নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ দিবস পালনঃ
২০২৩ সালের আগষ্টে আমার মেঝ
সম্মন্দি জামিল চৌধুরীর একমাত্র পুত্র ব্যারিষ্টার আতিফ চৌধুরী ঢাকায় এসে সেখানে
অফিসের কাজে সিলেটে আসে। আমরা তাঁকে সিলেট বিমানবন্দরে রিসিভ করি। সে একদিন তার ফুফুর
সাথে কাটায়। ব্যায়ামাগার ও সুইমিংপুলের সুবিধা নিতে পরদিন সে সিলেট বিমানবন্দরের
কাছে পাঁচ তারকা গ্রেন্ড সিলেট হোটেলে চলে যায়। রাত হোটেলে কাটিয়ে সকালে নাস্তা
জিম ও সাঁতার সেরে নিলে তাঁকে আমাদের নিয়ে আসতাম, রাতে হোটেলে পৌঁছে দিতাম। তাঁকে
নিয়ে আত্মীয়স্বজনের অনেক বাসা বাড়িতে দৌড়াই।
একদিন আমাদের প্রতিষ্ঠিত
নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালনা কমিটির নির্বাচন হয়। সকল
পরিচালক ভোটে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারমেন পদে ডাঃ আফজাল মিয়াকে হারিয়ে
জয়ী হন ডাঃ সৈয়দ মুছা কাইয়ূম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্বাচিত হন ডাঃ শাহরিয়ার
হোসেন চৌধুরী। ডাঃ আফজাল মিয়া জন্মলগ্ন হতে এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। কিছুদিন
আগে তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে জরজর ছিলেন। নর্থইস্ট ক্যান্সার
হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে।
১৯৯৮ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর
নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ তেলিহাওরে যাত্রা শুরু করে। তবে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয় আর আগে, ১৯৯৬ সালে, সিলেটের তেলিহাওরে। হাঁটি হাঁটি পা
পা করে কলেজের বয়স পঁচিশ বছর হয়ে গেছে।
নবীন ও প্রবীন ছাত্রছাত্রীরা
কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে চাইলে ডাঃ শাহরিয়ার ভাই রাজি হন।
তাছাড়া সাফল্যের সাথে একটি
প্রতিষ্ঠানের পঁচিশ বছর পার করা চাট্টিখানি কথা নয়। শূন্য হতে যাত্রা শুরু করে আজ
চারপাঁচ কোটি ডলারের বিশাল প্রতিষ্ঠান নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড সার্ভিসেস
লিমিটেড।
সেদিন ঘুম হতে উঠে নাস্তা সেরে
বের হওয়ামাত্র পেটে পীড়া অনুভব করি। বাথরূমে যেতেই বেশ লুজমোশন হয়। এই পীড়া নিয়েই
বাপ বেটা ও গিন্নী তিনজন কারে চেপে বসি। অধ্যক্ষের কক্ষে বসে কফি পান করি। একে একে
হাজির হন প্রিন্সিপাল নাজমুল ইসলাম, এম ডি শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, কিডনির ডাঃ
নাজমুল ইসলাম আমার প্রায় সমবয়সী। দাড়ি রাখায় তাঁকে আমার চেয়েও বয়স্ক লাগছে। ডাঃ
নাহিদ ইলোরার সাথেও দেখা হয়। আসেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারমেন সৈয়দ মুছা কাইয়ূম।
মনে পড়ে ১৯৯৪ সালে আফজাল মিয়া
স্যারের চেম্বারে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম সভার কথা। নাহিদ এলোরা
ছাড়া সেই সভায় এই সবাই ছিলেন। আর ছিলেন বড়লেখার ডাঃ হেলাল আহমদ এবং রোটারিয়ান ডাঃ
জালাল আহমদ চৌধুরী। ডাঃ হেলাল তাঁর শেয়ার সোয়া কোটি টাকায় বিক্রি করে চলে যান এবং
ডাঃ জালাল শেয়ার না কিনেই আমেরিকা চলে যান। ব্যস্ততার কারণে পরিচালকদের মধ্যে
অনেকেই অনুপস্থিত ছিলেন।
সকালে সোভাযাত্রার মাধ্যমে
অনুষ্ঠান শুরু হয়। সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বসেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্ণদার
এম ডি শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, চেয়ারমেন সৈয়দ মুছা কাইয়ূম, বয়োজ্যষ্ঠ পরিচালক ডাঃ
আজিজুর রহমান ও খসরু ভাই। ব্যান্ড পার্টির ব্যান্ডের তালে তালে তীব্র রোদে
চন্ডিপুল পয়েন্ট আমরা ঘুরে আসি।
এবার আলপনা আঁকা নর্থইস্ট
প্রাঙ্গণে সঙ্গীতের তালে চলে নৃত্যানুষ্ঠান। রংবেরঙ্গের পোষাক পরে অংশগ্রহণ করেন
নেপালী ও বাঙ্গালী ছেলে মেয়েরা। প্রায় দুই ঘন্টা চলে মনোরম নৃত্যানুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান শেষে আমরা খাবারের বক্স নিয়ে তিনজন বাসায় ফিরি।
বিকেলে কুশিয়ারা কনভেনশন
সেন্টারে কনসার্টের আয়োজন করা হয়। এক আনন্দ ও উল্লাসে কাটে এই সুন্দর সন্ধ্যা।
কনসার্টের মধ্যে চলে ডিনার। ঢাকা হতে এসেছেন সেফ দল, মজা করে রেঁধেছে বাসমতী
চালের কাচ্চি খাসির বিরানী, বুরহানী, সাথে দই ও কুক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন