ইদানীং প্রায়ই আমি মাতাল হই,
নিজেকে হারাই মধুমাখা স্বপ্নের দেশে।
সুন্দরবনের সবুজ ছায়ায়,
সুন্দরী বৃক্ষের নির্জনতায়,
নদী ও খালের নীরব কিনারায়।
মাতলামীর ঘোর লাগে চোখে
চেয়ে দেখি-
চেয়ে দেখি-
গলায় বনফুলের মালা পরে
এক রূপসী বনপরী এসে
বসে আছে এক বৃক্ষ ডালে
আমারই মুখোমুখী।
অরণ্যের এ অচিন বনপরী,
এসেই আমার মন করে চুরি।
এসেই আমার মন করে চুরি।
যাদুর মন্ত্রবলে বন্দী করে আমায়,
তার মনের আঙ্গিনায়।
মনের গিট্ট খুলতে যাই হুজুরের ঘর,
ফু দিয়ে বললেন হুজুর
হয়েছে আমার নাকি পরীর আসর।
মনের গিট্ট খুলতে যাই হুজুরের ঘর,
ফু দিয়ে বললেন হুজুর
হয়েছে আমার নাকি পরীর আসর।
আমার সুতীক্ষ্ম আর্তনাদ-
তুমি কি যাদু করলে আমায়,
তোমাকে ছাড়া প্রাণ যায় যায়
মাটির এ ধরায়।
এসো তুমি এসো
আমার সন্নিকটে প্রাণের পরশে
আমার দু’বাহুর সুনিবিড় বন্ধনে
হৃদয়ের সুকোমল ঠিকানায়।
তা না হলে বাধ্য হবো আমি তোমাকে হত্যায়।
গোলী করে ভুলুন্ডিত করিবো তোমার লাশ,
এই হবে আমার সঠিক প্রতিশোধ।
তুমি কি আমার প্রতিশোধের অধীর অপেক্ষায়?
তবে
তোমার নিস্প্রাণ দেহ দিয়ে কী করবো আমি
কী দিয়ে ঢাকবো এ লাশ, লুকাবো কোথায়?
তোমার লাশের যে আমার নেই প্রয়োজন;
তরতাজা তুমি যে আমার শুধু প্রয়োজন।
তোমাকে খুন করে কেন আমি
তাহলে হতে যাবো ফাঁসীর আসামী?
তোমাকে খুন করে কেন আমি
তাহলে হতে যাবো ফাঁসীর আসামী?
বুনোপরী অচেনাকে করে না বিশ্বাস,
পায়ে পড়ি তবু তার চোখে অবিশ্বাস,
লালপরীর শক্ত মন, স্বপ্রতিভ উত্তর,
পুরুষ মিথ্যাবাদী
পুরুষ ছলনাময়ী
পুরুষ ছলনাময়ী
গোপন শিকারী।
ধূর্ততার জালে ফেলে
লোহার পিঞ্জিরায় বন্দি করে
খেলার নগ্ন পুতুল বানায় নারীকে।
সেই নারী আর এই মুক্ত বনে,
পাগলা বাতাসে এই উদাস আকাশ তলায়,
সুন্দরী কেওড়া গেওড়ার সুদৃশ্য ডালে ডালে,
বিচিত্র ফুলের কুঞ্জে কুঞ্জে,
হাসি-গান-খেলা-প্রেমের স্বাধীন রঙ্গমঞ্চ,
রচিতে পারবনা জীবনে আর কোনদিন।
আমি যে সুন্দরবনের স্বাধীনা বনপরী।
নাছোড় বান্দা আমি বার বার ডেকে বলি
আমি যে সুন্দরবনের স্বাধীনা বনপরী।
নাছোড় বান্দা আমি বার বার ডেকে বলি
“ওগো আমার হৃদয়ের বন-হরিণি,
মাতাল বনের নায়িকা আমার
মন মাতানো নর্তকী আমার
আমার জীবনের স্বপ্নের ধন।
তুমি আর ‘না’ বলনা প্রিয়ে,
তোমার ‘না’ নামক শব্দটি
বর্শার ধারালো ফলার মত
মেশিনগানের বুলেটের মত
মহাভারতের বীরদের নিক্ষিপ্ত ত্রিশুলের মত
সজুরে বিদ্ধ হয়,
সজুরে বিদ্ধ হয়,
গেঁথে যায় আপাদমস্তক আমার কলিজায়,
এই বিষবান ‘না’।
আমার হৃদয় বিদীর্ণ হয়,
এবুকটা হয়ে যায় এফুড়- ওফুড়।
এই বিষবান ‘না’।
আমার হৃদয় বিদীর্ণ হয়,
এবুকটা হয়ে যায় এফুড়- ওফুড়।
প্রিয়া, তোমার প্রাণঘাতি ভাইরাস "না"
এক নিষ্পাপ মানব সন্তানকে আকালে মেরে ফেলবে,
আর সেই মৃত্যুর জন্য ষোল আনা দায়ী হবে তুমি।
জানি আমি আত্মহত্যা মহাপাপ;
জেনেশুনে এই পাপ করতে পারবনা আমি।
কিন্তু তোমার ‘না’ নামক বিষাক্ত বুলেটে
বক্ষ ঝাঁঝরা হতে হতে আমি
মজনু ,ফরহাদ, চন্ডিদাস, দেবদাস হয়ে
বিশ্বের শতসহস্র বিরহীর মতন
নি:শেষ হয়ে যাব
নি:শেষ হয়ে যাব
মুছে যাব চিরতরে
বিশ্বের পাতা হতে
লোকারন্যের ভীড় হতে
তারপর কোনদিন দেখবেনা পৃথিবীতে আমাকে আবার।
রচনাকালঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।
রচনাকালঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন