শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৬

সেনাপতি সিকন্দর শাহ গাজী ও সৈয়দ নাসির উদ্দিন


                             চিত্রঃ লেখক কবি ও ব্লগার ইসফাক করেশী


সিকন্দর শাহ গাজি নামক একজন যুবরাজ ও সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার নামক একজন সেনাপতি সহযোগে হজরত শাহজালাল(রঃ) সিলেটে আসেন। 
প্রথম ব্যক্তি সিকন্দর শাহ গাজি বঙ্গের সুলতান শামস উদ্দিনের ভাগিনেয় ছিলেন। শিলালিপি হতে স্পষ্ট বোঝা যায় শ্রীহট্টের প্রথম মুসলিম অভিযান বাঙ্গালার সুলতান শামস উদ্দিন ফিরোজ কতৃক  প্রেরিত হয়েছিল। সিকন্দর খান গাজি বাঙ্গালার বলবন রাজবংশের একজন যুবরাজ ছিলেন। বলবন রাজবংশের সহিত সংশ্লিষ্ট সিকান্দর গাজির পুরো নাম বাহরাম ইতগীন সিকন্দর সায়ানি। তিনি তার দুই মামা রুকন উদ্দিন কায়কায়ূস ও শামসউদ্দিন ফিরোজের রাজত্বকালে মুসলিম বাঙ্গালা রাজ্যের বিভিন্ন অংশে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তিনি দিনাজপুরের শাসনকর্তা ছিলেন ও ৬৯৭ হিজরিতে দিনাজপুরের সন্নিকটে গঙ্গারামপুরে একটি মসজিদ নির্মান করেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন সংলগ্ন সাতগাঁয়ের মান নৃপতিকে পরাজিত করে উক্ত অঞ্চল মুসলিম বাঙ্গালা  রাজ্যের অন্তভুক্ত করেন। তিনি ৭১৩ হিজরি পর্যন্ত সাতগাঁয়ের নিকটবর্তী ত্রিবেনীতে অবস্থান করেন ও ৬৯৮ হিজরিতে সেখানে একটি মসজিদ নির্মান করেন। এই সিকন্দর খান গাজী প্রথমে শ্রীহট্ট ও তৎপর তরফ জয় করে এর শাসনভার সেনাধ্যক্ষ সৈয়দ নাসির উদ্দিনের হাতে অর্পন করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাঙ্গালায় চলে যান।মুফতি আজহার উদ্দিন সিদ্দিকির মতে মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিলেট হতে সাতগাঁয়ে ফিরে যান এবং তাঁর সহকর্মী সিকান্দর শাহ গাজির সমাধী পার্শে চিরনিদ্রায় শায়িত হন। অনেকে মনে করেন সৈয়দ নাসির উদ্দিন(রঃ) তরফে মারা যান এবং হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার মুড়ারবন্দে চিরশায়িত হন। অনুমিত হয় তিনি সিলেট ও বাঙ্গালার বিভিন্ন স্থানে বহুবিয়ে করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বংশধরেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। চৌকিদেখিতে লাশের চৌকি বা খাটিয়া হতে সৈয়দ নাসির উদ্দিনের(রঃ) লাশ গায়েব হয়ে যাবার কিংবদন্তিও সিলেটে প্রচলিত রয়েছে। তাই জায়গাটির নাম হয়েছে চৌকিদেখি।  
 
       চিত্রঃ সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিপাহসালারের(রঃ) মাজার, মুড়ারবন্দ, চুনারূঘাট, হবিগঞ্জ।

সূত্র: শ্রীহট্টে ইসলামের জ্যোতি- মুফতি আজহার উদ্দিন সিদ্দিকি। "বাংলার মুসলিম ইতিহাস"- ডঃ আব্দুল করিম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন