ই. এ চৌধুরী : কর্ম ও ব্যক্তিত্বে এক অনন্য নাম
চৌধুরী
ইসফাকুর রহমান কুরেশী
চাকুরি জীবনে তাঁর সততা ও নিষ্ঠা তাকে বাংলাদেশ পুলিশের
সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করে। ঢাকার সিটি এসপি পদে থাকাকালে ১৯৬৪ সালে অসীম
সাহসিকতার জন্য তিনি পাকিস্তান পুলিশ মেডেলে ভূষিত হন। ১৯৭৬ সালে তাঁর নেতৃত্বে
ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ গঠিত হয় এবং তিনি এর প্রথম কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন।
অবসর গ্রহণের পরও ই.এ. চৌধুরী সমান উদ্যমে বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত
করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক পূবালী ব্যাংক
লিমিটেডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং তাঁর নেতৃত্বে এই ব্যাংক দুর্বল অবস্থা
থেকে উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করে।
ই.এ. চৌধুরী দক্ষিণ সুরমা তথা সিলেটবাসীর এক অত্যন্ত জনপ্রিয় ও
সম্মানিত ব্যক্তিত্বের নাম। ২৮শে জানুয়ারি ২০০৯ইং তারিখে তিনি আমাদেরকে শোক সাগরে
ভাসিয়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। ৩০শে জানুয়ারি বাদ জুম্মা তিনি অজস্র
মানুষের শেষ শ্রদ্ধা ও ভালবাসার অশ্র“তে সিক্ত হয়ে তাঁর জন্মভূমির মাটি শাহজালালের
দরগা সংলগ্ন কবরগাহে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।
পুরো নাম ইমাদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। সিলেট শহর থেকে আট মাইল
দক্ষিণে দক্ষিণসুরমা উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামে বৃটিশ শাসনামলে
১৯২৮ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম গৌছ উদ্দিন আহমদ
চৌধুরী ছিলেন আসাম লেজিসলেটিভ কাউনিসলের সদস্য (এম.এল.সি)। সমাজসেবামূলক কাজের
জন্য তিনি বৃটিশ সরকার কর্তৃক খান বাহাদুর উপাধি পান। তাঁর মাতা মরহুমা সারা
খাতুন চৌধুরী ও পিতা গৌছ উদ্দিন চৌধুরী আপন চাচাতো ভাইবোন। ১৩০৩ সালে হযরত শাহজালাল(রঃ) সিলেট অঞ্চলে
আগমন করেন। তার সাথে সর্বপ্রথম যে বারজন সঙ্গী আরব উপদ্বীপ হতে ইসলাম প্রচারে বের
হন তাদেরই একজন পবিত্র মক্কা নগরীর হযরত শাহ দাউদ কুরেশী(রঃ), যিনি দক্ষিণসুরমা অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করেন। আর এই মহান ওলির
বংশের অধস্তন পুরুষ হচ্ছেন ই. এ. চৌধুরী। তার বংশতালিকা নিম্নরূপ- ১৫) ইমাদ উদ্দিন
আহমেদ চৌধুরী, >১৪) খান বাহাদুর গৌছ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী
>১৩) মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, > ১২) ইয়াকুব আলী চৌধুরী >
১১) মুহাম্মদ হাজের > ১০) মুহাম্মদ বাসের > ৯) মোহাম্মদ আমিন > ৮) সালেহ মুহাম্মদ >৭) ইয়াকুব খান, > ৬) ইলিয়াস খান,
> ৫) পীর মালিক ওরফে এখতিয়ার খান, > ৪) শাহ মালিক,
> ৩) মিয়া মালিক, > ২) রহিম দাদ কুরেশী(রঃ),
> ১) শাহ দাউদ কুরেশী(রঃ)।
গ্রামে জন্ম আর সেই গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা। তারপর সিলেট
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৪৩ সালে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৪৫ সালে এম সি
কলেজ থেকে আই. এ এবং ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগে
অনার্স ও ১৯৫০ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবনে সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। হাইস্কুলে পাঠ্যবস্থায় ১৯৪২
সালে তিনি “সবুজ পতাকা” নামে ছাপার অক্ষরে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৪৩ সালে
তিনি সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রকাশিত ম্যাগজিনের সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন কালে ১৯৪৯ সালে তিনি “পাকিস্তান ইয়ারবুক ১৯৪৯” নামে একটি
গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ফেনী সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসাবে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। তারপর
১৯৫৩ সালে তিনি “পাকিস্তান সুপিরিয়র পুলিশ সার্ভিস” পরীক্ষা পাস করে ১৯৫৪ সালে
এসিস্টেন্ট পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট পদে পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে নিযুক্তি লাভ
করেন। তিনি পুলিশ হেন্ডবুক রচয়িতা। পুলিশ বিভাগে বিশেষ কৃতিত্বের
সাথে একে একে সাফল্যের সবকটি সোপান
অতিক্রম করে ১৯৮৪ সালের ১লা জানুয়ারি সিলেট বিভাগের মধ্যে প্রথম সিলেটি হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারল পদে অধিষ্ঠিত হন এবং ১৯৮৫
সালের ৩১শে ডিসেম্বর সরকারি চাকুরি থেকে আই. জি পি হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।
চাকুরি জীবনে তার সততা ও নিষ্ঠা তাকে বাংলাদেশ পুলিশের
সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করে। ঢাকার সিটি
এস পি পদে থাকাকালে ১৯৬৪ সালে অসীম সাহসিকতার জন্য তিনি পাকিস্তান পুলিশ মেডেলে
ভূষিত হন। ১৯৭৬ সালে তার নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠিত হয় এবং তিনি এর
প্রথম কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। অবসর গ্রহণের পরও ই. এ চৌধুরী সমান উদ্যমে বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত
করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক পূবালী ব্যাংক
লিমিটেডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং তার নেতৃত্বে এই ব্যাংক দুর্বল অবস্থা থেকে
উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করে।
২০০৫ সালে তিনি শারীরিক অস্স্থুতাজনিত কারণে ব্যাংকের সুযোগ্য
পরিচালক বর্তমান জাতীয় সংসদের এম পি হাফিজ আহমদ মজুমদারকে বোর্ডের সম্মতিক্রমে
চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার অর্পণ করেন। এছাড়া তিনি ঢাকা শহরে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটবাসীর
প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসাবে বহু বৎসর অধিষ্ঠিত ছিলেন। কাওরানবাজারে অবস্থিত জালালাবাদ এসোসিয়েশনের জালালাবাদ ভবন তার একক প্রচেষ্টার ফসল।
তাছাড়া ই. এ চৌধুরী সিলেট ও ঢাকায় বিভিন্ন সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের
সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি জালালাবাদ ভবন ট্রাষ্ট, মুহিব উদ্দিন শিক্ষা ট্রাষ্ট ও আফতাব জাহান কল্যাণ ট্রাষ্টের
চেয়ারম্যান ছিলেন। তাছাড়া তিনি ন্যাশনাল হার্ট ফান্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ ও
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি পদেও দায়িত্বপালন করেন। সিলেট
লায়ন্স ক্লাব শিশু হাসপাতালের তিনি একজন পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
ই. এ চৌধুরী ৬ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে ৩য় ছিলেন। তার বড় ভাই
সামসুউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর উদ্দিন চৌধুরী প্রয়াত হন
অনেক আগে। তাঁর অপর সহোদররা হচ্ছেন প্রাক্তন সচিব ও সাহাব উদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা ইমাম উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, গ্রীন
ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের বর্তমান পরিচালক ও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রাণ পুরুষ,
সাবেক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের
সভাপতি নাছির এ চৌধুরী ও কনিষ্ঠ ভ্রাতা সাবেক সাংসদ শফি এ চৌধুরী। ই. এ চৌধুরীর
প্রথমপুত্র এজাজ আহমদ চৌধুরী ১৯৮৫ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, দ্বিতীয় পুত্র রিয়াজ আহমদ চৌধুরী এইচ.এস.বি.সি ব্যাংকের বাংলাদেশ কাউন্ট্রি প্রধান। একমাত্র মেয়ে রুমানা চৌধুরী পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ও গ্রীন ডেল্টা
ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের বর্তমান পরিচালক।
অত্যন্ত সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে আমরা আমাদের
শৈশব থেকে তাঁকে খুব শ্রদ্ধা করতাম। মানুষের শ্রদ্ধা ও গুরুত্ব পাবার মত এক
অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। চলনে বলনে আচার আচরণে তিনি আত্মমর্যাদাকে দৃঢ়ভাবে
ধরে রাখতেন। মানুষের উপকার করতে সর্বদা উন্মুখ থাকতেন। কারও কোন ধরনের ক্ষতি হোক
এমন কিছু তিনি কখনও চাইতেন না। ১৯৮৮ সালে আমি পলিটেকনিক হতে সিভিলে ডিপ্লোমা
ফাইনাল পরীক্ষা দেই, এবং তারপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম এ প্রথম বর্ষ
পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা গমন করি। তিনি তখন পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান। ব্যাংকের হেড
অফিসের তৃতীয় তলায় তার সাথে দেখা করি। চাকুরি প্রার্থী হলে তিনি আমার কাছ থেকে
আবেদন পত্র রেখে ১০ বৎসরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিয়ে অফিসের সবার সাথে পরিচয়
করে দেন।
১৯৯০ সালে পরীক্ষা দিয়ে নিয়োগপত্র পেয়ে পূবালী ব্যাংকে যোগদান
করি। ব্যাংকে চাকুরি করব এমনটি ইতোপূর্বে কখনও চিন্তা করি নি। ভাবতাম আর ভাল
কিছুতে সুযোগ হলে চলে যাব, কিংবা বিদেশে চলে যাব। কিন্তু ভাগ্য আমাকে আজও এই
পূবালী ব্যাংকে বন্দি করে রেখেছে। তাঁর মাধ্যমে এই ব্যাংকে ঢুকে জীবনের ৩১টি বৎসর
পার করেছি। মনে পড়ে একদিন আমাকে পূবালী ব্যাংকের রেস্ট হাউসে ডেকে নেন কেবল উসমান
মিয়া কর্তৃক নিয়ে আসা লাঞ্চ করানোর জন্য। আরেক দিন সিলেটে এসে ডেকে নেন। মনে হল খুব
জরুরী কাজে ডেকেছেন। কিছুক্ষণ আলাপের পর যখন জানতে চাইলাম কি জন্য ডেকেছেন? জবাব দেন তোমাকে দেখার জন্য ডেকেছি। এই ছিলেন
ই. এ চৌধুরী, যার বক্ষ জুড়ে ছিল এত
স্নেহ, এত মায়া মমতা। তাকে আমরা ভুলব কেমন করে।
মধুকবি মাইকেল মধুসুদনের ভাষায়-
“জন্মিলে মরিতে হবে,
কে কোথায় অমর কবে, চিরস্থির করে নীড়,
হায়রে জীবন নদে/ সেই ধন্য নরকুলে, লোকে যারে নাহি ভূলে,
মনের মন্দিরে যারে সেবে সর্বজন।”
তিনি বেঁচে থাকবেন আমার মত অসংখ্য মানুষের হৃদয় মন্দিরে। জীবনসায়াহ্নে এসে বহুদিন তিনি রোগে বার্ধক্যে কষ্ট করেছেন। প্রায় দুই বৎসর পূর্বে
গুলশানের বাসায় গিয়ে দেখে এসেছিলাম। তারপর দেখা হয় নি আর। দেখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু
যাব যাব করেও নানা ব্যস্ততায় যাওয়া হল না।
কবি জীবনানন্দ দাসের অমর কাব্য 'বনলতা সেন' কাব্যের কবিতার লাইন মনে
হলঃ
"সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রং নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে— সব নদী— ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;"
শেষ দেখা হলো হযরত
শাহজালালের(রহঃ) দরগায় তখন,
যখন শেষ তাঁর জীবনের সব লেনদেন। এবার তাঁর ঘরে ফেরার পালা। তাঁর
স্মৃতি রক্ষার্থে একটা কিছু করার জন্য তাঁর প্রিয়জনদের প্রতি আমি আহ্বান জানাই। আমার এই আহ্বানে কাজ হয়েছে। তাঁর সুযোগ্য পুত্র রিয়াজ চৌধুরী ও গুনবতী সুকন্যা রুমানা শরীফ সিলেটের দাউদপুরে ই এ চৌধুরী টেকনিকেল কলেজের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন।
তাঁরা প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে দাউদপুর মাদ্রাসায় ই এ চৌধুরী ভবন নির্মাণ করে দেন। তাঁর সুযোগ্য ভাতিজা অধ্যাপক ডাঃ নিয়াজ এ চৌধুরী তাঁর প্রতিষ্ঠান জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ স্কুলে 'ই এ চৌধুরী গনপাঠাগার' স্থাপন করেছেন। জালালাবাদ এসোসিয়েশন ঢাকা তাঁদের কনফারেন্স হলের নাম ই এ চৌধুরীর সম্মানে রেখেছেন 'ই এ চৌধুরী কনফারেন্স হল'। ই. এ চৌধুরী অমর হউন, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন,
তিনি মহান করুণাময় আল্লাহর দরবারে
শ্রেষ্ঠ মর্যাদার আসনে আসীন হউন। আমিন।
কুমিল্লার চিওড়া কাজিবাড়ির খান বাহাদুর মোখলেছুর রহমানের কন্যা কানিজ মোমেনার সাথে ১৯৫৬ সালে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁর শ্বশুর একজন খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ ও চাবাগান মালিক ছিলেন। সিলেট ও জলপাইগুড়িতে তাঁর মালিকানাধীন অনেকগুলো চাবাগান ছিল। জলপাইগুড়ির নওয়াব মোশাররফ হোসেইন ছিলেন তাঁর আপন খালাতো ভাই।
দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক ই. এ চৌধুরীর জৈষ্ঠ্য পুত্র এজাজ আহমদ চৌধুরী আমেরিকা থেকে এম. বি. এ পাশ করে দেশে ফিরে আসার পর সিলেট বিসিক শিল্প নাগরীতে ২টি বস্ত্র মিল প্রতিষ্ঠা করেন। মিলগুলো পুরোপুরি চালু হওয়ার আগেই এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৮৫ সালে এজাজ আহমদ চৌধুরী মাত্র ২৯ বছর বয়সে চিরকুমার অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
কনিষ্ঠ পুত্র রিয়াজ আহমদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. কম এবং পরবর্তীতে এম. বি. এ পাশ করেন। বর্তমানে তিনি এইচ. এস. বি. সি ব্যাংকের বাংলাদেশ কাউন্ট্রি প্রধান। সিলেটের ভাদেশ্বরের জাতক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলার ডঃ বজলুল মোবিন চৌধুরীর কন্যা অদিতি চৌধুরী তাঁর সহধর্মিনী। তাঁদের দুই পুত্র আবরাজ আহমদ চৌধুরী ও সাফরাজ আহমদ চৌধুরী।
মিসেস রুমানা শরীফ
ই. এ. চৌধুরী জৈষ্ঠ্যা কন্যা রুমানা শরীফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে এম.এস.সি পাশ করেন। তিনি পূবালী ব্যাংকের একজন পরিচালক। তাঁর স্বামী কাজী মোহাম্মদ শরীফুল আলা লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে উচ্চ ডিগ্রিপ্রাপ্ত একজন চাটার্ড একাউনট্যান্ট। বর্তমানে তিনি ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লিমিটেডের সি ই ও এবং ম্যানেজিং ডায়রেক্টার। তাঁদের এক কন্যা আনজারা শরীফ লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সে একাউন্টিং এন্ড ফাইনেন্সে ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার্থী এবং পুত্র ফারহান শরীফ আলা দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। ই. এ. চৌধুরীর কনিষ্ঠা কন্যা রেহানা ইয়াসমিন মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সে অকালে মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র গ্রন্থঃ
“হযরত শাহদাউদ কুরেশী (রঃ) ও তার
বংশধরগণ” দেওয়ান নূরুল আনওয়ার হোসেন চৌধুরী প্রকাশকালঃ ২০০০ সাল।
"শাহজালাল(রঃ) ও শাহদাউদ কুরেশী(রঃ)" লেখক ইসফাক কুরেশী প্রকাশকালঃ ২০১২ সাল
"দৈনিক সিলেটের ডাক" প্রকাশকালঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি,
২০০৯ সাল
কবি লেখক ব্লগার ও পূবালী ব্যাংকার ইসফাক কুরেশী
আপনার লেখা অনুসরণ করে আমিও ই এ চৌধুরীর সংক্ষিপ্ত জীবনী লিখেছি৷ যদিও আমার লেখাটা মানের হয়নি, যতটা সুন্দর হয়েছে আপনার লেখাটা৷
উত্তরমুছুনএই সেই ই এ চৌধুরী, যে পাকিস্তানের পক্ষে থেকে বাংলাদেশি মুক্তিকামী মানুষের বুকে গুলি চালাত। রুমি ও তার সহযোদ্
উত্তরমুছুন