শনিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৬

দক্ষিণের বাড়ী


 চিত্রঃ কবি লেখক ব্লগার ও পূবালী ব্যাংকার চৌধুরী ইসফাকুর রহমান কোরায়শি
আব্দুস
সালাম চৌধুরী
দাউদ কুরায়শীর চতুর্দশ বংশধর আব্দুস সালাম চৌধুরী একজন প্রখ্যাত জমিদার ছিলেন তাঁর দুই পুত্রঃ আব্দুল হাই চৌধুরী  ডাঃ আব্দুল হক চৌধুরী তাঁর চার কন্যাঃ () আজিজুন্নেসা () জোবেদা খাতুন () সালেহা খাতুন ও () কলাই বিবি
. আব্দুল হাই চৌধুরী
আব্দুল হাই চৌধুরীর ডাকনাম আক্তার মিয়া। তিনি ১৯১৬ সালে দাউদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পত্নী রফিকুন্নেছা চৌধুরীর বাড়ি সাং গোপাল, টুকেরবাজার, সদর উপজেলা সিলেট। তার তিন পুত্র (১) আলমগীর দাউদ কুরায়শী (২) আব্দুল আলীম কুরায়শী (৩) সেলিম কুরায়শী এবং তিন মেয়ে (১) নুরুন্নেছা (২) কাম্রুন্নেছা সেবু (৩) রুবাইয়া চৌধুরী। তিনি ১৯৬৪ সালের ২৩ এপ্রিল ৪৮ বছর বয়সে দাউদপুরে মারা যান। 
. আলমগীর কুরায়শি
আলমগীর কুরায়শীর জন্ম ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ সাল। তিনি রেঙ্গা হাইস্কুল হতে মেট্রিক পাশ করে তরুণ বয়সে যুক্তরাজ্যে চলে যান এবং Mary Manns নামক এক ব্রিটিশ মহিলাকে বিবাহ করেন যুক্তরাজ্যে তাঁর রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ছিল বর্তমানে তিনি সিলেটের ঈদগাহে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি ্দুই পুত্র ও দুই কন্যার জনক। তাঁর পুত্ররা (১)  Shilip Qurashi (২) Cliford Qurashi এবং কন্যারা (১) Rajmin Qurashi (২) Rani Qurashi. তাঁরা সবাই যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।  
. আব্দুল আলীম কুরায়শি
আব্দুল আলীম কুরায়শীর ডাকনাম শাহজাহান। তিনি ১৯৪৮ সালে দাউদপুরে জন্মগ্রহণ করেন এবং বি.কম পাশ করে চট্টগ্রামে ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি বিয়ে করেন কুলাউড়ার কৌলা গ্রামের খুসু চৌধুরীকে। খুসু চৌধুরী আমার কানিহাটি হাজিপুরের ফুফুতো বোন সালমা চৌধুরী ও খোরশেদ আলম চৌধুরীর কন্যা। তাঁরা বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বসবাস করছেন। তাঁদের তিন কন্যা (১) বানী কুরেশী (২) কলি কুরেশী এবং (৩) তুলি কুরেশী।  
. সেলিম কুরায়শি
সেলিম কুরায়শি ১৯৫৬ সালে দাউদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রকলায় এম. পাশ করে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ব্যবসা রত ছিলেন তিনি একজন দক্ষ কারু ও চিত্রশিল্পীসেলিম কুরেশি বড়লেখার আকল মিয়া চৌধুরীর কন্যা সোহেলী চৌধুরীকে (গ্রেজুয়েট) বিয়ে করেন। তাদের এক পুত্র নিশান কুরেশি  এক কন্যা জয়া কুরেশি তিনি সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন এবং ২০২০ খ্রিস্টাব্দে টেক্সাসে মারা যান ও সেখানে চিরশায়িত হন।
                               চিত্রকর্মঃ শিল্পী সেলিম কুরায়শি
১. ৪ নুরুন্নেছাঃ 
তার জন্ম দাউদপুরে ১৯৪৪ সালে। ভাদেশ্বর পূর্বভাগের সফিকুর রহমান চৌধুরীর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। সফিকুর রহমান চৌধুরী ২০১২ সালে মারা যান। তাঁদের চার পুত্র ১) ফয়সল চৌধুরী ২) অপু চৌধুরী ৩) টিপু চৌধুরী ও ৪) তারেক চৌধুরী। তাঁদের চার কন্যা ১) রুহি চৌধুরী ২) পপি চৌধুরী ৩) দিপা চৌধুরী ও ৪) জেনি চৌধুরী। তদের বাসা সিলেটের ঈদগায়। বর্তমানে তাঁরা লন্ডন ও ক্যানাডা প্রবাসী।
১ . ৫ কামরুন্নেছা সেবুঃ
তাঁর জন্ম দাউদপুরে ১৯৫০ সালে। মৌলভীবাজার জেলার বুদ্ধিমন্তপুর গ্রামের সৈয়দ আজিজুর রব চৌধুরীর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের এক পুত্র ১) রাজু চৌধুরী এবং দুই কন্যা ১) লিনা চৌধুরী ২) লিজা চৌধুরী
১ . ৬ রুবাইয়া চৌধুরীঃ
তাঁর জন্ম দাউদপুরে ১৯৬০ সালে। হবিগঞ্জ জেলার পিয়াইন নিবাসী এডভোকেট মারুফ উদ্দিন চৌধুরীর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের তিন পুত্র ১) রুমেল ২) কামেল ৩) হিমেল এবং একমাত্র কন্যা সুমাইয়া চৌধুরী।  
. ডাঃ আব্দুল হক চৌধুরী
তিনি ১৯২৮ সালে দাউদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সিলেট সরকারি পাইলট স্কুল থেকে ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মেট্রিক ও ১৯৪৬ সালে মুরারি চাঁদ কলেজ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে বিঞ্জানে আই এস সি পাশ করেন। 
তারপর আসামের ডিব্রগড় মেডিকেল স্কুলে অধ্যয়নকালে দেশবিভাগ হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তান এসে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাশ করেন 
তিনি সরকারি চাকুরিতে যোগদান করে কিছুদিন থানা মেডিকেল অফিসার হিসেবে গোলাপগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ও চিফ মেডিকেল অফিসার হিসাবে ছাতকে দায়িত্বপালন করেন পরবর্তীকালে সরকারি চাকুরি ছেড়ে দেন 
তিনি সহজ সরল মহৎ ব্যক্তি ছিলেন। তার টাকা উপার্জনের তেমন আগ্রহ ছিলনা এবং মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে চিকিৎসা সেবা দিতেন। তিনি অর্থকে ধ্যানঞ্জান করে চিকিৎসক হননি। সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে তিনি কাজিটুলায় একটি সাদামাটা বাড়ি করেন। এই বাড়িতে চেম্বার সাজিয়ে তিনি রোগি দেখতেন।
তিনি সিলেট শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার ছিলেন 
তিনি ছিলেন অমায়িক, সেইসাথে মৃদুভাষী ও মিষ্টভাষী। তাঁর মুখে সব সময় লেগে থাকত অনুপম হাসি। তিনি কখনও রাজনীতি করতেন না। কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলেন না। তবে তিনি ছিলেন রাজনীতি সচেতন ও মনেপ্রাণে একজন অসম্পদায়িক লোক। তাঁর জীবনে কোন চাকচিক্য ছিলনা, আড়ম্বরহীন অতি সাধারণ জীবন যাপন করে গেছেন তিনি। চিকিৎসা পেশা নিয়ে নীরবে নিঃশব্দে তিনি সমাজে বিচরণ করেছেন, মানুষের সেবা করে গেছেন।     
তিনি ২০০১ সালের  ৩১ জানুয়ারি তিয়াত্তর বছর বয়সে কাজিটুলার নিজবাসায় ইন্তেকাল করেন দাউদপুরে তার প্রতিষ্ঠিত শাহদাউদ কুরেশী(রঃ) হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। 
রনকেলী গ্রামের শিল্পপতি ব্যবসায়ী অজিউদ্দিন চৌধুরী (লতমিয়া) এবং ডঃ এস.ডি চৌধুরীর (প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর, ময়মনসিংহ  কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়একমাত্র বোন নিরা চৌধুরীকে  তিনি বিয়ে করেন। চাচি নিরা চৌধুরী বলতেন আমার মা আসমতুন্নেসা ও তিনি এক সাপ্তাহের ব্যবধানে বধু সেজে দাউদপুরের প্রতিবেশী দুই বাড়িতে আসেন। কাজেই আব্দুল হক চৌধুরীর সাথে তাঁর বিয়ে হয় ১৯৫৪ সালের মার্চে। নিরা চৌধুরী ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজিটুলায় মারা যান ও বাপের বাড়ি রনকেলীতে চিরশায়িত হন।
ডাঃ আব্দুল হক চৌধুরীর একমাত্র পুত্র এহসানুল হক চৌধুরী সমাজ বিজ্ঞানে অনার্সসহ এম.এস.এস পাশ করেন। তিনি সাউথইস্ট ব্যাংকে উচ্চপদে চাকুরিরত ছিলেন তিনি শাহ তাজ উদ্দীন কুরায়শির বংশীর দিনারপুর সদরঘাটের দেওয়ান এখলাছ গাজীর কন্যা ফাতেহা গাজী (বি.) কে বিয়ে করেন এহসানুল হক চৌধুরী ১৪ মে ২০১০ সালে তিন কন্যা এক পুত্র রেখে অকালে মৃত্যুবরণ করেন ও দাউদপুরে পিতার পাশে চিরশায়িত হন। 
৩ জোবেদা খাতুন চৌধুরীঃ
আব্দুস সালাম চৌধুরীর দ্বিতীয় কন্যা জোবেদা খাতুনের বিয়ে হয় বরায়া পরগনার রফিপুর গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম মুহিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে চাঁদ মিয়া। জোবেদা খাতুন চৌধুরী ১৯৪৯ সালে পরলোকগমন করেন। তাঁর তিন পুত্র ১) ফারুক আহমদ চৌধুরী ছিলেন রাজনৈতিক ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি প্রাক্তন পরিচালক পূবালী ব্যাংক লিমিটেড। ফারুক আহমদ চৌধুরীর একমাত্র পুত্র ফাহিম আহমদ ফারুক চৌধুরী রবিন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং বর্তমানে পূবালী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান।

         পারিবারিক ছবিঃ ফারুক আহমদ ফাহিম চৌধুরী (বামে)।
২) ইকবাল আহমদ চৌধুরী এম এস সি, এল এল বি (এডভোকেট) চেয়ারম্যান গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। চেয়ারম্যান নর্থইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও পরিচালক নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড সার্ভিসেস। তাঁর দুইপুত্র আসিফ ইকবাল ও আরিফ ইকবাল তরুন বয়সে অকালে মারা যান।
                   চিত্রঃ ইকবাল আহমদ চৌধুরী
৩) মারুফ আহমদ চৌধুরী। তিনি একজন বৃটিশ নাগরিক। 
জোবেদা খাতুনের চার কন্যা ১) আয়শা খাতুন চৌধুরী শিরি জজে সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী সাং বালাউট, জকিগঞ্জ। ২) আনোয়ারা খাতুন জজে আব্দুর রহিম চৌধুরী সাং ইসবপুর, ওসমানীনগর। ৩) আসমা খাতুন জজে আব্দুল মুয়িদ চৌধুরী ফুলবাড়ি উচাবাড়ি, গোলাপগঞ্জ।
৪ আজিজুন্নেছা চৌধুরীঃ
দাউদপুর পশ্চিমবাড়ির কমর উদ্দিন চৌধুরীর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর দুই পুত্র (১) মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী (২) মইন উদ্দিন চৌধুরী (আঞ্জির মিয়া)  ও তিন কন্যা (১) ছাকিয়া খাতুন (২) মরিয়ম খাতুন (৩) জাহানারা খাতুন। তিনি ১৯৭৩ সালে দাউদপুরে মারা যান।
৫ সালেহা খাতুন চৌধুরীঃ        
সিলেটের দরগামহল্লা মুফতি বাড়িতে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর একমাত্র কন্যা মুফতি আসকরি খানমের বিয়ে হয় হবিগঞ্জের লস্করপুর গ্রামে।
৬ কলাই বিবিঃ
তাঁর বিয়ে হয় গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ি গ্রামে। তাঁর কন্যা কাচন খানমের সাথে বরায়া রফিপুর গ্রামের মুহিবুর রহমান চৌধুরীর বিয়ে হয়।    

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন