মহানবির আগমনী আলপনা
১
দিবসের কর্মশেষে সবাই ফিরেছে ঘরে,
সূর্য ঘুমাতে গেছে;
জগত
আঁধার করে।
কাবাঘর ছেয়ে গেছে আবছা অন্ধকারে,
উদ্ভাসিত হাস্যমান চাঁদ মক্কার উপরে।
২
দিনের অসহ্য গরম শূন্য হয়ে গেল,
আয়েশী হাওয়ায় মরু সুশীতল হলো।
শত শত পাহাড়, ধূ ধূ বালি ও পাথর,
ফাঁকে ফাঁকে মরুদ্যান আছে যাযাবর।
৩
তাঁরা কাটায় রাতের পালা তাবুর তলায়,
উট দুম্বা ঘুমিয়ে আছে মরুর হাওয়ায়।
নির্জনে মৃদুমন্দ মরুবায়ু বইছে তখন,
কাবাগৃহে পুজার ঘন্টা রণিছে ভীষণ।
৪
কোন এক অশ্বারোহী ছুটিতেছে রেডসির তীরে,
পারস্যের অগ্নিকুন্ডে পার্সিরা
জ্বালানী দিতেছে ধীরে।
টাইগ্রিসের প্রান্ত হতে একজোড়া নিশাচর
পাখি,
পত পত মেলে ডানা হঠাৎ স্বশব্দে ডাকি।
৫
রোমান সম্রাট হিরাকল প্রাসাদে আনন্দ নিদ্রায়,
শীঘ্রই ঢুকবে জল তার সাধের প্রমোদ নৌকায়।
ভারতের বৌদ্ধ সম্রাট মহামান্য হর্ষবর্ধণ,
চাণক্য পন্ডিত কৌটিল্য তাঁর উজির তখন।
৫
ইউরোপ-ঈশ্বর পোপ, রোমে তিনি ঈশ্বরের
দূত,
মৌরসী আসনে তার, মরু হতে ঢুকবে জলস্রোত।
হয়তো কিশোরী এক চীনদেশে গাঁথছে পুস্পমালা,
ভালোবেসে জুড়ায়ে দিতে প্রিয় প্রেমিকের গলা।
৭
কোন এক নির্জন দ্বীপে, বসন্তের
কুকিল,
গানে গানে কাঁপালো বন,
নদী
খাল বিল।
সাইবেরিয়ায় কোন এক উপজাতি মেয়ে,
করছে হরিণ শিকার তীর-ধনু দিয়ে।
৮
বাংলার সনাতন রাজা শশাঙ্ক তখন,
প্রবল প্রতাপে বঙ্গ করিতেন শাসন।
প্রাচীন যুগ চলে গেছে মধ্যযুগ শুরু,
শত সভ্যতার হৃতপিন্ডে আসিলেন গুরু।
৮
বাংলার সনাতন রাজা শশাঙ্ক তখন,
প্রবল প্রতাপে বঙ্গ করিতেন শাসন।
প্রাচীন যুগ চলে গেছে মধ্যযুগ শুরু,
শত সভ্যতার হৃতপিন্ডে আসিলেন গুরু।
৯
কাবাঘেষে একদিন রজনীর অন্ধকার শেষে,
রক্তিম সূর্য জন্ম নিলেন,
নূতন
দিবসে হেসে।
মরুচন্দ্র উদয় হলেন তৃণহীন হেজাজ প্রান্তরে,
কোরেশ বংশে, মা আমেনা-আব্দুল্লার
ঘরে।
১০
পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু আরবের পবিত্র মক্কা নগরী,
১২ই রবিউল আউয়াল ভোরে জন্ম দিল তারি।
পবিত্র মদিনা তাকে দিল আশ্রয়,
বড় হল ইতিহাসে মেলিয়া হৃদয়।
রচনাকালঃ ১৯৮০ সাল,
আয়শা(রাঃ) মসজিদ, মক্কা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন