সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৬

লোসাই পাহাড় জন্ম আমার


লোসাই
পাহাড় জন্ম আমার

লোসাই পাহাড় জন্ম আমার নিরব নিরালায়,
পাহাড় ঘেরা মানববিহীন অচীন ঠিকানায়।
জন্মভূমে পদযাত্রায় বরাক আমার নাম,
আঁকা বাঁকা লক্ষ পাহাড় সারাটা ডানবাম।

বন্য প্রাণী, বাঘ হরিণ, জল করে মোর পান,
বিবসনা পাহাড়ি মেয়ে করে সেথায় স্নান।
 আসামের পাহাড় ভূমে আমার আদিবাস,
চঞ্চলা এক কিশোরী আমি সেথায় বারমাস।

ছল, ছম্, ছম্, ছুটি আমি সমতলের খোঁজে,
ভেঙ্গে শত পাহাড় টিলা, চক্ষু বুজে বুজে।
মনীপুরের পাহাড় বেয়ে হঠাৎ নামি নিচে,
চাহিয়া দেখি বনবনানী আছে মিলে মিশে।

মনীপুর আর নাগাপাহাড় পথে পৃথক করে,
ছুটে যাই মনীপুর ও কাছাড়ের সীমারেখা ধরে।
বরাক নামে বাল্য কৌশর, দৌড়ে করে পার,
ভরা যৌবনে বাংলাদেশ জয় হল আমার।

এই জয় আমার ভালোবাসার জয়,
আসাম বাংলার মিলন স্মৃতি অমর হয়ে রয়। 
আমলসিদে জাগলো আমার মাতৃত্বের স্বাধ,
জমজ দুটি মেয়ে হলো মিঠলো মনের স্বাধ।

খুশী হয়ে নাম রাখিলাম সুরমা, কুশিয়ারা,
পুণ্যভূমে দান করে মন সুখে আত্মহারা।
সুরমা আমার ধূয়ে দিলো, জালাল বাবার পা,
কুশিয়ারা সেজে গেল হাকালুকির মা।

একশত ভাগ ধন্য আমার সুরমা-কুশিয়ারা,
এমন একজন মা হয়ে মোর গর্বে বুক ভরা।
মার্কুলিতে দু’বোন মিলে আবার গলাগলি,
‘ভেড়ামোহনা’ নামে লোকে উঠলো তখন বলি।

ভৈরবে ব্রহ্মপুত্র তিতাস এসে জড়িয়ে ধরে বুক,
জলস্ফীতি দেখে ‘মেঘনা’ বললো হাজার লোক।
চাঁদপুরেতে পদ্মা এসে মিলিয়ে দিলো গা,
দু’জন মিলে সাগর পানে বাড়িয়ে দিলাম পা।

 সীমান্তহীন জলরাজ্যে  যাত্রা হলো শেষ,
বঙ্গপোসাগর  তখন হলো আমার দেশ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন