আমি আমার শরীরের প্রতিটি কোষে কোষে,
রক্তের প্রতিটি কণায় কণায়।
প্রতিটি নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে,
প্রতিটি আচরণে, প্রতিটি কথায়।
একজন নিখাদ সিলেটি,
আমার সিলেট ভূমি চিরকাল আজন্ম পরিপাটি।
এখানে আকাশ ঢলে পড়েছে হাওরের সীমানায়,
এখানে পাহাড় সারি বেঁধে বেঁধে বহুদূর চলে যায়।
এখানে কুসুমের মেলা বসে পাহাড়ী উপত্যকায়,
এখানে অজস্র পাখি সারাদিন গান গেয়ে যায়।
এখানে পাহাড়ী নদী, বহে আঁকা বাঁকা,
এখানে মাটির নিচে অজস্র গুপ্তধন রাখা।
এখানে শ্রমিকের হাতে চায়ের কুড়ির আটি,
এখানে মাঠভরা নূড়ি বালি আর সাজি মাটি।
আমার পবিত্রভূমি দানে ধন্য মহান আল্লাহর,
রতনে রতনে ভরা রত্মসমাহার
পেট্রোল-কয়লা-গ্যাস, শিলার পাহাড়।
আসলে প্রতিটি মাটির কণা মুক্তার চেয়ে খাঁটি,
তিন’শ ষাট আউলিয়ার পুণ্যময় সাধনার ঘাটি।
তাইতো আমি প্রাণভরে বাসিয়াছি ভালো,
এ দেশের হলুদিয়া মাটি,
আমি এক দূরন্ত কট্টর সিলেটি।
এদেশের সব কথা, সব সুর লুফে নেয়।
আমার চঞ্চল মন,
এদেশের ভাষায়, গানে, লোকভীড়ে, আমি সর্বক্ষণ।
আমার নিঃশ্বাস টেনে লয় এদেশের বাতাস,
আমার কণ্ঠ বলে যায় এদেশের নাগরি ভাষা।
আমার কল্পনায় এদেশের স্বপ্ন ভালোবাসা।
এদেশের সত্ত্বার সাথে আমি মিশে গেছি,
আমার জনমের পর।
আমি যে বেঁচে আছি উহাদের ভিতর।
আমার হৃদপিন্ডের টুকরো সবকিছু,
আমার প্রদীপ্ত চোখে।
মানুষ মাটি পশুপাখি বৃক্ষলতা সব,
ফুটে মোর সম্মুখে।
অক্সিজেনের মত সিলি তোমার দরকার,
তুমি আল্লাহর পবিত্র দান, জীবনে আমার।
আমি এক নিখাদ সিলেটি,
বুকের স্পন্দনের মত আমি ভালোবাসি
সিলেটের মানুষ আর মাটি।
হয়তো একদিন থেমে যাবে নদীর প্রবাহধারা।
শুকিয়ে যাবে হাকালুকির জল,
টিলাসব ভেঙ্গেঁচুরে হবে সমতল।
বনবাদাড় কেটে কুটে হবে নিঃশ্বেষ,
থামবে বৃষ্টিধারা হবে মরুবেশ।
বদ্লে যাবে মানুষ আর সব লোকাচার,
আজিকার এসমাজ রইবে না আর।
এ শতাব্দি অতীতের গর্ভে হইবে বিলীন,
তবুও আমার মন, সিলেটের মাঠে মাঠে,
রইবে চিরদিন।
আমি এক ফানাফিল্লাহ, কট্টর সিলেটি,
এদেশের বক্ষে আমি সবযুগে করব হাটাহাঁটি।
আমার প্রিয়তমা সিলির সুরম্য মাঠে মাঠে,
আমার উদাস মন রূপ খুজে হাঁটে।
এই হাঁটার হইবে না শেষ,
পার হয়েও আমার মৃত্যুর দেশ।
আমি এক নিখাদ সিলেটি,
উম্মাদ প্রেমিকের মত আমি ভালোবাসী,
টিকাঃ সিলি- ইবনে বতুতা তার ভ্রমণকাহিনী ‘রিহলা’ গ্রন্থে সিলেটকে সিলি, কামতা বলে অভিহিত করেছেন। আমিও সিলেটকে নারী প্রতিরূপ প্রদানে সিলি শব্দ ব্যবহার করি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন