আমি মধুস্বপ্ন দেখিতেছি তোমার,
ওগো দুঃখিনী, ওগো রূপসিনী, ওগো হৃদয়হরিণী,
আমার পরাণের ভাবাবেগ, আমার বাংলাদেশ।
তুমি কেন, কোনদিন, হাসতে না পারো?
তুমি কেন, কোনদিন, জাগতে না পারো?
তোমার বুকেতে কেন সদা অন্নাভাব?
তোমার বুকেতে কেন এত কান্নাভাব?
তুমি কি দেখবে চেয়ে নিরন্ন মানুষের হাহাকার,
দেখবে কি সদা কোটি কোটি ভিখারী কংকালসার?
তোমার বুকেতে কেন ফুটবে না গোলাপের হাসি,
মজলুমের কান্না কেন বাজাবে না বিপ্লবের বাঁশী?
একাত্তুরে, আজি হতে বহুবর্ষ আগে,
তোমার সাড়ে সাত কোটি ছেলেমেয়ে জাগে,
ধরেছিল রাইফেল, হেনেছিল আঘাত,
স্বাধীনতার সূর্য এসে ঘটেছিল রঙিন প্রভাত,
তোমার সন্থানরা সেদিন করেছিল প্রমাণ-
“অস্ত্রের ঝংকার নয়, শক্তির হুংকার নয়,
নয় দুশমনের উদ্যত হিংস্র কামান।
ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালির রক্তই তোমার প্রাণ।”
সেইদিন ছিল মুক্তিসেনার বজ্র শপৎ,
সোনার বাংলা গড়ার আশার ভবিষ্যৎ।
সত্য সুন্দর ন্যায়তন্ত্রের মহান স্বপ্নালোক,
তিরিশ লক্ষ শহিদের উম্মোচিত বুক।
সব সাধনা ব্যর্থ আজ দুঃখী বাংলাদেশে,
বাংলা আমার পড়ে রলো তলাবিহীন বেশে।
বাঙ্গালিদের স্বপ্ন সব, নিদমহলে রলো,
পূর্ণচাঁদ নেই আকাশে, কেন এমন হলো?
জানি না কবে আসবে দেশে সুখের সোনাদিন,
দুঃখের আর্তনাদ চিরতরে হবে নিশ্চিন।
দুঃখিনী মায়ের বুকে আসবে জাগরণ,
চাপাকান্না বন্ধ হয়ে হবে, এসে শুভক্ষণ।
থেমে যাবে ফুটপাতে বিভৎস্য মানুষের ভিড়,
জনতার বুকে, বর্ষিত হবেনা আর দুঃখের তীর।
রচনাকালঃ ১৯৮৩ সাল, রেঙ্গা দাউদপুর, সিলেট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন