মনেহয় সবকালো, সব অন্ধকার
চুপিচুপি গ্রাস করছে আমার জীবন।
সূর্যটা ডুবে যাচ্ছে মেঘে মেঘে পাহাড় চূড়ায়
আমার কপাল পুড়ছে অদৃশ্য নিয়তির ঘায়।
পৃথিবীর অফুরন্ত বাতাস যেন ফুরিয়ে গেছে
বন্ধ হয়ে আসছে আমার শ্বাসপ্রশ্বাস,
শূন্যে মিলিয়ে যাচ্ছে আমার আকাশ।
পৃথিবীতে অক্সিজেনের আজ বড়ই অভাব।
সে অভাবটা কেবলই যেন আমার,
সংসারে মহাসুখী বাকী সব আর।
কারণ ... ... ...
সবার জীবন স্বর্গের স্বপ্নপুরী
সবার জীবন স্বর্গের স্বপ্নপুরী
পৃথিবী হাসি-খুশী প্রেমে ভরা
গাড়ী বাড়ী সুখের সংসার
পুত্র-কন্যা-স্ত্রীর মায়াজালে
এক আনন্দ বসতি।
এক আনন্দ বসতি।
তাইতো ... ... ...
পৃথিবীর সবাই হাসতে জানে
শুধু হাসতে জানিনা আমি।
পৃথিবীর কেউ কাঁদতে জানে না
কেবল কাঁদতে জানি আমি।
কাঁদি, একেবারে অবোধ শিশুর মতন।
কোন যন্ত্রনা পৃথিবীর মানুষকে তাই
চিন্তিত করেনা ভাবাতে পারেনা
পারেনা কাঁদাতেও।
পৃথিবীর সন্তানদের কাছে
এই মাটির জগৎটা যেন-
“এক ভালবাসার তাজমহল
এক অভিনয়ের রঙ্গমঞ্চ
এক সুবিস্তৃত ক্রীড়াভূমি
ভোগের এক সুন্দরী রমণী
বিরাট এক সুফলা ফলবাগ
অজস্র হাসিমাখা ফুলের নিকুঞ্জ
অনাদি এক আনন্দ আশ্রম।
জগতের এইসব চিরসুখী আমজনতার একজন
এতদিন ছিলাম আমি।
এতদিন ছিলাম আমি।
আমি ছিলাম আনন্দ উৎসবে মাতোয়ারা,
পৃথিবীটা ছিল আমার বিলাস কানন-
শাহজাহানের ময়ূর সিংহাসন।
কিন্তু এখন-
বর্ষার ঘোলাজলে সুদীর্ঘ্য সাঁতার কেটে কেটে
লাল ঝাপসা আমার চোখ।
পৃথিবীটা হিজিবিজি হয়ে গেছে আজ।
পৃথিবীটা হিজিবিজি হয়ে গেছে আজ।
কারণ ... ... ...
ব্যর্থতা আমাকে নিয়ে গেছে চেতনায়
চেতনা আমাকে নিয়ে গেছে ভাবনায়।
ভাবনা আমাকে ফেলে দিয়েছে অনুভূতির জলে,
অনুভূতি আমাকে ঠেলে দিয়েছে যন্ত্রণায়।
যন্ত্রণা আমাকে সবেগে নিয়ে যায়-
প্রিয় জন্মস্থান দাউদপুরের
পারিবারিক কবরগায়।
দেখি এক ভয়ঙ্কর দানব
আমাকে হত্যা করতে উদ্যত।
তীক্ষ্ম প্রখর থাবা মেলে,
ও যেন আমার পিছুপিছু সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ায়,
আমাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চিরতরে।
নির্জন এক গর্তের আগ্রাসী থাবা
ভয়ঙ্কর এক অন্ধকার বায়ুশূন্য গর্ত।
আমাকে অজগরের হা-মেলে গিলে ফেলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আমি হতভাগা তাই
সুখী হতে পারিনি জীবনে,
সুখী হতে পারিনি জীবনে,
সংসারে বসাতে পারিনি মন।
তাইতো আমি আজ দিকহারা,
উদ্ভাস্তু যাযাবর।
আমার কাছে তাই-
সংসারটা বড়ই বিষাক্ত
নিম-করলার তিতা রস।
নিম-করলার তিতা রস।
সমাজটা এক হিংস্র নরখাদক,
জীবনটা এক পাগলা কুকুরের ঘেঁউ ঘেঁউ।
এই অবুঝ কুরেশীকে নিয়ে মানুষের সুচিন্তিত মতামত
ও এক অন্য ধরনের লো্ক,
ও এক ফিলোসফার টাইপের লো্ক,
ও একটা অর্ধপাগ্ল,
টাল-মাটাল,
টাল-মাটাল,
কেমন যেন সে।
সত্যিই কি আমি একজন ফিলোসফার?
সত্যিই কি আমি একজন পাগল?
সত্যিই কি আমি একজন টাল-মাটাল?
কিংবা উন্মাদ টাইপের একটা কিছু?
না, আমার বিচারে অনুরূপ কিছু, মনে
হয়না আমাকে,
তবে একথা সত্য যে আমি এক রহস্যময় মানবসন্তান।
আসলে ... ... ...
এ সমাজ আমাকে করেছে বঞ্চনা,
প্রকৃতি আমাকে করেছে উদাসীন,
পৃথিবী আমাকে অযথা দিয়েছে যন্ত্রণা,
মানুষ আমাকে নির্বাসন দিয়েছে জনশূন্য একদ্বীপে।
সংসার আমাকে কারনে অকারনে করেছে বিরক্ত,
আর শিমির নীলচোখ শিমির ভালবাসা,
আমাকে নিয়ে গেছে কল্পনার রঙ্গীন এক বিমূর্ত জগতে।
শেষমেশ আমি সবফেলে ডুবে গেছি আমার ভিতর।
তাইতো হলাম আমি-
একজন কবি,
একজন কবি,
একটা ফিলোসফার,
একটা আনসসিয়াল মাতাল,
পৃথিবীর এক অপ্রয়োজনীয় জজ্ঞাল।
আসলে আমি ব্যর্থতার এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি,
সুদক্ষ শিল্পীর আঁকা যন্ত্রণার তৈলচিত্র।
রচনাকাল ঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন
রচনাকাল ঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন