১
আমার হৃদয় মিশে গেল দূরে বহুদূরে,
আটলান্টিক মহাসাগরের দিগন্তহীন সীমানায়।
দু’টি কথা তোমাকে বলার আনন্দে,
খোলে গেল ঠোঁট, যে ঠোঁট দারুন মৃদুভাষী।
উম্মুক্ত হয়ে গেল বুক, যে বুক লজ্জাবতীর লতা,
সব প্রসারিত হলো খুশীর তরঙ্গমালায়।
২
২
তোমার সুমিষ্ট কণ্ঠ-
“গহীন বনে বীনার নিক্কনে,
বসন্তের কোকিলের সঙ্গীতে,
মক্ষিকার অমৃত গুঞ্জরনে"
অনুরণিত হলো আমার হৃদয় পল্লবে,
দিনরাত বারবার অবিরাম।
৩
৩
লোকভীড়ে থাকি আমি, তবু আমি একা,
আড্ডার আসরে বসেও দেখি একা এহৃদয়।
অজস্র সুরভীত শাখা ছিল হৃদয় বৃক্ষে আমার,
বসন্তের স্বাগতমে ফুটেছিল তাতে শত ফুল।
বাহিরে ডাকছিল লক্ষীপ্যাচা, ময়না, শ্যামা,
সুরেলা কোকিল।
আমি মাতাল ছিলাম এদের কোলাহলে,
আমি মাতাল ছিলাম এদের কোলাহলে,
এদেরই সুললিত গানের নেশায়।
৪
আমার বসন্ত কানন, তবু ছিল যে নির্জন,
আমার বসন্ত কানন, তবু ছিল যে নির্জন,
এখানে কুসুমের মেলা ছিল,
ফুলে ফুলে মধু ছিল,
সুমিষ্ট সুবাস ছিল,
সৌরভে ভরা ছিল সব।
অথচ ছিল সব শূন্যতার সীমাহীন অন্ধকারে।
৫
এই শূন্যতায় সবাই ছিল অপেক্ষায়,
এই শূন্যতায় সবাই ছিল অপেক্ষায়,
কোন এক গানের পাখির।
কোন এক ডানামেলা প্রজাপতির,
কোন এক মধুপায়ী মক্ষিকার।
হু-হু করছিল মন নিরলে নির্জনে,
দুঃসহ নিঃসঙ্গতায়।
৬
শিমি, কখন যে আসলে ছুটে,
নিস্তব্ধ এ কাননে,
বসন্ত উৎসবে প্রেমের সন্ধানে।
কোকিলার সুরে তোমার সুমিষ্ট ডাকে
কেঁপে উঠলো হঠাৎ, বসন্তের বাতাস,
আনন্দে পাগল হয়ে বইলো সবেগে।
কাঁপলো সব ফলফুল বৃক্ষপত্র শাখা,
নির্জনতার বুকে হল তীব্র শিহরণ,
তোমার এই গীতির ধারা,
হৃদয়ের কোনে কোনে প্রতিধ্বনী হয়ে,
সুকম্পন করলো সারা হৃদয় কানন।
৭
সুকম্পন শুরু হল হৃদয়ের প্রতিটি কনায়,
জাগলো এরাজ্যপাট, সোনার অঙ্গখানি,
রক্ত অস্থি, শিরা-উপশিরা,
পঞ্চইন্দ্র, শরীরের সব ক’টি অঙ্গ,
আপাদমস্তক এক যুগে হল বিদ্রোহী।
৮
তুফানের মত সব হল চঞ্চল,
অসহ্য যন্ত্রনায় থাকলনা স্থির আর,
হৃদয়ের চিরশত্র“ বিবেক আমার।
গর্জে উঠলো সে প্রচন্ড হুংকারে।
বিরহের মধুসুখে উপচে গেল,
সতের বছরের নিস্তব্ধ বন।
রচনাকালঃ
এম সি কলেজ জীবন
(১৯৮১-৮৩ সাল)
রচনাকালঃ
এম সি কলেজ জীবন
(১৯৮১-৮৩ সাল)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন