আমি তখন একসাথে সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও মদন মোহন কলেজে ডিগ্রী অধ্যয়ন করছি, সেই ১৯৮৪ সন হতে ১৯৮৮ সনের মধ্যে কয়েকটি গল্প লিখি। সেই গল্পগুলোর এগারটি এখানে সংযুক্ত করেছি। আমার এক চিরকুমার চাচাতো ভাই ডাঃ এন. এ চৌধুরী(গোলাম নবী) বললেন তার কলেজ জীবনের এক অস্পষ্ট স্মৃতি কাহিনী, তা হতে বেরিয়ে আসলো গল্প ‘সেই মুখ’। ফুফুতো ভাই এবাদত চৌধুরী থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের রড আইল্যান্ড দ্বীপে। তার কাছে উক্ত দ্বীপের বিবরণ শুনলাম এবং সেখানে এই কাহিনীটি জুড়ে দিলাম। পলিটেকনিকের সহপাঠি টিটুর কাছে শুনলাম তাঁর প্রেম কাহিনী, আর তার সহিত রস মিশিয়ে হয়ে গেল ‘প্রেমের মৃত্যু’। এক সহপাঠি ইমরান চৌধুরীর অকাল মৃত্যু সৃষ্টি করলো ‘ঝরা কলি’। সিলেটের এক ফুফুতো বোনের বাসায় অবস্থান করে ইন্টারমেডিয়েট পড়ি। সেই বাসায় কাজের মেয়েটির করুন কাহিনী ‘কাজের মেয়ে কুটিনা’। বরইকান্দিতে রেলওয়ের জায়গায় গড়ে উঠা বস্তিতে মানবেতর জীবন-যাপন কারী দরিদ্র মানুষগুলোর জীবন হতে বেরিয়ে আসা এক কাহিনী ‘বস্তির কুড়েঘরে’। একাত্তুরে শহীদ ও নিখোঁজ হন চাচাতো ভাই শামসুদ্দোহা চৌধুরী। বহু বছর পর তার স্ত্রীর বিয়ে হয় দেবরের সাথে। এক চাচী বললেন এখন যদি শামসু ফিরে আসে। এই ভাবনা হতে সৃষ্টি হয় ‘সাদ্দাম হোসেন ও বঙ্গবধু জরিনা’। পূবালী ব্যাংক লিঃ চৌধুরী বাজার শাখায় বসে শুনা এক ঠগের কাহিনী ‘কাজী মাস্টার’। পাশের বাড়ীর মুকিত আলীর সুন্দরী বউয়ের হিল্লা বিয়ে হয় কাছের গ্রাম তুড়ুকখলায়। হিল্লা বিয়েকারী বুড়ো মুকিতের বউকে তালাক দিতে রাজী নয়। মুকিত আলীর দুঃখ আমাকে রচনা করায় গল্প ‘ভাঙ্গলো শেষে ভূল’। সিলেট শহরের এক উকিল সাহেবের মেয়ের মা-বাবার অনিচ্ছায় পালিয়ে বিয়ে করা নিয়ে রচিত হয় “অন্ধ প্রেম”। একটি হাসির গল্প "রঙ্গি ঝি"। আমার শৈশবে গায়ের গরীব মেয়েরা ছিল অবহেলিত এবং প্রায়ই অসম বয়সী লোকের সাথে বাল্যবিবাহের শিকার হত। এই গল্পে এবিষয়টি এসেছে। আমার পূবালী ব্যাংক বরইকান্দি শাখার লোকজন নিয়ে একদিন রাতারগোল জলাবনে ভ্রমন ও বনভোজন করতে যাই। সাথিদেরে বললাম আমি রাতারগুল জলাবন দেখে এসে একটি গল্প এই বনকে নিয়ে লিখব। কথা রাখলাম, একটি গল্প লেখা হল, যেখানে প্রবীণদের কাছে আমার কৈশরে শোনা ভূতের কাহিনী একত্র করে এক কাহিনীতে সাজিয়ে দিলাম। এমনি করে হয়ে গেল গল্প "রাতারগোলের ভূত"। সমাজে ও প্রতিটি এলাকায় কিছু অতিলোভী দুষ্ট প্রকৃতির দু-একজন লোক দেখা যায়, আমার দেখা এমনই দুজন মানুষের কাহিনী "কৃষ্ণগহ্বর"। আমার এই গল্পগুলো মানুষের হৃদয় স্পর্শ করলে আমি ধন্য হবো।
চৌধুরী ইসফাকুর রহমান কুরায়শী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন