রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০

রহিমা গ্রামের মেয়ে

 




রহিমা গ্রামের মেয়ে


এই বাংলার কার্তিক-অঘ্রাণের ভোরে,
সবুজ বনানী ঘেরা গ্রামগুলো ঘুরে,
দেখেছি শীতের পুকুরে জমেছে সবুজ সর,
হাঁসছানাগুলো প্যানা পাতা খুঁজে ছুটে তর তর।

হাঁটিতে হাঁটিতে বিষন্ন বদনে ময়লা পোষাক পরা,
চেয়ে দেখি ঝরা পাতা কুড়ায় শিশুরা,
চুলোর জ্বালানী তারা খুঁজে চারপাশে,
সবুজ দুর্বা হেলেঞ্চা ঘাসে ঘাসে।

রক্তিম সূর্য দিগন্তে আঁকে দিনের সূচনা,
বিস্ময়ে সিনান করি কুয়াশায় হয়ে আনমনা।
হলুদ শর্ষে ক্ষেত ছবি আঁকে পটে,
মৌ-বাক্স নিয়ে মৌচাষিদের আগমন ঘটে। 

ভোরের হাড়কাঁপানো শীত তাড়াতে, 
চাষার ছেলেরা হৈ চৈ করে।
শুকনো ধান্য নাড়ায় আগুন দেয়,
জ্বলে দাউ দাউ করে।

নবান্নের আগমন বার্তা পৌঁছে গেছে,
গ্রামের ঘরে ঘরে।
নবান্নের আনন্দাশ্রু যেন,
কুয়াশা হয়ে ঝরে।
দেখিয়া নতুন ধানের মুখ,
গ্রাম জুড়ে নামে সুখ।
এসেছে নতুন লুঙ্গি-শাড়ি,
উনুনে সদম্ভে ফুটছে ভাতের হাড়ি।

রহিমা গ্রামের মেয়ে,
চেহারাটা কুসুম কোমল।
হাত দু'টি তার ঘরের কাজে,
সদা থাকে চঞ্চল।
এবার প্রচুর ফসল ফলেছে,
এসেছে গোলায় বেশি ধান,
রহিমার গায়ে তাই জামদানী শাড়ি,
সবুজ পটে হলদে ডোরা টান।


কাব্যগ্রন্থ: হৃদয়ে বাংলাদেশ
রচনাকাল: ২২ নভেম্বর ২০২০
স্থান: সাগরদিঘিরপার, সিলেট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন