সিলেট আমার স্বপ্নপূরী আমার হৃদয় কানন,
সাত পাহাড়ের মায়ায় ঘেরা স্বাধের মধুবন।
স্বপ্নদিয়ে ঘেরা সিলেট সুরমা নদীর তীরে,
কত রঙ্গের স্মৃতি আমার সারা শহর জুড়ে।
চরণ ধূয়ে যায়রে সুরমা পশ্চিম আস্থাচলে,
কল্-কল্-কল্ নদীর জল মায়ার পরশ বুলে।
সুরমা নদীর শান্ত জলে ডিঙ্গি আমার দোলে,
পরান আমার সাঁতার কাটে নীল তরঙ্গ জলে।
শীত এলে জল হারায়ে চর জাগে তার বুকে,
সূর্যরশ্মি পড়ে বালি তাকায় ঝিলমিল চোখে।
নদীবক্ষে মাছরাঙ্গা গাংচিল রচে বালিখেলা,
ঘুইসাপ রোদের তেজে কাটায় সকালবেলা।
হাঁটুজলে লুঙ্গিঁ তুলে পার হয়ে যায় সব,
ওপারেতে কাজিরবাজার বেচাকেনার রব।
তোরণ তার কীনব্রীজ সাক্ষ্যি বৃটিশের,
প্রতিদিন ওজন সহে লক্ষ মানুষের।
সেতু তলায় ভগ্নঘড়ি স্মৃতি আমজদ খার,
পাদদেশে চাদ্নি ঘাটের সিঁড়ির সমাহার।
আকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ায় হাজার কবুতর,
অপূর্ব এক ছন্দ জাগায় বক্ষ জুড়ে মোর।
বাকুম, বাকুম মনভুলানো মধুর কলতান,
রক্ত আমার শীতল করে জাগায় সারা প্রাণ।
কে বলেছে ঢাকা শহর সবার চেয়ে সেরা,
সিলেট আমার চিরহরিৎ লাল পাহাড়ে ঘেরা।
ছোট্ট ছোট্ট রাঙ্গা প্রাসাদ সারা শহর জুড়ে,
ফুলের হাসি, পাখির গানে হৃদয় পাগল করে।
উত্তর দিকে চা গাছ ভরা আছে পাহাড় কত,
রবার প্লেন্ট, আকাশী বন, জুড়ায় নয়ন শত।
এই শহরে ঘুমিয়ে আছেন বাবা শাহজালাল,
সবার প্রাণে ছড়িয়ে দেয় নিরব ভক্তিজাল।
বঙ্গবীরের মাযার আছে সিলেট তোমার বুকে,
আমরা সবাই ঘুরে বেড়াই মনের সুখে সুখে।
হিন্দু মুসলিম, বুদ্ধ খৃস্টান,এই শহরে সবাই ভাই ভাই,
খাসিয়া, পাত্র, মনীপুরী, চা-শ্রমিক, নাই বেদাবেদ নাই।
এই শহরের চিপা-গল্লী সবখানে মোর পদচিহ্ন আঁকা,
কেমনে ভূলি সেসব স্মৃতি, হউক বা না হউক দেখা।
জীবন সাগর সাতরে আমি যেইবা দেশে যাই,
সোনার সিলেট তোমায় আমি দেখতে যেন পাই।
ধন্য আমার স্বপ্ন শহর, ধন্য তোমার পায়ে,
ফুলের তোড়া অর্ঘ্য করি ভক্ত হৃদয়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন