শাহজালাল ও সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন
রক্তপিপাসু খুনি চেঙ্গিস খানের নাতি মোঙ্গর তস্কর হালাকু খান কতৃক ১২৫৮ থ্রীষ্টাব্দে মুসলিম সভ্যতার কেন্দ্র বাগদাদ নগরী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, নিহত হন হাজার হাজার নিরীহ মানুষ। তাতারদের ধর্ষন ও লুন্টনে তৎকালীন পৃথিবীর শ্রেষ্ট নগরী বাগদাদ বিরানভূমিতে পরিনত হয়। ফলে বাগদাদবাসী সৈয়দ বংশীয় নাসির উদ্দিন ভাগ্য বিপর্যয়ের শিকার হন। তিনি একজন ওলী প্রকৃতির লোক ছিলেন ও ভাগ্য অন্নেষনে গৌড়ে আগমন করে তথাকার সুলতান শামস উদ্দিনের সেনাবাহিনীতে চাকুরি লাভ করেন। দরবেশ বলিয়া তার বেশ খ্যাতি ছিল এবং কথিত আছে প্রচন্ড ঝড়ের প্রবল বায়ু প্রবাহে তার তাবুর দীপ নির্বাপিত হতনা। উচ্চবংশীয় এই নাসির উদ্দিন সম্মন্ধে এইরূপ বিবরন শোনতে পেয়ে সুলতান তাকেই সিকন্দর শাহের সহায়তার জন্য সিলেট প্রেরনের উপযুক্ত লোক মনে করেন এবং সিপাহসালার বা সেনাপতি উপাধি দান করতঃ তাহার নেতৃত্বে এক সহস্র অশ্বারোহী ও তিন সহস্র পদাতিক সৈন্য শ্রীহট্টে প্রেরন করেন। গৌড়ের অনতিদূরে সাতগাঁওয়ের (হুগলি) ত্রিবেনীতে শাহজালাল তার পথ প্রদর্শক বুরহান উদ্দিন ও বহু অনুসঙ্গী সহ সৈয়দ নাসির উদ্দিনের বাহিনীর সহিত মিলিত হন। ইতিমধ্যে সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার শাহজালালের মহিমা ও শ্রেষ্টত্ব অনুধাবন করে তার শিষ্যত্ব বরন করে নেন। অতঃপর শাহজালাল ও সৈয়দ নাসির উদ্দিন সম্মিলিতভাবে সিলেট অভিযানে অপেক্ষারত সেনাপতি ও যুবরাজ সিকান্দর খান গাজির সহিত মিলিত হতে তার সেনা শিবিরের দিকে অগ্রসর হন। শাহজালালের সিলেট অভিযানকালে পথে অনেক দরবেশ যোদ্ধা ধর্মযুদ্ধে যোগ দেওয়ার মানসে তাঁহার সহিত অনুগমন করেছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন