আমার ছাদের কার্নিশে বাস করেন
জনকয়েক চড়ুই দম্পতি।
ওদের ক্লান্তি নেই ,শ্রান্তি নেই,
শান্তি নেই, স্বস্থি নেই।
নেই কোন অবসর অবকাশ।
বারবার লেজ আর ডানার ঝাপটা।
চঞ্চল পায়ের লাফালাফি,
অঙ্গে অঙ্গে অবিরাম সঙ্গম।
এইতো ওদের জীবন
এইতো জীবন।
এ জীবন কামের উচ্ছল নেশা, মিলনের উদ্দাম উল্লাস।
আর ... ... ...
হায়রে জীবন
হায়রে মানব জীবন
এখানে জটলা বেঁধেছে যতসব সংস্কার,
নিয়ম কানুন আর আইনের লৌহবন্ধন
সিফিলিস গনরিয়া মৃত্যুবান এইডস।
ওদের তো জীবনে নেই
আমাদের মত কোন
জীবনের দাবী সমাজের দাবী।
পরিবারের দাবী নৈতিকতার দাবী।
ধর্মের শরীরে মহান আল্লার লালচোখ
অন্যথায় পাঠিয়ে দেয়া তার
প্রাণঘাতি পতনের বিষাক্ত জীবাণু।
ওদের আছে শুধু একটি মাত্র দাবী,
সেটা ভোগের দাবী মিলনের দাবী।
ওরা চিরমুক্ত, ওরা চিরস্বাধীন
ওরা নয় কোন মানবিক আইনের অধীন।
ওদের সারা জীবন তাই
আদিম আনন্দের উম্মাতাল ঢেউ।
বন্যদের ভালবাসা আমাকে মাঝে মাঝে
যন্ত্রনা দেয়
যন্ত্রনা দেয়
দুঃখ দেয় পীড়া দেয়,
প্রাণে আনে ঈষা
চোখে আনে জল,
হাহাকারে ভরে ওঠে মন।
আহাঃ শিমি আর আমি
হতে যদি পারতাম
এমন দু’টি
চিরমুক্ত চিরচঞ্চল
চির অস্থির চির উম্মন
সমাজহীন সংস্কারহীন
জিঞ্জিরহীন বন্ধনহীন
চিরসুখী এক চড়ুই দম্পতি।
উজ্জ্বল দুপুরে
শীতের শিশিরে
সন্ধ্যার মেঘে ভেজা বাতাসে
শঙ্কাহীন বন্ধনহীন শৃংখলহীন
সুন্দর এ সুবিশাল পৃথিবীর গায়
উড়তাম ঘুরতাম, ফিক ফিক করে হাসতাম
শিমি আর আমি
একেবারে সাগরের উদ্দাম বাতাসের মতন।
আমি আর শিমি,
কাটাতাম সারাক্ষণ পরস্পর অধর ওটের বন্ধনে।
প্রতি অঙ্গে প্রতি অঙ্গ করে জড়াজড়ি,
জৈবিক কামের পাত্র দুহাতে শক্ত ধরি।
জীবন সিন্ধুর কুলহীন নীল জলে,
সাঁতরায়ে ডুবতাম শিমির আঁচলে।
রচনাকালঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন