হযরত শাহদাউদ কুরায়শির(রহঃ) জীবনকাল অনুমানিক ১২৭০ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দ। ১৩০৩ সালে তিনি হজরত শাহজালালের(রঃ) সাথে সিলেট আসেন। তার পিতা আবু মোহাম্মদ কুরায়শি ও পিতামহ হালিম কুরায়শি সম্পর্কে ইতিপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। এখন আমি ধারাবাহিকভাবে তাঁর পরবর্তী বিভিন্ন প্রজন্মের ইতিহাস প্রনয়ণে সচেষ্ট হব।
হযরত শাহদাউদ কুরায়শির(রহঃ) একমাত্র পুত্র ছিলেন শাহ রহিম দাদ কুরায়শি(রঃ)। পিতার নিকট বয়াত গ্রহণ করে তিনি আধ্যাত্মিক সাধনা, ইসলাম প্রচার ও নও মুসলিমদের ইসলাম শিক্ষাদান করার কাজে নিজেকে নিবেদিত করেন। আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতা সাধনের জন্য পিতা তাঁকে মাঝে মধ্যে নিজ গুরু হজরত শাহজালালের(রঃ) দরবারে প্রেরণ করতেন।সুপ্রসিদ্ধ পিতা হযরত শাহদাউদ কুরায়শি(রহঃ) এবং তাঁর সুবিখ্যাত গুরু হজরত শাহজালালের(রঃ) সান্নিধ্যে তিনি একজন প্রসিদ্ধ আলেম ও সুফিতে পরিণত হন। নিজের ও তাঁর বংশধরদের প্রচেষ্টায় দাউদপুর অঞ্চল ইসলাম ধর্মের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। এভাবে একটি আলোকিত মুসলিম কম্যুউনিটি গঠনে তিনি ও তাঁর বংশধরেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ইন্তেকালের পর তিনি তাঁর পিতা শাহদাউদ কুরাশির সন্নিকটে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।
হযরত শাহদাউদ কুরায়শির একমাত্র পুত্র রহিম দাদ কুরায়শির বংশধর মিয়া মালিক ও মিঠা মালিক। তাঁরাও পূর্ব পুরুষদের ইসলাম প্রচারের ধারা অব্যাহত রাখেন। মিয়া মালিকের শেখ মোহাম্মদ ও শাহ মালিক নামের দুইজন পুত্র ছিলেন। মিঠা মালিকেরও দুইপুত্র ছিলেন। তাঁদের নাম রাফাত মালিক ও বাবু মালিক। বাবু মালিক ছিলেন নিঃসন্তান। আবার শেখ মোহাম্মদ এর একমাত্র পুত্র বোরহান মালিকও ছিলেন নিঃসন্তান। ফলে এই বংশ প্রথম থেকেই সংকুচিত হতে থাকে।
শাহ্ মালিকের দু’পুত্র সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে ছিলেন শের মালিক। দ্বিতীয় পুত্র পীর মালিক ওরফে এখতিয়ার খান দিল্লির সুলতানের নিকট হতে জায়গির প্রাপ্ত হয়েছিলেন বলে কথিত আছে। শের মালিক ছিলেন উচ্চস্থরের আধ্যাত্মিক সাধক। তারা পঞ্চদশ শতাব্দীর লোক ছিলেন।
শের মালিকের ছিলেন পাঁচ সন্তান। এঁরা হলেন (১) মনসুর খান, (২) মরব খান, (৩) সাদ খান, (৪) নূর খান ও (৫) ইউসুফ খান। এঁদের মধ্যে মনসুর খান, মরব খান, নূর খান ও ইউসুফ খান ছিলেন নিঃসন্তান। অন্য পুত্র সাদ খানের ৬ পুত্র ছিলেনঃ (১) মমরুজ খান, (২) শেখ রাজু (৩) বাহাদুর খান (৪) সালাম খান (৫) শেখ ইয়াছিন ও (৬) শেখ আহমদ। পীর মালিক ওরফে এখতিয়ার খানের ছিলেন ছয় পুত্র সন্তান। এদের নামঃ (১) কবির খান, (২) ওসমান খান, (৩) বাদল খান, (৪) ইলিয়াস খান, (৫) সুলেমান খান ও (৬) লোকমান খান। এঁদের মধ্যে বাদল খান, সুলেমান খান ও লোকমান খানের কোন সন্তান ছিল না।
ফলে দেখা যায় শাহদাউদ কুরায়শির(র.) বংশধরদের মধ্যে অনেকে নিঃসন্তান থাকার কারণে বংশধরগণ শাখা প্রশাখায় তেমন বিস্তার লাভ করেন নি।
শের মালিকের সময় দিল্লির শাসন ক্ষমতা পাঠান শাসকদের কাছ থেকে মোঘলদের হাতে চলে যায়। ফলে সিলেট জেলাও মোঘল সাম্রাজ্যের অন্তভুক্ত হয়। পাঠানদের প্রদত্ত ভূসম্পত্তি নবায়ন করেন। মোঘল সম্রাটগণ কর্তৃক দেশের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিগণকে খান উপাধিতে ভূষিত করা হত। এভাবে শের মালিক ও পীর মালিক উভয় ভাইয়ের সন্তানরা নিজেদের নামের সঙ্গে খান উপাধি গ্রহণ করেন। পীর মালিক পাঠান আমলের একজন বিখ্যাত লোক ছিলেন। সে সময়ের পাঠান সরকার তাকে "ইখতিয়ার খান" উপাধি প্রদান করে, যেমন এই বংশের গৌছ উদ্দিন চৌধুরী বৃটিশ আমলে "খান বাহাদুর" উপাধি পান।
চতুর্থ পুরুষে রাফাত মালিকের তাতার মালিক নামে একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন। তাতার মালিকেরও খান মালিক ওরফে শেখ জালাল নামে এক পুত্র সন্তান ছিলেন। শেখ জালালের ঔরসে ষষ্ঠ পুরুষে এসে আরিজ খান ও ফিরোজ খান নামে দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। আরিজ খানের একমাত্র পুত্র ছিলেন আমির খান। ফিরোজ খানের ঔরসে ছিলেন চার পুত্র সন্তান। তাঁরা হলেন- (১) কলিম খান, (২) দরিয়া খান, (৩) কিশওয়ার খান ও (৪) লোদী খান। এদের মধ্যে দরিয়া খান ও কিশওয়ার খান ছিলেন নিঃসন্তান।
শের মালিকের দিকে শাহদাউদের সপ্তম পুরুষে শেখ রাজুর ছিলেন চার পুত্র সন্তান। তাঁরা ছিলেন আব্দুল মজিদ, আব্দুস সামাদ, আব্দুল ওলা (নিঃসন্তান) ও আব্দুর রহমান (নিঃসন্তান)। শুধুমাত্র আব্দুস সামাদের রজব উদ্দিন ও সফর উদ্দিন নামে ছিলেন দুই পুত্র সন্তান। রজব উদ্দিনের ছিলেন ফরসা বিবি নামে একমাত্র মেয়ে। সফর উদ্দিন নিঃসন্তান ছিলেন। ফলে তাঁদের বংশ ও বসতি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
একইভাবে শেখ রাজুর সহোদর শেখ ইয়াসিনের ছিলেন চার পুত্র সন্তান- (১) ইয়াজ মোহাম্মদ, (২) মোহাম্মদ মুসা, (৩) ইউসুফ মোহাম্মদ ও (৪) লতিফ মোহাম্মদ। এদের চার জনেরই পুত্র সন্তান না থাকায় তাঁদের বংশ বিলুপ্ত হয়ে যায়।
পীর মালিকের দিকে শাহদাউদের সপ্তম পুরুষে নাসের উদ্দিন খানের একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন জুনাইদ খান। তাঁরও ছিলেন একমাত্র পুত্র অষ্ঠম পুরুষে সুমন খান। নবম পুরুষে সুমন খানের ছিলেন চার পুত্র- (১) নাসির খান, (২) আনোয়ার খান, (৩) হায়াত খান ও (৪) করম খান। করম খান ছিলেন নিঃসন্তান। শুধুমাত্র আনোয়ার খানের একাদশ পুরুষে ছিলেন দু’জন পুত্র সন্তান-(১) শেখ ইসহাক ও (২) ঈসা খান।
ষষ্ঠ পুরুষে ওসমান খানের ছিলেন চার পুত্র সন্তান। এরা- (১) বায়েজীদ খান, (২) শেখ মুছা, (৩) শেখ গরিব ও (৪) শেখ ইব্রাহিম। পরবর্তীতে এ বংশধারা ও চতুর্দশ পুরুষে এসে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
ইলিয়াস খানের ছিলেন দু’পুত্র সন্তান। তারা ছিলেন- (১) সিকন্দর খান ও (২) ইয়াকুব খান। সিকন্দর খানের ছিলেন (১) সদর উদ্দিন ও (২) মালিক মোহাম্মদ নামে দু’পুত্র। সদর উদ্দিন ছিলেন নিঃসন্তান। মালিক মোহাম্মদের ছিলেন দু’পুত্র সন্তান। তাঁরা হলেন মাহতাব উদ্দিন ও হাফিজ মোহাম্মদ। শুধু হাফিজ মোহাম্মদের ছিলেন (১) খাজা বখশ, (২) করম বখশ, (৩) রহমান বখশ নামে তিন পুত্র। খাজা বখশ ও করম বখশ উভয়ের বংশধারা একাদশ পুরুষে এসে বিলুপ্ত হয়ে যায়। শুধুমাত্র রহমান বখশের ছিলেন দু’পুত্র ও এক কন্যা। পুত্র মোহাম্মদ আলী নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান। অপর পুত্র মোহাম্মদ রাজার বংশধারা একাদশ পুরুষে এসে বিলুপ্ত হয়ে যায়। শুধুমাত্র রহমান বখশের ছিলেন দু’পুত্র ও এক কন্যা। পুত্র মোহাম্মদ আলী নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান। অপর পুত্র মোহাম্মদ রাজার বংশধররা আজও বর্তমান। এ বংশের চতুর্দশ পুরুষে উমেদ রাজার বংশও বিলুপ্ত হতে হতে শুধু ইসহাক রাজা চৌধুরীর বংশ বিস্তার লাভ করে আজও টিকে আছে।
ষষ্ঠ পুরুষে খান মালিক ওরফে শেখ জালালের আরিজ খান ও ফিরোজ খান নামে দু’পুত্র সন্তান ছিলেন। আরিজ খানের আমির খান নামে ছিলেন একমাত্র পুত্র। আমির খানের ঔরসে মাহতাব খান ও মারুফ খান নামে দু’পুত্র ছিলেন। মাহতাব খানের বেরাই ঠাকুর নামে একমাত্র পুত্র নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে এ শাখাও বিলুপ্ত হয়।
ফিরোজ খানের সপ্তম পুরুষে (১) কালিম খান, (২) দরিফ খান, (৩) কিশওয়ার খান ও (৪) লোদী খান নামে চার পুত্র সন্তান ছিলেন। এদের মধ্যে দরিয়া খান ও কিশওয়ার খান ছিলেন নিঃসন্তান। কলিম খানের (১) তোল মোহাম্মদ, (২) সালেহ মোহাম্মদ, (৩) মোশায়েক মোহাম্মদ ও (৪) সাদিক মোহাম্মদ নামে চার পুত্র সন্তান ছিলেন। এরা চার জনই নিঃসন্তান অবস্থায় বিগত হলে তাদের বংশ বিলুপ্ত হয়ে যায়। লোদী খানের নিয়ামত খান ও হাফিজ হারুন বাসের নামে দু’পুত্র সন্তান ছিলেন। হাফিজ হারুনের বংশধররা নির্বংশ হতে হতে ষোড়শতম পুরুষে এসে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যান।
ষষ্ঠ পুরুষে কবির খানের ছিলেন একমাত্র পুত্র নাসের উদ্দিন। তাঁরও ছিলেন একমাত্র পুত্র জুনাইদ খান। জুনাইদ খানের একমাত্র পুত্র ছিলেন সুমন খান। সুমন খানের ছিলেন চার পুত্র (১) নাসির খান, (২) আনোয়ার খান, (৩) হায়বত খান ও (৪) করম খান। এদের মধ্যে একমাত্র আনোয়ার খানের ছিলেন দু’পুত্র সন্তান। এরা হলে শেখ ইসহাক ও ঈসা খান। বাকী তিনজন ছিলেন নির্বংশ।
শেখ ইসহাকের ছিলেন ছয় পুত্র সন্তান। এরা ছিলেন- (১) মিয়াজান, (২) আব্দুল মজিদ, (৩) শেখ আহমদ, (৪) শেখ আইয়ুব, (৫) শেখ হামিদ ও (৬) শেখ ইব্রাহিম। এদের পাঁচ জনই ছিলেন নিঃসন্তান। শুধু শেখ আইয়ুবের ছিলেন দু’পুত্র সন্তান। তাঁদের নাম ছিল রব উদ্দিন ও আব্দুর রহিম। এরা উভয়েরই নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে এ বংশ বিলুপ্ত হয়ে যায়। ঈসা খানের দ্বাদশ পুরুষে ছিলেন খোদা বখশ ও কাসিম খান নামে দু’পুত্র সন্তান। খোদা বখসের ত্রয়োদশ পুরুষে ছিলেন দু’পুত্র। এরা হলেন আলী মোহাম্মদ ও আব্দুল ওলা। উভয়েই নিঃসন্তান ছিলেন। কাশিম খানের আলাউদ্দিন নামে একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন। তিনিও নিঃসন্তান অবস্থায় পরলোক গমন করলে বংশটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
দশম পুরুষে করম মোহাম্মদের ছিলেন চার পুত্র সন্তান। এরা ছিলেন একাদশ পুরুষে- (১) নজর মোহাম্মদ, (২) মোহাম্মদ হায়দার, (৩) মোহাম্মদ আকবর ও (৪) মোহাম্মদ আনোয়ার। নজর মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ আকবর ছিলেন নিঃসন্তান। মোহাম্মদ হায়দারের ছিলেন দ্বাদশ পুরুষে তিন পুত্র। এরা হলেন- (১) মোহাম্মদ সফদার, (২) মোহাম্মদ জাকির ও (৩) মোহাম্মদ মুকিম। এদের মধ্যে একমাত্র মোহাম্মদ জাকিরের ছিলেন চার পুত্র সন্তান। এরা ছিলেন ত্রয়োদশ পুরুষে (১) আব্দুল গফফার, (২) মোহাম্মদ হাজির, (৩) মোরাই মিয়া ও (৪) চাঁদ মিয়া। এদের মধ্যে শুধুমাত্র মোহাম্মদ হাজিরের ছিলেন মোহাম্মদ হাসান নামে এক পুত্র সন্তান। তিনি নিঃসন্তান থাকায় এ শাখাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। শুধুমাত্র মোহাম্মদ আনোয়ারের ঔরসে দ্বাদশ পুরুষে মোহাম্মদ মনোয়ার ও মোহাম্মদ নসর নামে দু’পুত্র ছিলেন। এদের মধ্যে মোহাম্মদ আনোয়ারের ত্রয়োদশ পুরুষে তিন পুত্র ছিলেন। তাঁরা হলেন (১) মৌলবী রশিদ আলী (২) ওয়াজেদ আলী ও (৩) মজিদ আলী। এর মধ্যে মজিদ আলীর ছিলেন চতুর্দশ পুরুষে তিন পুত্র (১) সখাওয়াত আলী (২) নাজারাত আলী ও (৩) সুজাত আলী। এরা ছিলেন নিঃসন্তান। মোহাম্মদ নসরের ছিলেন মোহাম্মদ তোরাব নামে একমাত্র পুত্র। তিনি নিঃসন্তান থাকায় বংশটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
ইব্রাহিম খানের জান মোহাম্মদ নামে ছিলেন এক পুত্র। তাঁর একমাত্র পুত্র ছিলেন হায়াত মোহাম্মদ ও তাঁর পুত্র নবম পুরুষে আব্দুল মজিদ। তাঁর আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুর রহমান নামে দু’পুত্র ছিলেন।
১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনের আওতায় এই দুইভাইয়ের যৌথনামে ৪৮৩০/৪ নং আব্দুর রাজ্জাক-আব্দুর রহমান তালুকের মালিকানা পান। দাউদপুর গ্রামের পূর্বদিকে এই তালুক কয়েক বর্গমাইল এলাকায় প্রসারিত ছিল।এই বংশও বিলুপ্ত হতে হতে দ্বাদশ পুরুষে আব্দুল গফুর চৌধুরী ও ত্রয়োদশ পুরুষে আবু নসর চৌধুরী ও জাকির চৌধুরী নামে দু’পুত্র সন্তান ছিলেন। এর মধ্যে আবু নসর চৌধুরীর ছিলেন চার পুত্র। এরা ছিলেন (১) আবুল বসর চৌধুরী, (২) আবুল মুবাশ্বর চৌধুরী (৩) মোহাম্মদ মুজাম্মিল চৌধুরী ও (৪) মোহাম্মদ মোফাজ্জল চৌধুরী।
আবুল বসর চৌধুরীর পত্নী ছফর চান্দ খাতুনের বাপের বাড়ি, দাউদপুর, কুনারবাড়ি। এই দম্পতির একমাত্র মেয়ে হাফিজ খাতুনের স্বামী রহমানুর রাজা, দাউদপুর, মাঝের বাড়ি। ছফর চান্দ খাতুন দাউদপুর মাদ্রাসায় ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে প্রায় ২২ একর ভুমিদান করেন।
আবুল মুবাশ্বর চৌধুরী ছিলেন তিন পুত্র ও তিন কন্যা। তারা ছিলেন- (১) ওয়াসির আলী চৌধুরী (২) ওয়াতির আলী চৌধুরী ও (৩) ওয়াছিল আলী চৌধুরী এবং তিন কন্যা (১) কুনাই বিবি স্বামী- হাবিবুর রহমান, কানিশাইল, ঢাকাদক্ষিণ (২)---- আলাপুর, গওহরপুর, সিলেট (৩)---- দুহাল, চারখাই, সিলেট। এ তিন ভাইয়েরই বংশধর না থাকায় এ শাখাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোহাম্মদ মোজম্মিল চৌধুরীও ছিলেন নিঃসন্তান। শুধুমাত্র মোহাম্মদ মোফাজ্জল চৌধুরীর বংশধারা আজও টিকে আছেন।
আবুল মুবাশ্বর চৌধুরী ছিলেন তিন পুত্র ও তিন কন্যা। তারা ছিলেন- (১) ওয়াসির আলী চৌধুরী (২) ওয়াতির আলী চৌধুরী ও (৩) ওয়াছিল আলী চৌধুরী এবং তিন কন্যা (১) কুনাই বিবি স্বামী- হাবিবুর রহমান, কানিশাইল, ঢাকাদক্ষিণ (২)---- আলাপুর, গওহরপুর, সিলেট (৩)---- দুহাল, চারখাই, সিলেট। এ তিন ভাইয়েরই বংশধর না থাকায় এ শাখাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোহাম্মদ মোজম্মিল চৌধুরীও ছিলেন নিঃসন্তান। শুধুমাত্র মোহাম্মদ মোফাজ্জল চৌধুরীর বংশধারা আজও টিকে আছেন।
অষ্টম পুরুষে সালেহ মোহাম্মদের ছিলেন তিন পুত্র। তারা হলেন (১) মোহাম্মদ মুনিম, (২) মোহাম্মদ জামান ও (৩) মোহাম্মদ আমিন। প্রথম দু’জনই ছিলেন নিঃসন্তান। শুধুমাত্র নবম পুরুষে মোহাম্মদ আমিনের ছিলেন (১) মোহাম্মদ বাসের ও (২) মোহাম্মদ হাতিম নামে দু’পুত্র। মোহাম্মদ বাসেরের দশম পুরুষে ছিলেন দু’পুত্র। তাঁরা ছিলেন- মোহাম্মদ হাজির ও মোহাম্মদ সাবি। মোহাম্মদ হাজিরের ছিলেন তিন পুত্র- (১) ইসরাইল আলী চৌধুরী, (২) ইয়াকুব আলী চৌধুরী ও (৩) সিকান্দর আলী চৌধুরী। ইয়াকুব আলী চৌধুরীর ছিল তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তান। তাঁরা ছিলেন মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, মোহাম্মদ মোহতাছিন আলী চৌধুরী ও কন্যা আঞ্জুমান আরা খাতুন।
মোহাম্মদ হাসান চৌধুরীর ত্রয়োদশ পুরুষে ছিলেন এক মেয়ে তাইয়েবুন্নেছা এবং এক ছেলে মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। ছেলে মোহাম্মদ আলী চৌধুরী শৈশবে মারা গেলে এ শাখাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী ত্রয়োদশ পুরুষে ছিলেন তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা হলেন কুতুব উদ্দীন আহমদ চৌধুরী, খান বাহাদুর গৌছ উদ্দীন আহমদ চৌধুরী ও কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী এবং আখতারুন্নেছা খাতুন।
দশম পুরুষে মোহাম্মদ হাতিমের ছিলেন দু’পুত্র। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ কাজিম ও মোহাম্মদ নাজিম। মোহাম্মদ নাজিম ছিলেন নি:সন্তান। মোহাম্মদ কাজিমের একমাত্র পুত্র একাদশ পুরুষে আব্দুল করিম চৌধুরী। তাঁর ছিলেন দ্বাদশ পুরুষে তিন পুত্র। এরা ছিলেন-(১) আব্দুল ওয়াছে চৌধুরী, (২) আব্দুল ফাত্তাহ চৌধুরী ও (৩) বশির উদ্দীন চৌধুরী। এদের কিছু সংখ্যক বংশধর আজও উত্তরের বাড়ীতে বাস করছেন।
একাদশ পুরুষে মোহাম্মদ রাজা চৌধুরীর ছিলেন দু’কন্যা ও এক পুত্র। পুত্র হলেন মুছা রাজা চৌধুরী আর মেয়েরা হলেন রমজান বিবি ও কাদী বানু বিবি। মুছা রাজা চৌধুরীর দ্বাদশ পুরুষে (১) বখতিয়ার বিবি, (২) কলিম রাজা চৌধুরী, (৩) হামিদ রাজা চৌধুরী, (৪) আরমান বিবি, (৫) বিবি বানু ও (৬) আহমদ রাজা চৌধুরী নামে তিন পুত্র ও তিন কন্যা ছিলেন। কলিম রাজা চৌধুরীর নছিবা খাতুন নামে একমাত্র মেয়ে থাকায় এ শাখা বিলুপ্ত হয়ে যায়। হামিদ রাজা চৌধুরীর ত্রয়োদশ পুরুষে ছিলেন সাত সন্তান। এরা হলেন-(১) ফজিরা খাতুন, (২) নসরত রাজা চৌধুরী ওরফে উমরা মিয়া, (৩) আলী রাজা চৌধুরী, (৪) উমেদ রাজা চৌধুরী, (৫) রহমান রাজা চৌধুরী, (৬) সেতারা খাতুন ও (৭) সাজেদা খাতুন। নসরত রাজা চৌধুরী ওরফে উমরা মিয়া এ বংশে একজন প্রতিপত্তিশালী জমিদার ছিলেন। আফসারুন্নেসা ও পাসা খাতুন নামে তাঁর দুই মেয়ে ছিলেন। আলী রাজা চৌধুরীর চতুর্দশ পুরুষে একমাত্র পুত্র ছিলেন গোলাম মোস্তফা চৌধুরী। গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর পঞ্চদশ পুরুষে একমাত্র মেয়ে ছিলেন আশরাফুন্নেছা। ফলে এ শাখাও বিস্তার লাভ করতে পারেনি। উমেদ রাজা চৌধুরী, আসফুর রাজা চৌধুরী ও মহিবুর রাজা চৌধুরীর বংশধররা আজও বিদ্যমান আছেন।
দশম পুরুষে মসনদ খানের ছিলেন চার পুত্র সন্তান। এরা হলেন (১) শেহের উল্লাহ, (২) সাইফ উল্লা, (৩) সাদ উল্লা ও (৪) সুলতান মোহাম্মদ। এদের মধ্যে শেহের উল্লা ও সাদ উল্লা ছিলেন নি:সন্তান। সাইফ উল্লা এর ছিলেন তিন পুত্র সন্তান। এরা হলেন একাদশ পুরুষে কাবিল মোহাম্মদ, জান উল্লা এবং আজিজ উল্লা। এদের মধ্যে শুধু জান মোহাম্মদের দ্বাদশ পুরুষে এনায়েত উল্লা নামে একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন। অপর দু’জনের কোন বংশধর ছিলেন না। এনায়েত উল্লাহর ত্রয়োদশ পুরুষে ছিলেন চার পুত্র সন্তান। এরা হলেন (১) আব্দুস সামাদ, (২) আব্দুল কাদির (৩) হাফিজ আব্দুর রহিম ও (৪) আব্দুল্লাহ। এদের মধ্যে শুধু হাফিজ আব্দুর রহিমের ছিলেন চতুর্দশ পুরুষে তিন পুত্র সন্তান। এরা হলেন (১) আব্দুল মুকিত, (২) আব্দুল মুমিত ও (৩) আব্দুল মুহিত। এদের বংশধররা আজও বিদ্যমান আছেন। অপরপক্ষে সুলতান মোহাম্মদের ছিলেন একাদশ পুরুষে রওশন মোহাম্মদ ও নাসির মোহাম্মদ নামে দু’পুত্র সন্তান ছিলেন। এরা উভয়েই নি:সন্তান থাকায় এ শাখাও বিলুপ্ত হয়ে যায়।
হযরত শাহদাউদ কুরায়শির(র.) বংশ-তালিকা পুস্তকের শেষাংশে সন্নিবেশিত হয়েছে। এ বংশ-তালিকা ফারসি ভাষায় তাঁর বংশধর হাফিজ আব্দুর রহিম তাঁর জামাতা তুড়ুকখলা নিবাসী দাউদিয়া জি ইউ মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আতিকুল হকের কাছে রেখে মারা যান। পরবর্তীতে শাহদাউদ কুরায়শির পঞ্চদশ বংশধর রাযী উদ্দিন কুরায়শি মাওলানা আতিকুল হক সাহেব থেকে উপরোক্ত ফারসি তালিকাটি বাংলায় অনুবাদের জন্য ফেরৎ দেয়ার শর্তে আনেন এবং একজন অভিজ্ঞ মাওলানা দ্বারা অনুবাদ করে আতিকুল হকের কাছে ফেরৎ দেন। এ বইয়ে উল্লেখিত ত্রয়োদশতম বংশ তালিকা পর্যন্ত ফারসিতে রচিত এ বংশ তালিকা। আমরা রাজী উদ্দিন কুরায়শির কাছে এজন্য কৃতজ্ঞ। এই বংশলতিকাকে লিখিত আকারে নিয়ে আসি আমি কবি লেখক ব্লগার ও ব্যাংকার চৌধুরী ইসফাকুর রহমান কুরায়শি। চিত্রঃ কবি লেখক ব্লগার ও ব্যাংকার ইসফাক কুরেশি
হযরত শাহদাউদ কুরায়শির(র.) বংশ-তালিকা পুস্তকের শেষাংশে সন্নিবেশিত হয়েছে। এ বংশ-তালিকা ফারসি ভাষায় তাঁর বংশধর হাফিজ আব্দুর রহিম তাঁর জামাতা তুড়ুকখলা নিবাসী দাউদিয়া জি ইউ মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আতিকুল হকের কাছে রেখে মারা যান। পরবর্তীতে শাহদাউদ কুরায়শির পঞ্চদশ বংশধর রাযী উদ্দিন কুরায়শি মাওলানা আতিকুল হক সাহেব থেকে উপরোক্ত ফারসি তালিকাটি বাংলায় অনুবাদের জন্য ফেরৎ দেয়ার শর্তে আনেন এবং একজন অভিজ্ঞ মাওলানা দ্বারা অনুবাদ করে আতিকুল হকের কাছে ফেরৎ দেন। এ বইয়ে উল্লেখিত ত্রয়োদশতম বংশ তালিকা পর্যন্ত ফারসিতে রচিত এ বংশ তালিকা। আমরা রাজী উদ্দিন কুরায়শির কাছে এজন্য কৃতজ্ঞ। এই বংশলতিকাকে লিখিত আকারে নিয়ে আসি আমি কবি লেখক ব্লগার ও ব্যাংকার চৌধুরী ইসফাকুর রহমান কুরায়শি। চিত্রঃ কবি লেখক ব্লগার ও ব্যাংকার ইসফাক কুরেশি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন