সুউচ্চে কিসের খুঁজে উড়ে, বিদঘুটে এক পাখি,
ছোবল মারতে শিকারী চোখ সুতীক্ষ্ম করে রাখি।
কি যে ছিনতাই করবে কখন, বলা যে ভীষণ দ্বায়,
চেঙ্গিস হায়, আকাশে চায়, প্রাণিকূল যেন মারা যায়।
বসে যেই ডালে, নেই নড়াচড়া, মাংসে তবলা ভূঁড়ি,
ছুলানো গলা কুৎসিত কদাকার, দুর্গন্ধ শরীর জুড়ি।
সারা দিনমান খুঁজে ফিরে লাশ সন্ধানী দুই চোখে,
ছিঁড়ে খায় মড়া, ধারালো ঠোঁটে, প্রেমহীন বুকে।
দলবেঁধে ওরা চঞ্চু চালায় পাষাণ কসাইর মত,
অসার দেহের রক্তমাংস, খেয়ে যায় অবিরত।
ঐ শকুনেরা মিশে গেছে আজ আমজনতার ভীড়ে,
গ্রামে গ্রামে বন্দি মানুষ শকুনেরা আছে ঘিরে।
অজস্র জনতা হচ্ছে বিবচ্ছেদ জীবন্ত শরীরে,
ভয়ঙ্কর এই পাষাণ শকুনেরা আমাদেরে আছে ঘিরে।
হাত থেকে রুটি ছিনিয়ে নিতেছে কৌশলী ছু’মেরে,
মরছে মানুষ, ওদের মাংসে শকুনেরা উঠে বেড়ে।
রাক্ষস ব্যাংকে জমা করে ভুখা-মঙ্গা মানুষের হাড়,
রক্ত চুষে ভূঁড়ি ফুলায়, চালায় দামি কার।
কংকাল দিয়ে বহুতল ভবন, গড়ে তুলে গোলশান,
ক্ষুধার্ত শকুনেরা, দিনরাত করে তারা, শবের সন্ধান।
কবি লেখক ব্লগার ও পূবালী ব্যাংকার ইসফাক কুরেশী
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমি শকুন ভালবাসি। শকুন দেখতে পূবালী ব্যাংকের আমার সহকর্মী যীশু, বশির, মহসিন এবং খালেদকে নিয়ে গতমাসে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে যাই। আমাদের শৈশবে প্রচুর শকুন দেখা গেলেও এখন আর নেই। পৃথিবীতে যত ধরনের পাখি আছে তন্মধ্যে শকুন পরিবেশের জন্য সবচেয়ে উপকারী। শকুনকে বলা হয় প্রাকৃতিক সুইপার। তাঁরা মরা পচা প্রাণী খেয়ে রোগ ও দুর্গন্ধ হতে প্রকৃতিকে রক্ষা করে। শকুন আজ বিপন্ন প্রাণী। এই কবিতা পড়ে দয়া করে কেউ শকুনকে ঘৃণার চোখে দেখবেন না। কবিতার শকুন আর প্রকৃতির শকুন এক জিনিস নয়। শকুন ভালবাসুন, শকুনকে বাঁচান।
নিবেদনে- ইসফাক কুরেশী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন