মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০

তৃতীয়বার যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা- সাউথ ক্যারোলিনা, ইংল্যান্ড ও ওয়েলস সফর পর্ব- দুই

 

তৃতীয়বার যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা- সাউথ ক্যারোলিনা, ইংল্যান্ড ও ওয়েলস সফর    পর্ব- দুই

লন্ডন মহানগর দর্শনঃ

১৯ জুন ২০১৭ সাল। সকালে ঘুম ভাঙ্গে ঘুঘু পাখির ডাকে। আমাদের ঘুঘুর ডাকের চেয়ে স্পষ্ট কিন্তু খানিক বিরিতি টেনে বারবার ডেকে যায়- ঘুঘু-ঘুঘু-ঘুহ/ ঘুঘু-ঘুঘু-ঘুহ। সেইসাথে আছে চড়ুইয়ের কিচির-মিচির ও কাকের আওয়াজ। লন্ডনের কাকের ডাক আমাদের কাকের মত কর্কশ নয় বরং পাতলা ও শ্রুতিমধুর। জানালা একটু ফাঁক করি। শীতল বাতাস এসে গরম তাড়িয়ে দেয়। ঘর শীতল হয়ে যায়। লন্ডনে পাখা নেই, ফেন নেই। এখানে ২৫/২৬ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রা মাত্র দুইচার দিন থাকে। তবে আমাদের কক্ষে একটি টেবিল ফেন ছিল। এই ফেন জানালা দিয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস এয়ারকুলারের মত সারাটা কক্ষে ছড়িয়ে দেয়। আমরা লন্ডনের সবচেয়ে উষ্ণ দিনের দেখা পাই। কিন্তু এই গরম আমাদের মার্চের গরমের মত এবং অসহ্য নয় অবশ্যই। সামারের গরমকে ইংরেজরা আনন্দভরে উপভোগ করেন। তারা স্বল্প বসনে তীব্র রোদে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ান।

আমি ও জেফার হেঁটে হেঁটে একটি সুরম্য প্রাকৃতিক পার্কে প্রবেশ করি। পার্কটির নাম Beam Velly Country Park. কাঁটাতার ঘেরা রেল লাইনের পাশ দিয়ে পার্কটি কয়েক ফার্লং পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সম্পূর্ন প্রাকৃতিক এই বনে অজস্র বৃটিশ বুনো লতা গ্লুগ্ন, ঘাস ও রংবেরঙ্গের বনফুল পর্যবেক্ষন করি। এই বুনো ফুল ও ঘাসফুল বাংলাদেশের প্রকৃতি হতে আলাদা ও বৈচিত্রময়। এখানে নীল, বেগুনি ও হলুদ কালারের প্রাধান্য বেশী। ঘন অরন্যে কাটবিড়ালী ও নানা ধরনের পাকপাখালী দর্শন করি। নয়নমুগ্ধ হয় ঘাসবনে আসংখ্য বুনো খরগোসের বিচরন দেখে। খরগোসগুলো মানুষকে তেমন ভয় পায়না। পার্কের একদিকে ছয় লেন রেলসড়ক কাঁটাতারের বেড়ায় আলাদা রয়েছে। রেলের যাত্রিরা এই নেচার বনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করে সময় পার করেন। এই পার্কের একদিকে বিশাল এক প্রাইভেট প্রপার্টি। সেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ। বাহির থেকে প্রপার্টি দেখে নেই। কাটাতারে ঘেরা এই প্রপার্টিয়ে আছে একটি বিশাল লেক। লেকে ভেসে আছে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দ্বীপ। এমন কি একটি বড় উপদ্বীপও লেকটির ভিতর ডুকিয়ে দেয়া হয়েছে। লেকের পারে সুন্দর করে গাছপালা লাগানো জলে নামার ঘাট। লেকে বড়শী বাওয়ার জন্য বেশ কিছু মঞ্চ রয়েছে। জলে জাত বেজাতের শাপলা ও পদ্ম ফুটে আছে। একটি দ্বীপে ছোট্ট বাঁশবন। নানান জাতের হাস বিচরন কাটছে। স্থানে স্থানে রাজহাঁস, টেপিহাস মনের আনন্দে সাঁতার কাটছে। এটা  আসলে কোন পুঁজিপতি অথবা প্রতিস্টানের লেক ও বাগান সজ্জিত প্রমোদ বাড়ি।

বাসায় ফিরে আমার একজন বৃদ্ধ নানির লন্ডন দেখার কাহিনী শুনি। আমার মায়ের বাড়মামি লন্ডন আসেন তার পুত্র ফয়জু মামার বাসায়। নানি পিছনের বাগানে গেলে প্রায়ই একজন ইংরেজের সাথে দেখা হয়। ইশারা ও অঙ্গভঙ্গির ভাষায় দুইজনের মধ্যে বেশ কথাবার্তা হয়। নানি মুখে আচল টেনে পর্দা আব্রু হয়ে ভাব বিনিময় করেন। ফয়জু মামা বললেন মা এত ঘুমটা টানাটানি করছেন কেন। নানি জবাব দেন, বুড়ি হলেও তো ভিনদেশি বেটা মানুষের সাথে কথা বলছি। ফয়জু মামা হেসে বললেন- উনি তো পুরুষ না, একজন মহিলা। নানি অবাক প্যান্ট-সার্ট পরা, চুলছাঁটা, সমতল বক্ষের মানুষটি আবার মহিলা হয় কেমনে?

আজব দেশ বৃটেন। এখানে নর ও নারী একই সমতলের বাসিন্দা। নানির ভাষ্য- হায়রে বিলাত, তোমার বেটা বেটি চেনা বড় দায়।

বড়ভাবী, ভাই, জেফার, নূরজাহান বেগম ও আমি এবার লন্ডনের এক এসিয়ান মার্কেটে প্রবেশ করি। এখানকার দোকানগুলো ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানী লোকজনের অধিকারে রয়েছে। এখানে কাপড়, রেডিমেট গার্মেন্টস, প্রসাধনী, গৃহসজ্জা সামগ্রীসহ সব ধরনের পন্যের ব্যবসা রয়েছে। কাস্টমারদের অধিকাংশ এসিয়ান, দুচার জন শ্বেতাঙ্গও দেখা যায়। লন্ডনের বাতাস ঠান্ডা ও রোদ আরামদায়ক হওয়ায় লোকজনের সহিত মার্কেটের সামনের বাগানের টালী নির্মিত সিটিং ব্যবস্থায় বসি। আইসক্রিম কিনে সবাই বসে খাই।

ঐ দিন বন্ধু সিদ্দিকুর রহমান নির্ঝর একটি সুন্দর ফুলের তুড়া নিয়ে আসেন। সাথে আসেন তার জার্মান পত্নী ইভাঙ্কা জেজেগ, কন্যা সাকিবা ও শিশুপুত্র ইব্রাহিম ইশরাক। নির্ঝর আমাদের তিনজনকে কাপড় উপহার দেন। ঐ দিনও ভাইয়ের বাসায় অনেক আত্মীয় সহ জমজমাট ইফতার পার্টি হয়।

লন্ডন হতে যুক্তরাষ্ট্র যাত্রাঃ                    ২০ জুন ২০১৭। ভ্রমনে রোজা রাখার ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নেই। তাই ঐদিন রোজা রাখা হলনা। সকাল ৬টায় উঠে তৈরি হই। ঘুম হতে উঠে নামাজ পড়ি। পিছনের সুন্দর বাগানের দিকে নজর দেই। গত বিকেলে গাছগুলোতে পানি দিয়েছি। জীবন্ত ফুলগাছগুলোকে যেন আমার নির্বাক বন্ধু মনে হচ্ছে। বাগানের কোনে কোনে অসংখ্য সৌরবিদ্যুৎ চালিত রঙ্গ-বেরঙ্গের বাতি রয়েছে। এই সুন্দর বাতিগুলো ভোরেও মিটিমিট করে জ্বলছে। সূর্যোদয় হলে বাতিগুলো আটোমেটিক নিভে যায় ও সূর্যালোকে চার্জিত হয়। তেমন কোনো খরচ ছাড়াই বাগানের এই বাতিগুলো সারারাত নানা বর্ণের মোহনীয় হালকা আলো বিতরণ করে যায়। এ যেন এক ফ্রি আলোকসজ্জা।

ভাতিজি, নওসীন অনলাইনে আমেরিকান এয়ারলাইন্স টিকেট ক্রয় করেছে। আমরা বাংলাদেশে অবস্থানকালে টিকেট কাটা হয়। হিথ্রো (ইউকে)-সার্লট নের্থক্যারলিনা)-হিথ্রো। প্রতি রিটার্ন টিকেট ৫০০ ডলার করে মোট ১,৫০০ ডলার। আজফার কার ড্রাইভ করে আমাদেরকে হিথ্রোতে নিয়ে আসে। পূর্ব লন্ডন হতে পশ্চিম লন্ডন। লন্ডন শহরের বুক চিরে টেমসের পারে পারে কার চালিয়ে সে অগ্রসর হয়। পথে পাওয়ার ব্রীজ, লন্ডন ব্রীজ সহ বিভিন্ন যুগে নির্মিত নানা ডিজাইনের বিখ্যাত সেতুগুলোর সংক্ষিপ্ত মোলাকাত পাই।

এগুলো বিভিন্ন যুগের নির্মাণশৈলী ও প্রযুক্তির সাক্ষ্য বহন করছে। যাত্রাপথে কালজয়ী অসংখ্য ভাস্কর্য দেখি। রাণীর এক মধ্যযুগীয় বাড়ি ও জাদুঘরের পাশ দিয়ে যাই। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর হিথ্রো বিমানবন্দরের ৫নং টার্মিনালে প্রবেশ করি। আমেরিকান এয়ারলাইন্স হতে টিকেট করা হলেও তারা বৃটিশ এয়ারওয়েজে নিউইয়ার্ক জেএফকে বিমানবন্দরের আরোহণ পত্র প্রদান করে। লন্ডন হতে প্রায় ৫/৬ ঘণ্টা পর আটলান্টিক মহাসাগর পার হয়ে জেএফকে তে অবতরণ করি। আমাদের গ্রিণ কার্ড একটি মেশিনে পরীক্ষা করা হয়। কোন ধরনের প্রশ্নের মুখামুখী না হয়েই ইমিগ্রেশন পার হই। মহিলা অফিসার, আমরা সত্ত্বর সংযোগ ফ্লাইট ধরব বলতেই দ্রুত সীল মেরে বিদায় জানান। এবার জেএফকের একটি অভ্যন্তরীণ ট্রেনে উঠে ৪নং টার্মিনালে যাই। এমেরিকান এয়ারলাইসেন্স এর ছোট্ট যানটি প্রায় ৬০/৭০ জন যাত্রি নিয়ে ৪ ঘণ্টা পর উড়াল দেয়। আমেরিকার নর্থ ক্যারলিনা স্টেটের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হচ্ছে শার্লট। শহরটি নর্থ ও সাউথ ক্যারলিনা স্টেটের মধ্যে অবস্থিত। সুদীর্ঘ পথ হেঁটে ও চলন্ত বেল্ট দিয়ে পথ অতিক্রম করে বিমানবন্দরের বাহিরে বের হই। বাহিরে এসে একজন কালো ভদ্রলোকের মোবাইল নিয়ে মেঝভাইকে আমাদের গেট নম্বর বলি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাই জামিল এ চৌধুরীর কার সামনে হাজির। দ্রুত মালামাল বেনেটে তুলে গাড়িতে উঠে বসি। মেঝ ভাই রোজাদার। এখান থেকে ১০০ মাইল দূরে সাউথ ক্যারলিনার রাজধানী কলম্বিয়া শহরে তার বাসায় নিয়ে যাবেন। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় কুয়াশার মতো বাষ্প উড়ছে। একমুখী রাস্তার দুদিকে সাদা মার্জিন লাইন খুব কষ্টে দেখা যাচ্ছে। এখানে গাড়ি ৮০ মাইল ঘণ্টা বেগে চালাতে হয়। সামনের গাড়িগুলোর কেবল হেডলাইটের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। ইফতারের সময় হলে মেঝ ভাই গাড়ি নিয়ে একটি মহাসড়ক রেস্ট হাউসের পার্কিংয়ে প্রবেশ করেন। সেখানে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি পার্ক করে সাথে নিয়ে আসা ইফতার খেয়ে রোজার সমাপ্তি করেন। ২০/২২ মিনিট পর এই বৃষ্টির মধ্যে আবার মহাসড়কে ঢুকে যাই। বৃষ্টির যেন বিরতি নেই। এ ধরনের বৃষ্টি সিলেটেও দেখা মেলা ভার। প্রায় দুই ঘণ্টা পর শত মাইল দূরের কলম্বিয়ার সুরম্য এক মার্কিন বাসায় পদাপর্ণ করি। মেঝ ভাবী খুব মজা করে দুই ধরনের মাছ রান্না করেছেন। আমাদের জন্য নতুন খাবার তৈরি, বাফেলো ফিসের (মহিষ) স্বাদ অনেকটা আমাদের দেশের রুই মাছের ও ক্যাট ফিসের (বিড়াল) স্বাদ কিছুটা পাঙ্গাশের মতন, তবে তেল তুলনায় অল্পই রয়েছে।

শেষ রাতে সেহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। মেঝভাইয়ের পুত্র আতিফ ও কন্যা তাইবা আসে। তাইবা তার কর্মক্ষেত্র জর্জিয়া রাজ্যের রাজধানী আটলান্টা হতে বাসায় এসে গেছে। আতিফ লন্ডনের কুইনমেরীতে আইন পাড়ার একটি অধ্যায় সমাপ্ত করেছে। সকাল ১০টায় বের হয়ে ওয়ালমাট এবং সামস্ এর বিশাল শপিং মলে গিয়ে বাজার করি। লন্ডনের চেয়ে বড় বড় রাস্তার কলম্বিয়া শহর নানা ধরনের বৃক্ষ ও শ্বেত গোলাপী ফুলে সুসজ্জিত। এখানকার আবহাওয়া শিলংয়ের মতো দরুণ আরামদায়ক। আগের দিন বাংলাদেশের ঘন বর্ষার মতো মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বাসায় ফিরে ঘুমে ঢলে পড়ি। ঘুম হতে উঠে তাইবা ও আতিফকে পাই। জেফার, তার মা ও মেঝমামা কলম্বিয়া এয়ারপোর্ট গিয়ে তাদেরকে নিয়ে আসেন। সামনের রাতটি পবিত্র শবে কদর। অর্থাৎ ২৭ রমজানের রাত। এগার মাইল দূরের এক মসজিদে, বাসার নর-নারী সবাই তারাবীর নামাজ পড়তে যাই। এই মসজিদে সামনের চার লাইনে পুরুষ ও শেষ লাইনে নারীরা সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে এক সাথে এশা ও তারাবীর নামাজ আদায় করি। মসজিদের ইমাম সাহেব একজন মিশরীয়। মুসল্লীরা বেশিরভাগই মনে হলো কালো আফ্রিকান। সবাই বেশ রিষ্টপোস্ট। এশার ফরজ নামাজ পড়ার পর দুরাকাত সুন্নত পড়ার সুযোগ না দিয়েই ইমাম ওয়াজ শুরু করেন। ওয়াজ শেষ, তারাবী শুরু। আট রাকাতে তারাবী সমাপ্ত। নামাজে স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে তেলাওয়াত করা হয়। বিতরের নামাজের তৃতীয় রাকাতে রুকু হতে দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে মোনাজাতের ভঙ্গিতে সুদীর্ঘ সময় সব ধরনের আকুতি নিয়ে প্রার্থনা করা হয়। যথারীতি নামাজ শেষ করে আর কোন মুনাজাত করা হয় না। আরবদের মতো এখানেও মিলাদ মাহফিল কিংবা নামাজ শেষে মোনাজাতের প্রচলন নেই। 

পরিস্কার পরিচ্ছন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এখানে কঠোর পরিশ্রম হলেও এর বিনিময়ে উন্নত জীবন পাওয়া যায়। গাড়ি-বাড়ি, সুন্দর উন্নত পরিবেশ, বিলাস সামগ্রী সহজেই মানুষের হাতে এসে ধরা দেয়। ঘুমের সময় পরিবর্তন হওয়ায় খুব একটা ঘুম আসেনি। ভাগ্য ভাল, ঘুম না লাগায় আমেরিকায় শবে কদরের পুরো রাত্রিটা সহজেই পরম করুণাময়ের এবাদতি করে কাটিয়ে দেই।

ঘুম হতে উঠে নামাজা পড়ে প্রাত্যহিক তসবী পাঠ শেষ করি। এবার বাসার পাঠাগারে নজর দেই। হাতে তুলে নেই আমেরিকান ডেমোক্রসি নামক সমৃদ্ধ এক বই। আমি রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। বইটিতে প্রাচীন মিশরীয় আমল হতে গ্রীক যুগ, রোমান সভ্যতা হতে বর্তমান কাল পর্যন্ত প্রসারিত শাসনতন্ত্র ও গণতন্ত্রের ইতিহাস সচিত্র বিবৃত হয়েছে। তবে মুসলিম সভ্যতার কোনো ছিটাফোঁটা কোথায়ও পেলাম না। মুসলমানরাও গণতন্ত্র বুঝে; এই সত্য হয়তো বইটির লেখকের ধারনায় নেই। এবার ইংরেজী ভাষায় লিখিত উইলিয়াম সেক্সপিয়ারের বিশাল রচনা সমগ্র হাতে নেই। কবির লেখা ১৫৪টি সনেটের প্রতিটির শেষ দুলাইন বোঝার চেষ্টা করি। সেক্সপিয়ারকে আমরা কবি হিসাবে জানলেও মূলতঃ তিনি নাট্যকার। তার রচনা সমগ্রের অধিকাংশ পৃষ্ঠাই নাটক। কবিতা বলতে এই ১৫৪টি সনেটই তাকে বিশ্ব কবির আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমাদের কবি রবীন্দ্রনাথের কবিতা কিংবা গানের ভান্ডার সেই তুলনায় অনেক বিশাল বিস্তৃত। কলম্বিয়ার এই বিশাল ডুপ্লেক্স ভবনটিতে ২৪ ঘণ্টা সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন চালু থাকে। বারান্দায় বের হয়ে খানিকটা গরম অনুভব করি। আকাশটা তখন বাংলাদেশের মতো মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। 

২৩ জুন ২০১৭ শুক্রবার। পবিত্র জুমুয়াতুল বিদা বা রমজানের শেষ জুুমুয়া। কলম্বিয়ার আফ্রিকান মসজিদে জুমুয়াতুল বিদার নামাজ পড়তে যাই। জামাতের পিছনের লাইনে রয়েছেন বোরকা পরা নয়ত মাথা বাধা মহিলারা। বিষ্ময়কর হচ্ছে ইমাম সাহেবের মাথায় কোনো টুপি নেই এবং ৯০% মুসল্লীই টুপিবিহীন অবস্থায় জুমুয়ার নামাজ আদায় করেন।

পরে সোলার এনার্জিতে পরিচালিত কিছু বাসা পর্যবেক্ষণ করি। ত্রিপ্লেক্স বিশাল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসাগুলো নিজস্ব সৌরবিদ্যুতে পরিচালিত হচ্ছে। বাসার ছাদজুড়ে সৌরপ্যানেল বসানো। আরও শুনলাম। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরকার কিনে নেয়। একেতো বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়না, উল্টো টাকা পাওয়া যায়। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নাকি বাড়ির ছাদে সোলার এনার্জি প্লান্ট বসাতে প্রচুর ভর্তুকীর ব্যবস্থা করে দেন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন