সপরিবারে নেপাল সফর- কাটমন্ডু, পুখারা, নগরকোট, এভারেস্টশৃঙ্গ দর্শন ও আকাশে প্যরাস্যুট গ্রাইডিং পর্ব- দুই
সকাল ১০ ঘটিকায় অনিল আগরওয়াল আমাদেরকে কাটমন্ডু সাইট সিয়িং করাতে একটি দামী এসি মাইক্রোবাস পাঠান। মাইক্রোবাসটি ডানে বামে ঘুরপাক খেতে খেতে আমাদেরকে এক সুউচ্চ পাহাড়ের উপর শম্ভুনাথ বৌদ্ধ মন্দিরে নিয়ে যায়। ৫০ নেপালি রুপি টিকেট কেটে অসংখ্য সিড়ি বেয়ে বেয়ে মন্দিরে প্রবেশ করি। সারাটা পাহাড় জুড়ে অসংখ্য বানর লাফালাফি করছে। একটি বানর মাতৃস্নেহে মৃত শিশুকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে।
মন্দির প্রাঙ্গণে লোকে মানত করে বৌদ্ধমূর্তির সামনে আধুলী নিক্ষেপ করছে। আধুলী নিক্ষেপকারীদের মধ্যে চীনা জাপানিসহ বিদেশীরা রয়েছেন। মন্দিরের চারপাশে বৌদ্ধবানী খচিত অসংখ্য চাকতি রয়েছে। লোকেরা এগুলো স্পর্শ করে চাকতি ঘুরাচ্ছে। এখানে কমলা বর্ণের কাপড় পরিহিত মাথামুন্ডানো অনেক ভিক্ষু ধর্মচর্চারত আছেন। মন্দিরের পিছনের চত্বরে দাঁড়িয়ে ছবি উঠাই। নীচে কাটমন্ডু শহরটা পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। সময় নষ্ট না করে নেমে আসি। পথে একজন অক্ষম ভিখারীকে পাই যে নেপালে আমার দেখা একমাত্র ভিক্ষুক। তাই ১০ নেপালি রুপি তার হাতে তুলে দেই। পথে রানির দিঘি দেখি। দিঘির মাঝখানে একটি ঘর। রানি একটি ছোট্ট সেতু বেয়ে সে ঘরে যেতেন। পথে ছোট্ট ত্রভূবন বিশ্ববিদ্যালয় দেখি যা আমাদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় কিছুই না। তারপর আমাদেরকে ললিতপুর প্রাচীন পাতান রাজবাড়িতে নিয়ে আসে। রাজবাড়ি তিনভাগে বিভক্ত- রাজবসত (বাড়ি), রাজদরবার (রাজ অফিস) এবং রাজমন্দির। সর্বত্র অসংখ্য সিংহ ও মানব মূর্তি। তাছাড়া দেবদেবীরও অনেক মূর্তি রয়েছে। ভবনগুলো ইস্টক নির্মিত। তাতে প্রচুর কাটের কারুকাজ রয়েছে। নেপালের সংস্কৃতি ভাস্কর্য্য শিল্পের সহায়ক হওয়ায় এখানে প্রাচীনকাল হতে কাট ও পাথরের অজস্র উন্নত ভাস্কর্য্য গড়ে উঠছে, যা হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য হিসাবে টিকে আছে। তিনচার ঘন্টা শহর দেখে টুরিস্ট বাসে হোটেলে চলে আসি। নামাজ ও খাবার সেরে জেফার ও তার মা ঘুমিয়ে পড়েন। আমার মনে হল আর কোনদিন এদেশে হয়ত আসা হবেনা। বরং ঘুমানোর চেয়ে ভাল হবে শহরটা ঘুরে ঘুরে দেখে নেই। হোটেল হতে বের হয়ে বামদিকে সরলরেখায় হাঁটা শুরু করি। আবহাওয়া তেমন গরম নয়। আমাদের শীতকালের মত রোদকে মিঠে মিঠে লাগছিল। বাতাসে আদ্রতা কম, তাই শরীর ঘামেনা। প্রায় দুইঘন্টা অগ্রসর হই। প্রথমে জাপান এমব্যাসি, তারপর প্রেসিডেন্ট ভবন। এখানে একজন সৈনিক টাওয়ারে দাঁড়িয়ে নজরদারী করছে। গেটে কিছু সৈনিক।
আমাদের কিংবা ভারতের প্রেসিডেন্ট ভবনের মত এত চাকচিক্য নেই। তারপর হঠাৎ এক বিশাল বাড়ি দৃষ্টিগোচর হয়। বাড়িটির দৃশ্য নৈসর্গিক। অজস্র সুরম্য বৃক্ষশোভিত। গাছে গাছে অসংখ্য হলুদগৃবা বক ঝুলে রয়েছে। একজন নেপালিকে জিজ্ঞেস করে জানলাম এটা নারায়নহিতি প্রসাদের পিছনের দিক। দু’এক ঘন্টা আগে এবাড়ির গেটে ট্যুরিস্ট কার আমাদেরকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজ বন্ধ থাকায় আমাদেরকে ঢুকতে দেয়নি। এবার এই রাজপ্রসাদের গল্পে চলে আসি। বিগত ২৪০ বৎসর যে রাজবংশটি নেপাল শাসন করেছে সেই বংশের রাজাদের বাড়ি এই নারায়নহিতি প্রসাদ। এই রাজপ্রসাদে ২০০১ সালের পহেলা জুন জনপ্রিয় নেপাল রাজ বীরেন্দ্র, রানি ঐশ্বরিয়া, যুবরাজ দীপেন্দ্র আর সাতজন লোকসহ নিহত হন। পরবর্তীতে তদন্ত রিপোর্ট আসে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে বাঁধাগ্রস্থ হয়ে যুবরাজ এই হত্যাকান্ড ঘটান এবং নিজে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনার পর রাজত্ব চলে যায় রাজভ্রাতা জ্ঞানেন্দ্রের হাতের মুঠোয়। এই হত্যাকান্ডের রহস্য নিয়ে নেপালিদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। রাজা বীরেন্দ্র ছিলেন জনপ্রিয় ও বুদ্ধিমান। প্রত্যক্ষ রাজতন্ত্রের দিন যে শেষ হয়ে গেছে, তা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি জনপ্রতিনিধিদের (সংসদ) হাতে ক্ষমতা হস্থান্তর করে বৃটেনের মত নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রবর্তনের পথে হাঁটছিলেন। তার ভ্রাতা জ্ঞানেন্দ্রের তেমন রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ছিলনা। তিনি তার বাপ-দাদার মত সর্ব ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেন। পার্লামেন্ট বাতিল করেন। মাওবাদী দমনে গণহত্যা চালান। ফলে এক গৃহযুদ্ধ অতিক্রম করে ২০০৬ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। নেপালের মানুষ রাজভক্ত। নেপালে গণতন্ত্রের সাথে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রও বহাল থাকত। কিন্তু রাজা জ্ঞানেন্দ্রের নির্বুদ্ধিতা প্রায় আড়াই শত বছরের নেপালের শেষ রাজবংশটির কবর রচনা করে। সেইসাথে ঐতিহ্যবাহী নারায়নহিতি প্রসাদ জাদুঘরে পরিণত হয়। একজন নেপালি চালককে রাজা জ্ঞানেন্দ্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে জবাব দেন- তিনি এখন একজন সাধারণ পাবলিক। কাটমন্ডুর বাহিরে রাজ মৃগয়ার এলাকায় এক অখ্যাত নগরজুন প্যালেসে বসবাস করছেন।
১৭৬৮ সালে পৃথ্বি নারায়ণ শাহ যে রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন ২০০৫ সালে তার বংশধর জ্ঞানেন্দ্রের হাতে তার পরিসমাপ্তি ঘটে। কাটমন্ডুর পথে পথে অসংখ্য গাছে ফুটে আছে এক ধরনের হালকা বেগুনী নীলাভ ফুল। পাতা দেখা যায়না কেবল ফুল আর ফুল। যে দু’একটা পাতা দেখা যায় তা আমাদের কৃষ্ণচূড়ার পাতার মত। এই গাছগুলোর তলায় ঝরাফুলের গালিচা রচিত হয়। নেপালিরা এই ফুলের নাম দিয়েছে ‘গোলমোহর’।
রাতে নেপালি টেলিভিশন অনুষ্ঠান দেখি।
চ্যানেলগুলো আমাদের দেশের চ্যানেলগুলোর মতই। খবর, বিজ্ঞাপন ও ছবির গানে পরিপূর্ণ।
আমাদের মত তাদের অনুষ্ঠানও তেমন উন্নত নয়, তাই মানুষ ভারতের টিভি চ্যানেলই বেশী
উপভোগ করে থাকে। খবরে রাজনীতিবিদ ও শাসকগোষ্টির প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। কিছু
নেপালি শব্দ শুনি যা আমাদের বাংলা শব্দের অনুরূপ। যেমন- বাল বালিকা (শিশু বা ছেলে
মেয়ে), মায়া (প্রেম), মায়ালু (প্রেমিকা), এন্ডা (ডিম), ইত্যাদি। নেপালি বর্ণমালা
বাংলা বর্ণমালার প্রায় অনুরূপ। যেমন ল (বাংলা-ল), ব (বাংলা-ন), < (বাংলা-ে) ড
(বাংলা-ড)। এই দুই ভাষাকে আমার মনে হয়েছে একই বৃক্ষের দু’টি শাখা।
৭ মে ২০১৪ সাল। আমরা পুখারা যাত্রা করি। ঐদিন ভোর ৫টায় উঠে ব্রেকফাস্ট করি। ছোট কারে কান্তিপথ বাসস্ট্যান্ডে আসি। অনিল আগরওয়াল প্রদত্ত টিকেট বের করে আমাদের বাসে উঠি। উন্নত এসি বাস। ৭ টার বাস ছেড়ে দেয়। এখানে পুকরাগামি অসংখ্য বাস সারিবদ্ধ রয়েছে। শহরে কোন যানজট নেই। বাস ছাড়ার পর কাটমন্ডু শহর হতে বেরিয়ে আসতে প্রায় ৪০ মিনিট সময় ব্যয় হয়। পুকরার দূরত্ব ২১০ কিলোমিটার। দুর্গম আঁকাবাঁকা পার্বত্য পথ। উঁচু পাহাড়ের গা কেটে কেটে রাস্থাটি তৈরী হয়েছে। রাস্থার নিচদিকে সুদীর্ঘ ঢালু বরাবর যেমন গ্রাম, ক্ষেত, লোকালয় রয়েছে। অন্যপাশে উপরের দিকেও ধাপে ধাপে গ্রাম, ক্ষেত ইত্যাদি দেখা যায়। পথে পথে ভীতিকর বাঁক, এক পাহাড় হতে অন্য পাহাড়ে সেতু দিয়ে যুক্ত করা। দূর পাহাড়ের গায়ে মানুষের বাড়িগুলো খেলনা বাড়ির মত ছোট ছোট মনে হয়। প্রায় বাড়িই দুতলা ও কাস্টনির্মিত। ঘরের নিচতলায় গৃহস্থলী জিনিসপত্র এবং উপরে মইয়ের সিড়ি বেয়ে ঘুমের জায়গা ও বসার বারান্দা। ঘরের ছাদ টিন কিংবা শনে ছাওয়া। বাড়ির সামনে কলাফুল, জবাফুল, বাগানবিলাস ও গোলমোহর ফুটে আছে। এখানে এক গ্রামের উপরে আরেক গ্রাম, নিচদিকে এক গ্রামের নিচে আরেক গ্রাম, সেইসাথে ইক্ষু ক্ষেত, ভূট্টা ক্ষেত, কলা ক্ষেত পাহাড়ের ধাপে ধাপে সাজানো রয়েছে। গরু-ছাগল নেপালিদের মূল্যবান সম্পদ। পাহাড়ের ধাপে শনের চালাযুক্ত খোলা বাশের খুঁটির ঘরে গরু বাঁধা। পিছনের ঢালুতে গোবরের খাদ। পাশে গোখাদ্য, খড়ের ডিবি। শস্যের মধ্যে টমেটো, মিষ্টি লাউ, করোলা ইত্যাদি। শস্যমাঠ পাথর ও মাটির সংমিশ্রণ। এখানে ক্ষেতের কাজ আমাদের মত সহজ নয়। কোদাল ও গরুর লাঙ্গল দিয়ে এখানে নর ও নারী একত্রে কৃষি জমিতে কাজ করেন। জমির উপর জমি ধাপে ধাপে সাজানো। বৃষ্টির পানি আল দিয়ে আটকাতে হয়। ক্ষেতে হিমালয়ের বরফগলা পানিও ব্যবহৃত হয়। খাড়া পাহাড় বেয়ে শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে।
এক সময় পুখরা রোডের পাশে একটি সুন্দর পাহাড়ি নদী চোখে পড়ে। নদীটির নাম ত্রিশোলি নদী। এই নদীটি অনেকটা আমাদের জাফলংয়ের পিয়াইন নদীর মত। নদীটির তীরে তীরে ধানক্ষেত ও শস্যক্ষেত রয়েছে। নদীর অন্যপারে আকাশ ছোঁয়া পর্বতমালা। এযেন পাহাড়, নদী ও উপত্যকার এক অপূর্ব স্বর্গভূমি। কাটমন্ডু হতে পুখরা যাবার পথে পথে তিন জায়গায় গাড়ি থামে। প্রথমে পাহাড়ি নদীর ধারে অপরূপ শুভাময় জায়গায়। আবার এই নদীর তীরে এক সুন্দর মহাসড়ক হোটেলে। নদীর তীরে গাছের ছায়ায় টেবিলে বসে আমরা ২০০ নেপালি রুপিতে ৪ প্লেট নুডুলস খাই ও কোকিলের সুমধুর গান শুনি। এযেন একদম বাংলার কোকিলের সুর।
পরবর্তী সুন্দর মহাসড়ক হোটেলে বাসটি রাস্থা হতে খানিক নিচে নেমে যায়। বাথরুম সেরে নদীতীরের ঝুলন্ত টেবিলে বসে আমরা Tourism Co. পরিবেশিত খাবার খাই। ভাত, চাপাতি, মোরগ, সবজি, ডাল আমরা প্লেটে করে নিয়ে সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে সজ্জিত টেবিলে গিয়ে বসি। এখানেও একটানা কোকিলের কুহু কুহু গান শুনি। পাশের সিড়ি বেয়ে নিচে নামি। খুতিয়ে খুতিয়ে দেখি পাহাড়ি নদীর তীর, নেপালি ঘরবাড়ি ও ক্ষেত। নেপাল এমন একটি দেশ যেখানে সবকিছু উপর নিচ ধাপে ধাপে সাজানো। মনে হল নদীও তাই। একধাপে নদী গর্তাকার করে পানি জমানো- এভাবে প্রতি ধাপে পানি জমিয়ে রেখে শস্য ফলানো হয়। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর নেপালের বর্ষাকাল। তখন পাহাড়ি নদীগুলোয় জলের খড়স্রোতা ঢল নামে। নেপালের পাহাড়ে ঘন বৃক্ষ নেই, তবে প্রচুর ঘাস রয়েছে। মোঠ আট ঘন্টার জার্নি সেরে বিকেল ৩ ঘটিকায় আমরা পুকরা বাস টার্মিনালে অবতরণ করি। একটি ছোট টাটা কারে পুকরা লেকের তীরে এসে হোটেল সেন্ট্রাল লেকে উঠি। হোটেল কতৃপক্ষ পৌঁছামাত্র সুমিষ্ট শরবত পরিবেশন করে নেপালি রীতিতে আমাদেরকে বরণ করেন। বয়রা মালামাল ও আমাদেরকে চারতলার ৪০৭ ও ৪০৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। সদ্যনির্মিত ছিমছাম হোটেল। প্রতিরূমে দু’জন করে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। হোটেলের পিছনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূরে সাদা বরফের পাহাড় দেখা যায়। উঁচু পাহাড় হতে প্যারাসুট গ্রাইডিং করে অসংখ্য মানুষ কোন যন্ত্র ছাড়াই পাখির মত আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে। একজন পাইলট মাত্র একজন যাত্রী নিয়ে ছোট দুইজনি উড়ালযান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সবকিছু হোটেল বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমরা উপভোগ করি। উড়ালযান, প্যারাসুট সবকিছু উঁচু উঁচু পাহাড়ের উপর হতে পরিচালনা করা হয়। একটু পরে বের হয়ে আমরা পুকরা লেকের পারে যাই। পাহাড়ঘেরা এক অনন্যসুন্দর লেক। লেকটির অসংখ্য শাখা প্রশাখা পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ঢুকে গেছে। লেকপার হতে অনেক নিচে টলটলে পরিস্কার জল। বিদেশীরা নৌকা ভাড়া করে নৌবিহার করছে। আমরা নামি নি, মনে হল এত টাকা দিয়ে কেন নৌকা চড়বো। দেশেতো সিলেটের হাওর-বিলে সতত কত নৌকা চড়ে থাকি। লেকের এপার সমতল, অন্যপারে সুউচ্চ বনঘেরা পাহাড়। পাহাড়ের উপর সুন্দর সুন্দর বাড়ি। খুবসম্ভব এটি এলাকার ধনী লোকদের আবাসস্থল। একটি সেতু বেয়ে লেকের মধ্যে টাওয়ারে যাই। নিচে লোকেরা বরশি দিয়ে মাছ ধরছে। ধরাপড়া মাছগুলো বেশিই তেলাপিয়া। নেপালি চটপটি খাই। এখানে সিঙ্গারা, পিয়াজু, পুচকা সব ভেঙে একত্রে মিশায়ে দেয়। কি এক অদ্ভুত নেপালি স্বাদ। একটু পর বৃষ্টি নামে। মুষলধারে বৃষ্টি। আমরা দৌড়ায়ে একটি টিনের ঘরে আশ্রয় নেই। নেপালিরা লেকের পারে বসে নানা ধরণের হস্থশিল্প পণ্য বিক্রি করছে। রাতে আমি ও জিন্নুন হাঁটতে বের হই। উদ্দেশ্য রাতের খাবার হোটেল খোঁজা। খাবার হোটেল পেলাম, সেই হোটেলের বিশাল লবি। একদিকে নেপালের সুদর্শন সুদর্শনা যুবক যুবতীরা গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করছে। নেপালি পাহাড়ি গান ও নাচ উপভোগ করে করে বিদেশীরা ডিনার সেরে নিচ্ছে। অনেকটা যেন আমাদের পাহাড়ি সংস্কৃতি। আমরা হোটেলে যাই ও বের হয়ে একটি খাবার হোটেলে চারপ্লেট এগসহ চৌমিন খাই। পরে রূমে গিয়ে কিছুক্ষণ টিভি দেখে নামাজ পড়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন