১
সুশান্ত ছিলাম আমি,
চঞ্চল পাখির মত
উড়ে বেড়াতাম,
নীরব অরন্যে পুস্পভরা বৃক্ষের শাখায়।
স্বচ্ছ নদীর চরায়,
লাল কৃষ্ণচূড়া পলাশের ডালে,
প্রাণচঞ্চল নগরে,
আবার ঘুম জড়ানো গ্রামে,
আবার ঘুম জড়ানো গ্রামে,
কলেজের সদাহাস্য তরুনদের ভীড়ে,
কখনোবা মিছিলে, কখনোবা উৎসবে।
কখনোবা পিকনিকে,
জাফলং শ্যামলী কিংবা মাধবকুন্ডে।
২
২
প্রেমকে যখনও আমি চিনিনি জানিনি,
ভালবাসার মৃদু উত্তাপ ভয়ে ভয়ে তখন,
একটুখানি তাপ করছিল বিকিরণ,
ভোরের জড়তা বক্ষে নিয়ে,
বক্ষে পৌষের তিরতির শীত নিয়ে।
৩
৩
শরমে-গরমে-ভয়ে কাঁপছিল আমার হৃদয়,
মাঘের অবসানে,
ফাগুনের নিষ্পাপ রোদের আগমনে,
কীনব্রীজে দাঁড়িয়ে দেখতাম,
শীতের সুরমা, ঝিকিমিকি বালুচর,
কিশোরীর মিষ্টিমুখ ইশারা দিত অজান্তে আমায়।
ইচ্ছে হতো সারাদিন অপলক চেয়ে থাকি আমি,
না, চোখ ফিরিয়ে নিতাম বহু চেষ্টায়,
সংস্কারে লজ্জায় জড়তায়।
৪
৪
মনে হতো ওরা যেন
আধুনিক রবোটিক যৌন-পুতুল,
স্বর্গের হুর-গেলমান,
আধুনিক রবোটিক যৌন-পুতুল,
স্বর্গের হুর-গেলমান,
বেভুলে এসেছে নেমে মাটির ধরায়।
ভ্রমে কিংবা নিভ্রমে
চোখে চোখ পড়লে আমার
জ্বলে উঠতো অগ্নিস্ফুলিঙ্গ প্রাণে,
দাউ দাউ করে জ্বলে যেতো আমার অদম্য প্রাণ।
৫
বহু পরিশ্রমে শত সাধনায়,
নিভিয়ে দিতাম সেই সুতীব্র দহন।
চুপি চুপি শান্ত হয়ে যেত আমার
চির অশান্ত, চির চঞ্চল, চির বিক্ষুব্ধ মন।
জোনাকীর মত অন্ধকারে যখন,
মিটিমিটি করছিল আমার অপূর্ণ ভালবাসা
অপ্রত্যাশিত এক একসিডেন্টে
থেমে গেল এই মাতালের আনন্দ স্বপন।
৬
শিমি দৌড়ে এলো
সরকারী কলেজের কৃষ্ণচূড়া ঝাউয়ের বনে,
শান্ত তৈলাধারে ধরালো আগুন।
প্রজাপতির পাখা মেলে জড়ালো আমায়,
পদ্মদীঘির উদাস পারে হিমেল বাতাসে,
ফুলের সুমধুর সৌরবে,
ছোট্ট ঝর্ণাধারার অবিশ্রান্ত প্রবাহে,
টিলাসারির নির্জন কানায় কানায়,
কত যে হারিয়ে যেতাম,
শিমি আর আমি
যৌবনের বর্ণহীন স্বর্গীয় স্রোতে,
চির অমর ভালবাসায়।
রচনাকালঃ
এম সি কলেজ জীবন (১৯৮১-১৯৮৩সাল)
রচনাকালঃ
এম সি কলেজ জীবন (১৯৮১-১৯৮৩সাল)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন