১
জইফ বৃদ্ধ কংকালসার অঙ্গ নিয়ে,
সুরমাপারে আছি দাঁড়িয়ে,
আমি,
আমি,
শ্মশানঘাটের প্রবীণ বট -মহাশয়।
টিকে থাকার অদম্য উৎসাহে,
কত ঝড়-বৃষ্টি, বজ্র-ভাঙ্গন সহে,
আমি,
হয়েছি শতায়ু , করেছি শতবর্ষ জয়।
টিকে থাকার অদম্য উৎসাহে,
কত ঝড়-বৃষ্টি, বজ্র-ভাঙ্গন সহে,
আমি,
হয়েছি শতায়ু , করেছি শতবর্ষ জয়।
২
অনেক যন্ত্রণা জীবনে আমার,
অনেক জিজ্ঞাসা জগতে আমার।
অনেক যন্ত্রণা জীবনে আমার,
অনেক জিজ্ঞাসা জগতে আমার।
আমি কেন হাঁটতে পারিনা?
কাঁদতে জানিনা? হাসতে পারিনা?
আমার কেন ভাষা নেই ?
কেন আমি নির্বাক?
৩
৩
কোন অপরাধে আমি এত অপরাধী?
সুরমাপারের শ্মশান জেলে বন্দী আমরণ?
পায়ে জিঞ্জির বিনাদোষে সারাটা জীবন।
আমার দুঃখের কথা কেউ যে করেনা শ্রবন।
৪
আমার দুঃখের কথা কেউ যে করেনা শ্রবন।
৪
আজন্ম দেখছি আমি অজস্র শব দহন,
আমার নিয়তি কি তাই?
মানুষের অস্থি মজ্জা ধোঁয়া হয়ে উড়ে যায়,
নিচে পড়ে রয়, মানুষের ছাঁই।
সর্বদাই,
বুকভাঙ্গা মানুষের কান্না শুনে যাই।
সর্বদাই,
বুকভাঙ্গা মানুষের কান্না শুনে যাই।
আমার জন্ম কি পৃথিবীতে দেখিতে তাহাই?
৫
সুরমাপারের আমি এক কবি,
তোমার মন-ব্যথা, ফেলেছি সহজে ধরি।
৫
সুরমাপারের আমি এক কবি,
তোমার মন-ব্যথা, ফেলেছি সহজে ধরি।
হে বৃক্ষ, হে চির দুঃখের শিখণ্ডি।
তোমার দুঃখের খবর, রাখেনা তো কেউ,
কেবল আমিই রাখি।
তোমার ব্যাথার কথা, শুনেনা তো কেউ,
কেবল আমিই শুনি।
কেবল আমিই রাখি।
তোমার ব্যাথার কথা, শুনেনা তো কেউ,
কেবল আমিই শুনি।
৬
মুখাগ্নির করুন দৃশ্য দেখে দেখে গা-সহা সবাই,
শোকে তুমি নির্বাক থাক, আমি গুমরে কেঁদে যাই।
শোকে তুমি নির্বাক থাক, আমি গুমরে কেঁদে যাই।
তোমার দুঃখের জ্বালা বুঝিবার কেউ নাই,
সুরমাপারের কবি আমি, সাথি আছি ভাই।
৭
আমি কবি, তাই বুঝি সবই,
হয়ে গেছি নিরব নিথর ,
হয়ে গেছি নিরব নিথর ,
একেবারে তোমারই মতন,
দেখে দেখে চিতার অগ্নিদহন।
দেখে দেখে চিতার অগ্নিদহন।
শোকে নির্বাক আমি তাই,
কলমের কালি দিয়ে নয়নের জলফেলে যাই।
কলমের কালি দিয়ে নয়নের জলফেলে যাই।
যে জল বর্ষন হয় হৃদয় আকাশ হতে,
যে জলে লিখা হয় খাতা,
রচিত হয়,
রচিত হয়,
এক বিরহের পান্ডুলিপি,
প্রাণের প্রলাপ দিয়া।
হৃদয়ের জমাট বাঁধা মেঘ,
সেখানে ঝরে উছলিয়া।
৬
এই কবি চেয়ে দেখে,
পলক-বন্ধ, অন্তরের চোখে,
একজন নারী এই শ্মশানের জমি,
কবি সেই শ্মশানের স্মৃতি মন্দির।
মন্দিরের কাঁধে চড়ে, মেলে ঠেসমুল,
বিশাল বিস্তার মেলে, বট তুমি স্থির।
৭
শুনো হে আমার বন্ধু বটতরু,
শুনো দিয়া মন।
পৃথিবীতে একই ছকে বাঁধা,
তোমার ও আমার দুঃখের জীবন।
তুমি জ্বলো, আমি জ্বলি, জ্বলে চিতা,
ডালে ডালে পাখিরা করে ভীড়।
দিবানিশি গায় তারা, বিরহের গান,
কোঠরে কোঠরে তারা, বাঁধে সুখ-নীড়।
৮
ঝাঁকে ঝাঁকে এসে পাখি খায় বট-ফল,
ময়না, টিয়া, বুলবুলি, শালিকের দল।
বসন্তে কোকিল ডাকে সুমধুর সুরে,
'বউ কথা কও' গায় সদা, দিনে দুপুরে।
৯
এই পাখিরা হয়, মধুসঙ্গি, তোমার আমার,
গানে গানে, স্বপ্ন জোগায় তারা,
দুঃখের মাঝে বাঁচিবার।
চঞ্চুতে নিয়ে আসে খড়, বাঁধে ঘর-সংসার,
ডিম পাড়ে বাচ্চা ফোটায়,
সাধ জাগায়,
হতাশার মাঝে বাঁচিবার।
রচনাকালঃ
হৃদয়ের জমাট বাঁধা মেঘ,
সেখানে ঝরে উছলিয়া।
৬
এই কবি চেয়ে দেখে,
পলক-বন্ধ, অন্তরের চোখে,
একজন নারী এই শ্মশানের জমি,
কবি সেই শ্মশানের স্মৃতি মন্দির।
মন্দিরের কাঁধে চড়ে, মেলে ঠেসমুল,
বিশাল বিস্তার মেলে, বট তুমি স্থির।
৭
শুনো হে আমার বন্ধু বটতরু,
শুনো দিয়া মন।
পৃথিবীতে একই ছকে বাঁধা,
তোমার ও আমার দুঃখের জীবন।
তুমি জ্বলো, আমি জ্বলি, জ্বলে চিতা,
ডালে ডালে পাখিরা করে ভীড়।
দিবানিশি গায় তারা, বিরহের গান,
কোঠরে কোঠরে তারা, বাঁধে সুখ-নীড়।
৮
ঝাঁকে ঝাঁকে এসে পাখি খায় বট-ফল,
ময়না, টিয়া, বুলবুলি, শালিকের দল।
বসন্তে কোকিল ডাকে সুমধুর সুরে,
'বউ কথা কও' গায় সদা, দিনে দুপুরে।
৯
এই পাখিরা হয়, মধুসঙ্গি, তোমার আমার,
গানে গানে, স্বপ্ন জোগায় তারা,
দুঃখের মাঝে বাঁচিবার।
চঞ্চুতে নিয়ে আসে খড়, বাঁধে ঘর-সংসার,
ডিম পাড়ে বাচ্চা ফোটায়,
সাধ জাগায়,
হতাশার মাঝে বাঁচিবার।
রচনাকালঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন (১৯৮৭-১৯৯০খৃস্টাব্দ)

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন