শ্বেত ভল্লুক

কবি লেখক ব্লগার ও ব্যাংকার ইসফাক কুরেশী

শ্বেত ভল্লুক

১

ইসকুল হতে বিতাড়িত আমি, অবোধ এক শিশু,

এই আফ্রিকা, জন্মভূমে নাই রে আমার কিছু।

তাড়িয়ে দিলো ওরা, আমার রঙ নাকি কালো,

গাত্রবর্ণ শকুনের গলা, হলেই যেন ভালো।

প্রতিদিন কত মানবশিশু দুর্ভাগা এই দেশে,

শ্বেত ভল্লুক মারধর করে ন্যাড়াকুত্তার বেশে।
এই যদি হয়, হে মহান স্রষ্টা বিচার তোমার,

কালো রঙ্গ গাত্রে জন্ম কেন ঘটালে আমার।

২

মানবসভ্যতা জন্ম দিয়েছে একই বাপ-মায়।

আদম ও হাওয়ায়।
কালোরাও মানুষ, একই বিধাতার সৃষ্টি, 

বর্ণবাদীরা, মানতে চায় না কেন হায় ?

৩
হায়রে সভ্য, হায়রে ভদ্র, হায়রে ধবলের দল,

অস্ত্রের মুখে আর কত বর্ণবাদ রাখবে সচল।

তোমরা শুধু বর্ণ দেখেছ, ভিতরে দেখনি কিছু,

গর্বের ভূত অশরীরি ঘুরে দুধাঙ্গের পিছু পিছু।

চর্মকালো বলে রক্ত মোদের আদৌ কালো নয়,

এই রক্তের প্লাবন বহায়ে একদা আনবো জয়।

৫

নিগ্রো রক্তের লাল প্রবাহ ক’দিন বহাবে আর,

মুক্তিসংগ্রাম, সারা আফ্রিকায় দুর্দান্ত দুর্বার।

এখনো শোন, জেনে রাখ, রক্ত মোদের লাল,

আমরাও মানুষ, মোদেরে পিষ্ট করবে কতকাল।

৬

একদিন এই রক্তের বন্যায় সারাদেশ যাবে ভেসে,

সব ফটক বন্ধ হবে, মৃত্যু দেখবে পাশে।

খুনী বোথা তোর বিষাক্ত ছোবল এখনই বন্ধ কর,

নইলে এই আফ্রিকা রচিবে বর্ণবাদের কবর।

রচনাকালঃ 

১৯৮৪ সাল।

 দক্ষিণ আফ্রিকার সংখ্যাগুরু কালো জনগণ নেলসন মেন্ডেলার নেতৃত্বে তখন শ্বেত অধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মরণপন লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। এই কবিতায় কালোদের সেই মুক্তিসংগ্রামের ছায়া পড়েছে।