রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১৬

বর্ষা-তের : রক্ত পিপাসা

বর্ষা-তের : রক্ত পিপাসা
ক্ষুধার্ত মশার পাল ছুটে আসে বর্ষার জলে ভেসে ভেসে,
পৃথিবীর অসহায় মানুষের দেশে, একেবারে মৃত্যুর বেশে।
কচুবনে মশারা সব, উড়া উড়ি করে, 
সুযোগ মত ঢুকে পড়ে, গাঁয়ের কুঁড়েঘরে।
রক্তের সন্ধানে দিবানিশী করে ভন্ ভন্,
 ঝাঁকে ঝাঁকে মানব অঙ্গে করে আক্রমন।
 মশারা নিয়ে আসে, কালাজ্বর, ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া,
বর্ষার ঘোলাজলে আসে সাতরিয়া।
মানবদেহে বসায় তাদের, যন্ত্রণার হুল,
রক্তখায়, রোগ ছড়ায়, হয়না নির্মুল।
ফোলে ফোলে জ্বলে উঠে নরম চামড়াখানি,
নানা জাতের মশার কামড়ে, নানান চুলকানি।
গরীবের ঘুম, রাক্ষসেরা, হারাম করে রাতে,
এই মশারা বাস করে, আমজনতার সাথে।
জলেতে জনম তার, যৌবনে আচমকা উড়ে আসে,
লোকালয়ে রক্তের খোঁজে, মানুষের আশে পাশে।
ওদের সন্ধান মেলে মাটে ঘাটে গৃহে-বারান্দায়,
সবখানে উড়ে ওরা জনতার রক্ত পিপাসায়।

ঘাসে ঘাসে দীঘির জলে শত চিনা জোঁক,
রক্তের খোঁজে মেলে, চোখ-কান-দাতহীন মুখ।
অজান্তে বেয়ে উঠে, রক্ত চোষা হয়ে গেলে শেষ,
মাটিতে ঝরে পড়ে হয় নিরুদ্দেশ।
মরণ কামড় হয়না টাহর, না দেখিলে তারে,
আচমকা কাপড় ভিজে রক্ত পড়ে ঝরে।
বর্ষাকালে জলে-স্থলে, জোঁকরা তেড়ে আসে,
হাওয়ায় উড়ে মাতাল মশা ছুটে লোকের কাছে।
মশা-জোঁকের অত্যাচারে বাঁচা ভীষণ দায়,
বর্ষাশেষে কোথায় যেন পালিয়ে ওরা যায়।

রচনাকালঃ ১৯৯৪ সাল

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন