরা খাতুন ও মেহের চান্দ বানু প্রমুখ এই বংশের বিশিষ্ট ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। ডাঃ নূরজাহান বেগম চৌধুরী, শিল্পী লতিফা শফি চৌধুরী, মুমেনা ই এ চৌধুরী, শিল্পী ঠীটি প্রমুখ এই বংশে আসা সুপ্রসিদ্ধ বধুগণ।   

৬। আহমদ নিশান বরদার

তাঁর মাজার সিলেট শহরের মজুমদারির খাসদবির মহল্লায় অবস্থিত।   

৭। আরিফ মুলতানি

তাঁর মাজার সিলেট শহরের পুরানলেন মহল্লায় অবস্থিত।

৮। সৈয়দ আহমদ

তাঁর মাজার সিলেট শহরের রায়নগর মহল্লায় অবস্থিত।

৯। শেখ আব্দুল্লাহ

তাঁর মাজার সিলেট শহরের নাইওরপুল মহল্লায় অবস্থিত।

১০। কাজি ইলিয়াস উদ্দিন ওরফে কাজি গয়লা

তাঁর মাজার কাজিটোলা, কসবে সিলেটে অবস্থিত। তাঁরও কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না। তার বাসস্থান কাজিইলিয়াস মহল্লায় ছিল। “সুহলে ইয়ামেনি” গ্রন্থে তাঁর নামের উল্লেখ নেই।

১১। সৈয়দ হামজা

তাঁর বংশধরগণ ঝর্নারপার টিলারউপর নামক স্থানে বসবাস করছেন। তাঁর বংশের কিছুলোক মোমেনশাহির সিকন্দর নগরে স্থানান্তরিত হয়েছেন। তার মাজার ঝর্নারপার টিলার উপর অবস্থিত।

১২। সৈয়দ উমর সমরকন্দি

তাঁর মাজার সিলেট শহরের উমর সমরকন্দ মহল্লায়, ওসমানী জাদুঘরের সামনে অবস্থিত। তাঁর বংশের কিছু লোক এখনও ঐ স্থানে বসবাস করছেন ও কতিপয় লোক কয়েক প্রজন্ম আগে ওসমানীনগর উপজেলার গওহরপুর পরগনার তাহিরপুর চলে যান।

১৩। শেখ খিজির

তাঁর মাজার সিলেট শহরের বারুদখানা মহল্লায় অবস্থিত।

১৪। খান্ডা ঝকমক

তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। তাঁর মাজার সিলেট শহরের রায়নগর মহল্লায় অবস্থিত।

১৫। হাজি গাজি

তাঁর মাজার সিলেট শহরের ইদগাহ ময়দানের পূর্বদিকে অবস্থিত। তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। 

১৬। শায়খ চাষনি পীর

তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। তাঁর মাজার সিলেট শহরের গোয়াইপাড়া মহল্লায় এক সুউচ্চ টিলার উপর অবস্থিত। তার কোন বংশধর নাই। তিনি শাহজালালের আদেশে আরবের মাটির সাথে সিলেটের মৃত্তিকা পরীক্ষা করেন। তাঁর মাজারে অজস্র বানর বিচরণ করে থাকে, জেয়ারতকারীরা এই বানরদেরকে সম্মান করেন ও খাদ্য বিতরণ করে থাকেন।

১৭। শেখ জগাই

তাঁর মাজারও সিলেট শহরের গোয়াইপাড়া মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

১৮। হাফিজ মোহাম্মদ জাকারিয়া আরবি

হজরতের আরব হতে আগত প্রথম বারজন সঙ্গীর অন্যতম। তিনি সাহাবি হজরত উকেল কোরেশির (রাঃ) বংশধর। হাফিজ মোহাম্মদ জাকারিয়া আরবির মাজার কুশিয়ারা নদীর দক্ষিণ তীরে নবীগঞ্জ উপজেলার পিঠুয়া মৌজায় অবস্থিত বলিয়া ধারণা করা হয়। স্থানীয় লোকেরা মাজারটিকে আরবি মাজার বলে অভিহিত করে থাকে। 

তাঁর কিছু বংশধর সিলেট শহরের রায়নগর মহল্লার মোখতার খাঁ কিরমানীতে ছিলেন। কিছু বংশধর দরগামহল্লাতেও বসবাস করছেন। কেহ কেহ তাঁর মাজার অজ্ঞাতও বলেছেন।

১৯। কাজি জাহান ওরফে হজরত জাহান

তাঁর মাজার সিলেট শহরের জল্লারপার মহল্লায় অবস্থিত।

২০-২৪। সৈয়দ জিয়া উদ্দিন ও অন্যান্য চার পীর 

তাঁদের মাজার সিলেট শহরের পুরানলেনে সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের উত্তরে অবস্থিত। 

এখানে সৈয়দ জিয়াউদ্দিনসহ শাহজালালের মোঠ পাঁচজন শিষ্যের মাজার অবস্থিত বলে স্থানটি পাঁচপীরের মোকাম নামে পরিচিত।

২৫। শেখ আলী পীর

তাঁর মাজার সিলেট শহরের মজুমদারির একটি টিলায় অবস্থিত।

২৬। শাহ ফরিদ রওশন চেরাগ

তাঁর মাজার সিলেট শহরের দর্শনদেউড়ি এলাকায় সিলেট সুনামগজ্ঞ রোডের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত।

২৮। খাজা নসির উদ্দিন ওরফে শাহচট

তাঁর মাজার সিলেট শহরের কালিঘাটে সিলেট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের মসজিদের উত্তরে অবস্থিত। তিনি চিরকুমার অবস্থায় ইবাদত বন্দেগিতে কালাতিপাত করেন বলে ধারণা  করা হয়।

২৯। নূরুল্লাহ ওরফে শাহনূর

তাঁর মাজার সিলেট শহরের বন্দরবাজার কাইরাপট্টির পূর্বদক্ষিণ কোণে অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নেই। জনরব আছে এই পীরের আজানে মনারার টিলায় গোড়গোবিন্দের রাজপ্রসাদ ভুতলশায়ী হয়।

৩০। পীর বুরহান উদ্দিন

তাঁর মাজার সিলেট শহরের কুশীঘাটে সুরমা নদীর উত্তরপারে তাঁর বসতবাটিতে অবস্থিত। পাশে তার বেগমের কবর রয়েছে। রাজা গৌড়গোবিন্দ কতৃক নিহত তাঁর শিশুপুত্রটির কবরও পাশে রয়েছে। তাঁর এই শিশুপুত্রের হত্যাকান্ডের ফলে সিলেটে মুসলিম অভিযান সংঘটিত হয়।

৩১। মানিক পীর

তাঁর ও তাঁর সঙ্গী ছোটপীরের মাজার সিলেট শহরের মানিক পীরের টিলার  চুড়ায় অবস্থিত। এই বিখ্যাত পীরদ্বয়ের কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৩২। মখদুম হবীব

তিনি ও তাঁর তিন সঙ্গীর মাজার সিলেট শহরের দপ্তরিপাড়ায় অবস্থিত।

৩৩। মোখতার শহিদ

তাঁর মাজার সিলেট শহরের মোখতারশহিদ মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৩৪। হাসান শহিদ

তাঁর মাজার সিলেট শহরের হাসানশহিদ মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৩৫। সৈয়দ আলাউদ্দিন

তিনি বাগদাদের অধিবাসী। সৈয়দ তাজউদ্দিন, সৈয়দ বাহাউদ্দিন, সৈয়দ রুকনউদ্দিন  নামে তার তিন পুত্র ছিল। তাহাদের মধ্যে তাজউদ্দিন আওরঙ্গপুর পরগনার গওহরপুর চলে, যান তথায় তার সমাধি বর্তমান। সৈয়দ বাহাউদ্দিন আওরঙ্গপুরের নিকটবর্তী সৈয়দপুরে কিছুদিন বাস করে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বরে চলে যান, সেখানে তার মাজার রয়েছে। আওরঙ্গপুরের সৈয়দ পরিবারসহ অনেকে তাঁর বংশধর দাবি করেন। “সুহলে ইয়ামেনি” গ্রন্থে তাঁর নামের উল্লেখ নেই।

৩৬। শাহ আলাউদ্দিন

ইনি বালাগঞ্জ উপজেলার গওহরপুর পরগনার আলাপুর গ্রামে অবস্থান করেন ও তথায় তাঁর সমাধি বিদ্যমান। তাঁর মেয়ের বংশধরগণ এখনও আলাপুরে বসবাস করছেন। তাঁর বংশে শাহআলী নামে এক দরবেশ বেশ বিখ্যাত ছিলেন। শাহ আলাউদ্দিনের পুত্রের বংশধারা ক্রমান্নয়ে লোপ পায়।

৩৭। খাজা আদিনা সুফি

তাঁর মাজার বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাইয়ের আদিনাবাদ গ্রামে অবস্থিত।

৩৮। সৈয়দ আফজল

তাঁর মাজার দক্ষিণসুরমা উপজেলার জালালপুর পরগনার মিরারগাঁওয়ে অবস্থিত। “সুহলে ইয়ামেনি” গ্রন্থে তাঁর নামের উল্লেখ নেই।

৩৯। খাজা আজিজ চিশতি

তাঁর মাজার বালাগঞ্জ উপজেলার গওহরপুরে অবস্থিত।

৪০। হাফিজ আতাউল্লাহ

তাঁর মাজার মোখতারপুর পরগনার টিলাপাড়া মৌজায় অবস্থিত। তাঁর বংশধর বলে কেউ দাবি করে নাই।

৪১। শাহকালা ওরফে কালা মিয়া

ইনি ইরানের অধিবাসী ছিলেন। তাঁর মাজার বালাগঞ্জ উপজেলার গওহরপুর পরগনার শিয়রখাল গ্রামে অবস্থিত। তথাকার চৌধুরীগণ তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন।

৪২। শাহ কামাল ইয়ামনি ওরফে শাহ পাহলোওয়ান

দক্ষিণসুরমা উপজেলার জালালপুর পরগনার মোকামদোয়ার গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত।

৪৩। সৈয়দ কুতুব উদ্দিন ওরফে সৈয়দ কুতুব

দক্ষিণসুরমা উপজেলার গোধরাইল পরগনার ডুঙ্গিগ্রামে তিনি অবস্থান করেন। তাঁর বংশধরেরা জৈন্তার ধরগ্রামে চলে যান।

৪৪। গায়েবি পীর

তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। শাহআরপিনের নিকটে গায়বির মোকামে তাঁর মাজার অবস্থিত।

৪৫। জালাল উদ্দিন ওরফে শাহজালাল

ওসমানীনগর উপজেলার কুরুয়া পরগনার খুশকিপুরে তাঁর সমাধি বিদ্যমান। কথিত আছে তিনি এক ব্রাহ্মণের খজ্ঞ কন্যাকে আরোগ্য করে বিয়ে করেন ও তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন।

৪৬। সৈয়দ জালাল উদ্দিন ওরফে সৈয়দ জালাল

দক্ষিণসুরমা উপজেলার গোধরাইল পরগনার ডুঙ্গিগ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত।

৪৭। শেখ জালাল ওরফে শাহ মিলন

দক্ষিণসুরমা উপজেলার জালালপুর গ্রামে তাঁহার মাজার অবস্থিত। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন।

৪৮। জওহর উদ্দিন ওরফে শাহ জওহর

দক্ষিণসুরমা উপজেলার জালালপুর পরগনার মোকামদোয়ার গ্রামে তাঁহার মাজার অবস্থিত।

৪৯। শাহ জুনায়েদ গুজরাটি

ফেঞ্চুগঞ্জ রেলস্টেশনের নিকট তাঁর মাজার বিদ্যমান।

৫০। শাহ তকিউদ্দিন ওরফে মোহাম্মদ তকি

নিজ জালালপুর গ্রামে তাঁহার মাজার অবস্থিত। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন।

৫১। সৈয়দ আহমদ কবির

তাঁর মাজার সিলেট শহরের পাঠানটোলা মহল্লায় অবস্থিত।

৫২। নিজাম উদ্দিন ওসমানি

তিনি ওসমানেনগর উপজেলার দয়ামিরে অবস্থান করেন। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গনী ওসমানী তাঁর বংশধর বলে পরিচিত।

৫৩। শাহ ফতেহ উদ্দিন

দক্ষিণসুরমা উপজেলার নিজ জালালপুর গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত।

৫৪। শেখ ফরিদ আনসারি

দক্ষিণসুরমা উপজেলার লালাবাজারের নিকট তাঁর সমাধি বিদ্যমান।

৫৫। বাবু দওলত

তাঁর মাজার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ছনখাইড় পরগনার বিবিদওলত মৌজায় অবস্থিত। তাঁর বংশধর বলে কেউ দাবি করে নাই।

৫৬। শাহ মঈনউদ্দিন

দক্ষিণসুরমা উপজেলার জালালপুর পরগনার মোকামদোয়ার গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত।

৫৭। মাখদুম জাফর গজনবি

তিনি আফগানিস্থানের গজনির অধিবাসী ছিলেন। দক্ষিণসুরমা উপজেলার গোধরাইল পরগনার মোহম্মদপুরে তাঁর মাজার অবস্থিত। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন।

৫৮। শাহ সুলতান

বালাগঞ্জ উপজেলার ইনি গওহরপুর পরগনার সুলতানপুর গ্রামে অবস্থান করেন। সুলতানপুরের চৌধুরীগণ তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন।

৫৯। শাহ সুলেমান করনি কুরায়শি

ওসমানীনগর উপজেলার করনশি গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত। তিনি ইয়ামেনের করন নামক স্থানের অধিবাসী ছিলেন। রাসুলপ্রেমিক ওয়েস করনি (রঃ) এই এলাকার লোক ছিলেন। শাহ সুলেমান করনির বংশধরেরা এখনও নিজ করনশি ও মুতিয়ার গ্রামে বসবাস করছেন।

৬০। শেখ সিকান্দর ওরফে শাহ সিকন্দর

দক্ষিণসুরমা উপজেলার লালাবাজারের নিকটবর্তী শাহসিকন্দর নামক গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন।

৬১। শাহ সিকন্দর

নবীগঞ্জ উপজেলার সিকন্দরপুর পরগনার পশ্চিমগাঁয়ে তাঁহার মাজার অবস্থিত। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন। উক্ত গ্রামের চৌধুরী পরিবার তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন।

৬২। দাওর বখস খতিব

জগন্নাথপুর উপজেলার আতুয়াজান পরগনার দাওরাই মৌজায় তিনি বসবাস করেন। মাইল খানেক দক্ষিণে বড়কেচি গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত। তাঁর বংশধরেরা এখনও তথায় বসবাস করছেন। তাঁর মাজার সংলগ্ন একটি ইদগাহ রয়েছে।

৬৩। শেখ খিজির খাসদবির

তাঁর মাজার সিলেট শহরের খাসদবির মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৬৪। আবু তুরাব

তাঁর মাজার সিলেট শহরের বন্দরবাজারের চৌকের ঈশান কোণে অবস্থিত। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মসজিদ, পুকুর ও পাকা কুয়া এখনও তাঁর কীর্তি ঘোষণা করছে।

৬৫। বাগদার আলী শাহ

তাঁর মাজার সিলেট শহরের বারুদখানা মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৬৬। শাহ সুন্দর

এই নাম তাঁর প্রকৃত নাম বলে মনে হয়না। এটি খুবসম্ভব লোকের দেওয়া নাম। তাঁর মাজার সিলেট শহরের পাঁচ মাইল উত্তরে দক্ষিণকাছ  মহল্লায় সিলেট জাফলং সড়কের পশ্চিমে একটি টিলায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায় নাই।

৬৭। শাহ মদন

তাঁহার মাজার এম সি কলেজের সন্নিকটে টিলাগড়ে অবস্থিত। তাঁরও কোন বংশধর নাই। তাঁর মাজারের পাশে একটি মসজিদ ও ইদ্গাহ রয়েছে।

৬৮। শাহ এতিম

তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। তাঁর মাজার সিলেট শহরের শিবগঞ্জ বাদুরলটকা মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৬৯। শাহ পরান

তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। শাহপীরান নামটি লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে শাহপরানে পরিণত হয়েছে। সুপ্রাচীন 'সুহলে ইয়ামন' গ্রন্থে শাহজালালের সঙ্গীদের ২৪০ জনের তালিকায় শাহপরানের নাম নেই, হয়তো এই তালিকায় ভিন্ন কোন নামে তিনি অবস্থানও করতে পারেন। তবে মোঃ নুরুল হকের  আল ইসলাহের ৩২২ জনের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। দক্ষিণকাছ পরগনার শাহপরান নামক স্থানে একটি টিলায় তাঁর মাজার অবস্থিত। 

লোকে তাঁকে শাহজালালের ভাগিনা মনে করে। তিনি চিরকুমার ছিলেন ও তাঁর সম্পর্কে অনেক অলৌকিক কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। তাঁর মাজারের সন্নিকটে টিলার উপর একটি মসজিদ ও একটি ইদগাহ রয়েছে এবং মাজারটিলার নীচে একটি পুকুর, একটি লঙ্গরখানা ও একটি মহিলা ইবাদতখানা রয়েছে।

৭০। গরম দেওয়ান

তাঁর প্রকৃত নাম পাওয়া যায়না। তাঁহার মাজার সিলেট শহরের রিকাবিবাজার ও শেখঘাটের মধ্যবর্তী রাস্তার পশ্চিম পাশে চন্দনিটুলা মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৭১। সৈয়দ আহমদ ওরফে দাদা পীর

তাঁর মাজার সিলেট শহরের মিরাবাজার মোখতারখাকি মহল্লায় সিলেট তামাবিল সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৭২। সৈয়দ আবুবকর

তাঁর মাজার করিমগঞ্জ মহকুমার ছোটলেখা নামক মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না।

৭৩। সুলতান সিকন্দর গাজি

তিনি সিলেটের দ্বিতীয় মুসলিম প্রশাসক ছিলেন। সুরমা নদীতে জলমগ্ন হয়ে তাঁর অকালমৃত্যু ঘটে। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায় নাই।

৭৪। জিন্দাপীর

তাঁর প্রকৃত নাম জানা যায়না। তাঁর মাজার সিলেট শহরের জিন্দাবাজারে অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায় নাই। সিলেট শহরের গুরুত্বপূর্ব এলাকা জিন্দাবাজার তাঁর নামানুসারে হয়েছে।

৭৫। দেওয়ান ফতেহ মোহাম্মদ

তিনি শাহজালালের সিলেট আগমনের অল্পদিন পর সিলেট আসেন ও হজরতের শিষ্যভুক্ত হন। তাঁর মাজার সিলেট শহরের শেখঘাট  মহল্লায় অবস্থিত। শেখঘাটের শেখগণ তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন।

৭৬। মধুসোদন

তাঁর মাজার সিলেট শহরের রিকাবিবাজারের পশ্চিমে মধুশহিদ পাড়ায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায় নাই।

৭৭। হজরত লাল

তাঁর মাজার সিলেট শহরের সওদাগরটুলা মহল্লায় অবস্থিত।

৭৮। শাহ রফিউদ্দিন

এই পীরের মাজার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের লাউড় পাহাড়ের ধারে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সারপিং নামক স্থানে অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৭৯। সৈয়দ মহব্বত

এই পীরের মাজার ফেন্ছুগঞ্জের মৌরাপুর পরগনায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায় না।

৮০। শাহ মালুম 

এই পীরের মাজার মৌরাপুর পরগনায় ফেন্ছুগঞ্জ রেলস্টেশনের পূর্বদিকে একটি টিলায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর আছেন কিনা জানা যায়না। সুপ্রাচীন 'সুহলে ইয়ামনি' গ্রন্থে শাহজালালের সঙ্গীদের ২৪০ জনের তালিকায় শাহ মালুমের নাম নেই, তবে মোঃ নুরুল হকের  আল ইসলাহের ৩২২ জনের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে।

৮১। শাহ ফরঙ্গ ও ৮২। শাহ দরঙ্গ

এই পীরদ্বয়ের মাজার মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার মনুমুখ নামক স্থানের বেখামুরা মৌজায় অবস্থিত। বেখামুরার সৈয়দরা শাহ দরঙ্গের বংশধর বলে দাবি করেন।

৮৩। সৈয়দ লাল

তাঁর মাজার সিলেট শহরের কুয়ারপার মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৮৪। সৈয়দ জাহান

তাঁর মাজার সিলেট শহরের কুয়ারপার মসজিদের পাশে অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৮৫। শাহ সনজর

তাঁর মাজার সিলেট শহরের বারুদখানা মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৮৬। গোলাম হজরত

তাঁর মাজার সিলেট শহরের জল্লারপার মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৮৭। হজরত আমিন

তাঁর মাজার সিলেট শহরের জল্লারপার মহল্লায় অবস্থিত। তাঁর কোন বংশধর নাই।

৮৮। সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার

এই পুস্তকে তাঁর সম্পর্কে ইতিপূর্বে অনেক আলোচনা হয়েছে। তিনি সিলেটে দীর্ঘকাল অবস্থান করে অনেক বংশধর রেখে পরে রাষ্ট্রীয় কাজে বাঙ্গালার সাতগায় সেনাঘাঁটিতে ফিরে যান বলে অনুমিত হয় ও সেখানে তাঁর সমাধি রয়েছে। পীরমহল্লায় আক্কল কুয়ার পাশে তাঁর আশ্রম ছিল ও এখানে তাঁর বংশধরদের অনেক মাজার বিদ্যমান। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সৈয়দ নাসির উদ্দিনের বংশধারা ছড়িয়ে রয়েছে। তবে মূল শাখা এখনও সিলেটের পীরমহল্লায় বসবাস করছেন। কেউ কেউ মনে করেন তিনি সিলেটে মৃত্যুবরণ করেন ও চৌকিদেখিতে তার লাশ গায়েব হয়ে যায়। অনেকে মনে করেন সৈয়দ নাসির উদ্দিন(রঃ) তরফে মারা যান এবং হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার মুড়ারবন্দে চিরশায়িত হন। অনুমিত হয় তিনি সিলেট ও বাঙ্গালার বিভিন্ন স্থানে বহুবিবাহ করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বংশধরেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। আসলে বাংলার তিন এলাকার তিনটি মাজারে শায়িত তিনজন সৈয়দ নাসির উদ্দিন(রঃ) একজন না কি ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি তা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। তিনি সুলতানি বাংলার সেনাবাহিনীর একজন উদ্ধতন কর্মকর্তা হিসাবে এই তিন এলাকায় অবস্থান করে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনের মধ্যে একটি তাঁর প্রকৃত মাজার এবং অন্যদুইটি স্মৃতির মোকাম হবারও সম্ভাবনা রয়েছে।    

৮৯। হাজি শেখ শামস উদ্দিন বিহারি

সিলেটের পশ্চিমাঞ্চলের ভাটি এলাকা জগন্নাথপুর উপজেলার সুনাইতা পরগনার আটঘর গ্রামে তিনি আস্থানা স্থাপন করেন। তাঁর খননকৃত নয় বিঘা জমিতে বর্গাকারের দিঘিপারে তাঁকে ও পরবর্তীতে তাঁর পুত্রকে সমাহিত করা হয়। তাঁদের মাজার একটি ঘরের মধ্যে রয়েছে। তাঁর পায়ের চি‎হ্নযুক্ত যে পাথরের উপর তিনি নামাজ পড়তেন, তা এখনও রক্ষিত রয়েছে।

৯০। সৈয়দ ইউসূফ

তিনি ইরাক হতে শাহজালালের সঙ্গী হয়ে সিলেটে আসেন। সুনামগজ্ঞ জেলার ছাতক উপজেলার সিংচাপড় পরগনার সৈয়দেরগাঁওয়ে তাঁর মাজার বিদ্যমান। তাঁর বংশধরগণ এখনও সৈয়দেরগাঁওয়ে অবস্থান করে ইসলামের খেদমত করছেন।

৯১। শাহ সদরুদ্দীন কুরায়শি

হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার পর্ব্বতপুর (সদরাবাদ) গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত। সেখানকার কিছুলোক তাঁর বংশধর দাবি করেন।

৯২। খাজা বুরহান উদ্দিন কেতান

আরব হতে আগত শাহজালালের প্রথম বারজন সঙ্গীর অন্যতম ছিলেন খাজা বুরহানউদ্দিন কেতান। তাঁর পবিত্র মাজার শরীফ কোথায় জানা যায়না। খাজা ও কেতান দুইটি উপাধি তার নামের অগ্র ও পশ্চাতে সংযুক্ত। ফকিরি বা বৈরাগ্যে উচ্চ পারদর্শিতার জন্য তিনি কেতান উপাধিতে ভুষিত হন। শাহজালালের দরগার খাদেম  ঐতিহ্যবাহী  মুফতি পরিবার তাঁরই বংশধর।

৯৩। শাহ কামাল

সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার আতুয়াজান পরগনার তিলকশাহারপাড়ায় তাঁর মাজার অবস্থিত। তাঁকে লোকে শাহজালালের সঙ্গী বলে গণ্য করে ও তিনি শাহজালালের সংস্পর্ষে আসতেও পারেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি শাহজালালের সঙ্গী জনৈক দরবেশ বুরহানউদ্দিন কেতানের বংশধর। তাঁহার পিতা জালালউদ্দিন যিনি বুরহান উদ্দিন কেতানের পুত্র ছিলেন। শাহারপাড়া ও সিলেটের দরগামহল্লায় তাঁর বংশধরগণ বিদ্যমান।

৯৪। খাজা সলিম ওরফে তায়েফ সলিম

তাঁর মাজার দক্ষিণসুরমা উপজেলার গোধরালী পরগনার সিলাম গ্রামে অবস্থিত।

৯৫। কামাল উদ্দিন

তাঁর মাজার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চৌয়াল্লিশ পরগনার কামালপুর গ্রামে অবস্থিত। তদঞ্চলের চৌধূরীগণ তাঁর বংশধর বলে  নিজেদেরকে পরিচয় দেন।

৯৬। সৈয়দ নসরুল্লাহ

তাঁর সমাধির অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানা যায়না। লংলা পরগনার জয়পাশার খোন্দকার পরিবার তাঁর বংশধর বলিয়া দাবি করেন।

৯৭। সৈয়দ শাহ মোস্তফা

ইনি হজরত আলীর(রাঃ) বংশধর। তিনি বাগদাদ হতে শাহজালালের অনুগামী হন। তার সম্পর্কে অনেক আলৌকিক কাহিনি শোনা যায়। জনশ্রুতি আছে, তিনি হাতের চাবুকের সাহায্যে বাঘ তাড়াতেন, তাই লোকে তাঁর নামের শেষে 'চাবুকমার' উপাধি সংযুক্ত করে দেয়। কথিত আছে তিনি চুয়াল্লিশের রাজকন্যার পাণিগ্রহণ করে তথায় বসতি স্থাপন করেন। মোস্তফাপুর মৌজাসহ তথাকার অনেক সৈয়দ পরিবার তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন। সে পরিবারের অনেকে সিলেট শহরের কাজি ইলিয়াছ মহল্লায় স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন। আসামের ভুতপূর্ব মন্ত্রী খান বাহাদুর সৈয়দ আব্দুল মজিদ এই পরিবারের লোক ছিলেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ভি সি সৈয়দ মুহিব উদ্দিন এই বংশের লোক ছিলেন। সৈয়দ শাহ মোস্তফার সমাধি মৌলভীবাজার শহরে অবস্থিত।

৯৮। শাহ হামিদ ফারুকি

তাঁর সমাধি কুলাউড়া উপজেলার কানিহাটি পরগনার কাউকাফন গ্রামে অবস্থিত। তাঁর বংশধরগণ এখনও সেখানে রয়েছেন।

৯৯। শাহ হেলিম উদ্দিন কুরায়শি

ইনি চৌকির শাহ তাজউদ্দিন কুরায়শির ভ্রাতা। তার সমাধি কুলাউড়া রেলস্টেশনের কয়েক মাইল দূরে কানাই নদীর তীরে অবস্থিত। মনসুর গ্রামের প্রসিদ্ধ চৌধুরী পরিবারসহ লংলার আর অনেক পরিবার তাঁর বংশধর বলে পরিচয় দেন।

১০০। শাহ হেলিম উদ্দিন নারনুলি

তিনি মধ্যপ্রদেশের নারনুলির অধিবাসী ছিলেন। তিনি শাহজালালের সহিত সিলেটে এসে কুলাউড়া উপজেলার কানিহটিতে স্থায়ী বসত নির্মাণ করে ইসলাম প্রচার করেন। হাজিপুরের চৌধূরী পরিবার তাঁর বংশধর বলে পরিচিত। বৃটিশ আমলের ডিপোটি কমিশনার খান বাহাদুর তজম্মুল আলী চৌধূরী এই বংশের লোক ছিলেন। এই বংশে অনেক সুপ্রসিদ্ধ লোক জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা হলেন প্রাক্তন সচিব আব্দুল মুয়িদ চৌধুরী, রাষ্ট্রদূত তোফায়েল চৌধুরী, জিন বিজ্ঞানী ডঃ আবেদ চৌধুরী, বৃটিশ আমলের পুলিশ ইন্সপেক্টর আব্দুল বারি চৌধুরী, পাকিস্তান আমলের এডিসি খুরশেদ চৌধুরী, চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধা ফরিদ হায়দার চৌধুরী, হাফসা মজুমদার প্রমুখ। মনুনদীর ভাঙ্গনের ফলে তাঁর সমাধি বিনষ্ট হয়ে গেছে।

১০১। আদম খাকী

আসামের করিমগঞ্জের বদরপুর রেলস্টেশনের বড় রাস্থার নিকট তাঁর সমাধি রয়েছে।

১০২। সৈয়দ ইয়াকুব

তাঁর সমাধি বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ রেলস্টেশনের নিকট পাতারিয়ায় অবস্থিত।

১০৩। গরিব খাকি

জুড়ি রেলস্টেশনের নিকটবর্তী বকতুরা গ্রামে তাঁর সমাধি রয়েছে। তাঁর বংশধরগণ অজ্ঞাত।

১০৪। সৈয়দ জাহান ওরফে জাঁহা

তাঁর সমাধি ভারতের করিমগঞ্জ জেলার প্রতাপগড়ের জঙ্গলে অবস্থিত।

১০৫। শাহ জিয়াউদ্দিন

তিনি দেওরাইল পরগনার বুন্দাশিল গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তার সমাধি নদীগর্বে বিলীন হয়ে গেছে। তথাকার কেউ কেউ তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন।

১০৬। দরিয়া পীর

তাঁর সমাধি বড়লেখা উপজেলার পাতারিয়া পরগনার চন্দ্রপুর গ্রামে অবস্থিত।

১০৭। সৈয়দ বদরুউদ্দিন ওরফে শাহ বদর

আসামের করিমগজ্ঞের বদরপুর রেলস্টেশনের  নিকট তাঁর সমাধি রয়েছে।

১০৮। শাহ সিকন্দর

তিনি করিমগঞ্জের দেওরাইল পরগনার বুন্দাশিল গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তাঁর সমাধি নদীগর্বে বিলীন হয়ে গেছে। তথাকার কতিপয় খন্দকার পরিবার তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন।

১০৯। শেখ কালু

তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার পীরেরগাও গ্রামে অবস্থান করেন। তাঁর পুত্র শাহচান্দ চান্দভরাঙ্গ এসে বসবাস করেন। চান্দভরাঙ্গের চৌধূরীগণ তাঁর বংশধর। তাঁর কন্যার বংশের লোকজন পীরেরগাওয়ে বাস করেন। তারা সৈয়দ আহমদ ওরফে দামড়ি পীরের বংশধর। তাঁর মাজার বিহার প্রদেশের আজিমাবাদ (পাটনা) শহরে অবস্থিত। দামড়ি পীরের সৈয়দ শাহ সোবহান উদ্দিন ও সৈয়দ শাহ বদর আলম নামক দুই ভ্রাতা ছিলেন। সৈয়দ শাহ সোবহান উদ্দিন দুলালি পরগনার ইউসুফপুর (ইসবপুর) গ্রামে চলে যান। তথায় তাঁর বংশধরগণ আছেন। সৈয়দ শাহ বদর আলম পীরেরগাও চলে যান । তথাকার পীরগণ তাঁর বংশধর।

১১০। সৈয়দ শামসউদ্দিন

তাঁহান মাজার জগন্নাথপুর উপজেলার আতুয়াজান পরগনার সৈয়দপুর গ্রামে অবস্থিত। তিনি তিলক শাহারপাড়ার শাহকামালের ভাগিনেয় ছিলেন। আওরঙ্গপুর পরগনার সৈয়দপুর হতে তথায় চলে যান। তিনি সৈয়দ বাহাউদ্দিনের বংশধর। কেহ কেহ তাঁকে আওরঙ্গপুরের শাহ তাজউদ্দিনের ভ্রাতা মনে করেন। তিনি শাহজালালের সঙ্গী সৈয়দ আলাউদ্দিনের বংশধর ছিলেন। “সুহলে ইয়ামেনি” গ্রন্থে তার নামের উল্লেখ নেই।

১১১। কাজি তাজউদ্দিন ওরফে শাহ তাজউদ্দিন কোরেশি

তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার চৌকি পরগনায় অবস্থান করেন। চৌকি পরগনা, দিনারপুর, কুরশা, বানিয়াচঙ্গ ও লংলার অনেক পরিবার তাঁর বংশধর বলে দাবি করেন। কুরশার খান বাহাদুর আজিজুর রহমান এবং চাউতলির খান বাহাদুর আলাউদ্দিন এই বংশের লোক ছিলেন।

১১২। ফতেহ গাজি

তিনি বেজুড়ায় গিয়ে মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজার রেলস্টেশনের নিকটবর্তী রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থান করেন। সেখানে তার চিল্লাখানা এখনও বিদ্যমান। সেই পাহাড়ের পাদদেশে মাহমুদ গাজি ও মসুদ গাজি নামক তাঁর দুইজন ভাগিনার কবর রয়েছে।

১১৩। রুকন উদ্দিন আনসারি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল পরগনার উপশাহজাদপুর নামক স্থানে তাঁর মাজার রয়েছে।

১১৪। জালাল উদ্দিন

তাঁর আস্থানা ও মাজার নন্দনপুর, নোয়াখালী।

১১৫। সৈয়দ আহমদ গেছুদরাজ ওরফে কল্লা শহিদ

তিনি ত্রিপুরা ও নোয়াখালী জেলায় ইসলাম প্রচার করেন ও ধর্মপ্রচার করতে যেয়ে শত্রুদের হাতে শহিদ হন। তিনি শাহজালালের অতিপ্রিয় মুরিদ ছিলেন। তাহার পবিত্র মস্তক  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া জংশনের সন্নিকটে খড়মপুর গ্রামে এবং তার মস্তকবিহীন শরীর হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুরের নিকট কোটআন্দর নামক স্থানে দাফন করা হয়।

১১৬। শাহ কামাল ও ১১৭। শাহ জামাল

শাহজালালের এই দুই সঙ্গী কুমিল্লা হইতে সাত আট মাইল দূরে উটখাড়া নামক স্থানে ইসলাম প্রচার করে ছিলেন। কথিত আছে শাহজালালের কাছে ধর্মপ্রচারের অনুমতি চাইলে শিষ্যদ্বয়কে বলে দেন যেখানে বাহন উষ্ট্রদ্বয় খাড়া হবে, সেখানে যেন তারা ধর্মপ্রচারে নিয়োজিত হন। উটখাড়া প্রান্তে উট দুইটি দাড়িয়ে যায়। এইজন্য অধ্যবধি গ্রামটি উটখাড়া নামে পরিচিত।

১১৮। শেখ গরিব আফগানি ওরফে শাহ গাবরু

তিনি আফগানিস্থান হতে শাহজালালের সহিত সিলেটে এসে বালাগজ্ঞ উপজেলার বানাইয়া হাওরের দক্ষিণপূর্ব তটে একটি টেকের উপর আস্থানা স্থাপন করেন, যাহা তাঁর নাম অনুসারে পরবর্তীকালে গাবরুরটেক নামে অভিহিত হয়। এখানে তিনি ও  আর চারজন পীরের সমাধি রয়েছে, যাহা পাঁচপীরের মোকাম বলিয়া পরিচিত। তথায় এখনও তাঁর বংশধরগণ বসবাস করছেন।

১১৯। শাহ সৈয়দ রুকনউদ্দিন

তিনি ধর্মপ্রচারে সিলেট হতে দক্ষিণ দিকে রওয়ানা হলে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ইটা পরগনার যে স্থানে এসে তার কদম আটকে যায় সেখানে আস্থানা নির্মাণ করে ধর্মপ্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। কদম আটকা হতে স্থানটির নাম কদমহাটায় পরিণত হয়। মৌলভীবাজার কুলাউড়া সড়কের পাশে কদমহাটা নামক স্থানে তার মাজার বিদ্যমান। কদমহাটার সৈয়দ পরিবার তাঁর বংশধর বলে পরিচিত।

১২০। শাহ পুতলা (ফাত্তাহ)

তাঁহার মাজার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগের মোকামবাজার সংলগ্ন কুড়ানদীর পারে অবস্থিত। তাঁহাকে শাহজালালের একজন সঙ্গীয় আউলিয়া মনে করা  হয়, যদিও  সুহলে ইয়ামেনির ২৪০ জনের তালিকায় তাঁর নাম নেই। তাঁহার স্থাপিত মোকামবাজার মসজিদ ও গজার মাছপূর্ণ পুকুর এখনও বিদ্যমান।

১২১। কালা শাহ মজররদ

মৌলভীবাজার জেলার ভানুগাছ ও কানিহাটি পরগনাদ্বয়ের সন্ধিস্থল ভাদারদেউড় নামক স্থানে তাঁর মাজার অবস্থিত। তিনি অবিবাহিত, ফলে কোন বংশধর নেই।

১২২। শাহ রহিমউদ্দিন আনসারি

তাঁর মাজার দক্ষিণসুরমা উপজেলার জালালপুর পরগনার পূর্বভাগ গ্রামে অবস্থিত। তিনি সাহাবি আবু আইয়ুব আনসারির(রাঃ) বংশধর বলে ধারণা করা হয়। 

তাঁর বংশধরগণ তথায় পীরাকি বৃত্তিতে রয়েছেন।

১২৩। হায়দার গাজি

তিনি শাহজালালের প্রিয় মুরিদ ছিলেন। একসময় সিলেটের শাসনকর্তা ছিলেন। সিলেটে সরকারি দায়িত্ব পালন শেষে সোঁনারগায়ে চলে যান। সেখানে তাঁর মাজার বিদ্যমান। তার প্রকৃত নাম নুরুল হুদা আবুল কেরামত সাইদি।

১২৪। পীর গোরা চাঁদ

তাহার প্রকৃত নাম সৈয়দ আব্বাস। তিনি হজরত শাহজালালের একজন প্রিয় মুরিদ ও খলিফা ছিলেন। 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চব্বিশপরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমার 'হাড়োয়া' নামক গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত।

১২৫। শায়খ মধুশহিদ

সিলেট শহরের রিকাবিবাজারের পশ্চিমে কাজলশাহের মধুশহিদ মহল্লায় তাঁর মাজার অবস্থিত।

১২৬। শাহ সুলতান কমর উদ্দিন

তাঁর মাজার মদনপুর নেত্রকোনায় অবস্থিত।

১২৭। শাহ ইরানি

তাঁর মাজার হাবিশপুর, বেলাব, নরসিংদীতে অবস্থিত।

উপরে বর্ণিত শ্রদ্ধাভাজন ওলিগণের উপর আল্লাহের অশেষ শান্তি ও রহমত বর্ষিত হউক। আমিন।
      চিত্রঃ দরগাহে হজরত শাহজালাল(রঃ) মসজিদ

১০টি মন্তব্য:

  1. আপনার তথ্যবহুল লেখায় অনেক অজানা তথ্য জেনেছি সাথে একটি তথ্য শেয়ার করতে , সৈয়দ আলাউদ্দিনের চার পুত্র একজন সৈয়দ শামছুদ্দীন যিনি জগন্নাথুপুরের সৈয়দপুরে শায়িত আছেন তাঁকে সৈয়দ আলাউদ্দিনের বংশধর বলা হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  2. আমি উনার (৮৯। হাজী শেখ শামস উদ্দিন বিহারী
    সিলেটের পশ্চিমাঞ্চলের ভাটি এলাকা জগন্নাথপুর উপজেলার সুনাইতা পরগনার আটঘর গ্রামে তিনি আস্থানা স্থাপন করেন। তাঁর খননকৃত নয় বিঘা জমিতে বর্গাকারের দীঘিপারে তাঁকে ও পরবর্তীতে তাঁর পুত্রকে সমাহিত করা হয়। তাঁহাদের মাজার একটি ঘরের মধ্যে রয়েছে। তিনি তাঁর পায়ের চি‎হ্নযুক্ত যে পাতরের উপর নামাজ পড়তেন , তা এখনও রক্ষিত রয়েছে।) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য কিভাবে পেতে পারি?

    উত্তরমুছুন
  3. ১৩০। হযরত শাহ মাহমুদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
    এই বুজর্গ অলি নরসিংদীতে মাজার শরীফ হয়েছে প্রায় 700 বছর আপনার তালিয়ায় নাই কেন ? ইন্টারনেটে তাঁর নাম 130 নম্বর এ রয়েছে ।

    উত্তরমুছুন
  4. আসসালামু আলাইকুম, ১৩০ নাম্বার শাহ মাহমুদ চিন্তী নি এবং মাজার ইতিহাস জা জানেন বলেন।আর ৩৬০ ওলীর সংগী নি

    উত্তরমুছুন
  5. কামাল উদ্দিন শাহ দামড়ি নামে কোনো সফর সঙ্গী ছিলেন কিনা? ওসমানীনগর উপজেলায় এই নামে একজনের মাজার রয়েছে, এর সত্যতা যাচাই করতে চাই

    উত্তরমুছুন
  6. হযরত সৈয়দ আমির উদ্দীন (রহঃ), উনি হযরত শাহজালাল (রহঃ) খুবই কাছের একজন বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন।
    ওনার মাজার দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার দক্ষিণ সুখছড়ী গ্রামে অবস্থিত। এবং ওনার বংশধরদের ধারাবাহিক ইসলাম প্রচারে এখানে গড়ে উঠেছে- দক্ষিণ সুখছড়ী দরবার শরীফ।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. হযরত শাফাই শাহ আউলিয়া( রহঃ) ৩৬০ জনের অন্য তম শিষ্য সফর সঙ্গী কিশোর গঞ্জে জেলা বাজিতপুর উপজেলা পিরিজপুর ইউনিয়ন সুলতান পুর উত্তর পাড়া গ্রামে

      মুছুন
  7. আচ্ছালামুআ'লাইকুম।
    সিলহেট জেলার পশ্চিম সীমান্তে, বিশ্বনাথ উপজেলার সিন্ঙেরকাচ বাজারের দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তে, ডাউকা নদীর তীরে, পশ্চিম গাওয়ে "পাত্তা শাহ্" এর মাজার বৃদ্ধ মান রয়েছে। স্থানীয় লোকমুখে উনাকে হযরত শাহজালাল রহং 'আলাইহি এর অন্যতম স্বাতী ও কামেল ওয়ালী হিসেবে শিকৃত।
    প্রাচীনকাল থেকে আতোয়াজান, কৌঢ়িয়া ও সনাইত্তা পরগনার মধ্যবর্তী এলাকার জায়গিরদার ও জমিদার "শেখ শোনাই" ও তাহার পরিবারের দায়িত্বশীল দ্বয়ের মাধ্যমে উক্ত মাজারের ও পান্জতনের খাদীম পদের জায়গীর উপভোগ করে আসছেন।
    বর্তমান আতোয়াজান পরগনার বুরাইয়া মৌজার শেখ ও শাহ্ পরিবারের মধ্যে উক্ত মাজারের জায়গীরের সম্পত্তি এখনও উপভোগ করিতেছেন।
    প্রমাণ স্বরূপ, আমার পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া জায়গীরের পাট্ঠা নামা আমার কাছে সন্ংরক্ষীত আছে।

    উত্তরমুছুন