
তুমি আমার অন্তরালে যেওনা কোনদিন
তোমার দুর্বোধ্য ভালবাসার কসম-
মিথ্যা বলতে পারবে না তুমি, শিমি।
তুমিতো একদিন অযাচিত আমাকে
জড়িয়ে ধরেছিলে দু’বাহুর বন্ধনে
তোমার বুকের সুউষ্ণ ঠিকানায়।
আমার কুঁকড়ানো চুলে বিলি কাটতো
তোমার নরম হাত।
তোমার নরম হাত।
তোমার রাঙ্গা ঠোট ডুবে যেত
আমার রাঙ্গা ঠোটে।
আমার রাঙ্গা ঠোটে।
আর অনুচ্ছ সুরে আমাকে সুধাতে তুমি-
জীবন আমার, লক্ষিটি আমার,
আমার রূপ-রস-গন্ধ সবই তোমার।
আমাকে ভুল বুঝনা প্রিয়,
আমি তোমার হৃদয় পিঞ্জিরে,
চিরবন্দিনী এক পাখি।
তুমি আমার জীবনের-
সব তীর, সবসীমা,
সবপথ, সব ঘাট,
জীবনের সব কূল তুমি।
সবপথ, সব ঘাট,
জীবনের সব কূল তুমি।
আমার লক্ষিটি আমি বাঁচিব না,
যদি তুমি কোনদিন হারিয়ে যাও,
কিংবা খোয়া যাও আমার জীবন হতে।
তোমাকে হারালে আমি
চোখের জলে ভিজে ভিজে দৃষ্টি হারাবো,
ঝাপসা হবো, উম্মাদ হবো
তারপর একদিন হারিয়ে যাবো লোকালয় হতে।
তুমি আমার ফুটন্ত গোলাপে বসা
ডানামেলা প্রজাপতি,
সব উজাড় করা উম্মুক্ত মধুকর।
তুমি আমার মরা-গাঙ্গে প্রবল জোয়ার,
তুমি আমার হৃদয়-সাগরে ঢেউ পূর্নিমার।
তুমি ... ... ...
জীবনের অনাস্বাদিত স্বাদ,
জীবনের চিরন্তন স্বপ্ন,
জীবন-যন্ত্রনায়, একমুঠো আনন্দ,
জীবনের অনাগত সৌরভ,
পৃথিবীর যত সব রূপ-রস-গন্ধ তুমি।
জীবনে আমাকে তুমি দিয়েছ সব;
সব দিয়েছ যা কেউ পারেনি দিতে কোনদিন।
আমাকে করেছ দান তোমার প্রদীপ্ত হৃদয়,
কুসুমের মত সুশ্যামল মন,
অট্টহাসির মত খোলামেলা তেজদীপ্ত প্রাণ,
এমনকি সারাটা সতরুন দেহপিঞ্জর।
পৃথিবীতে আমিই ছিলাম তোমার সব,
আমাকে বিলিয়ে দিয়েছ তুমি, তুমাকে-
নিজেকে উজাড় করে দেয়া বটবৃক্ষের মতন।
নিজেকে উজাড় করে দেয়া বটবৃক্ষের মতন।
বারবার বলতে আমায় তুমি
“রমনীর যৌবন পদ্মপত্রে সঞ্চিত বৃষ্টির জল,
পৌষের ভোরের শিশির-বিন্দু ঘাসের ডাটায়,
যা একটুতে ঝরে পড়ে, ধূলায় মিশিয়ে যায়।
ক্ষনিকের মধু আমি
মধুনদী যে একদিন আমার শুকিয়ে যাবে,
আর সেদিন তুমি যদি পালিয়ে যাও,
নতুন কোন মধুভান্ডের সন্ধানে।”
কোকিলার মত নরম কন্ঠে বলতে আমাকে-
“আমার চোখের আড়াল হয়োনা লক্ষ্যিটি,
তোমাকে না দেখলে প্রাণটা আমার,
কী যে করে বলার কোন সাধ্য নেই আমার।
একদিন দুইদিন তুমার দেখা না পেলে,
আমার হৃদয়ে নামত অমাবশ্যার গহীন অন্ধকার।
চোখের দৃষ্টিশক্তি নিভে যেত একশভাগ,
অথচ
বুকের প্রকোষ্টে দাউ দাউ করত
কয়েক হাজার সূর্যের অগ্নিশিখা
জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হত সারাটা নরম বুক।
মনে হত বলাকা হয়ে উড়ে যাই
তোমার লোমশ বুকের সুউষ্ণ পরশে
তোমার হৃদয়ের সন্নিকটে
তোমার প্রশান্ত বালুচরে,
তোমার প্রেম-বাগানের নিরব নিরালায়।”
তোমার প্রেম-বাগানের নিরব নিরালায়।”
অনেক আর্ত শব্দাবলী হাওয়ায় ছড়াতে তুমি।
বলতে কাতর কন্ঠে-
“তোমার পৌরুষের দোহাই,
তোমার ভালবাসার দোহাই তোমাকে,
তুমি আমার অন্তরালে যেওনা, যেওনা কোনদিন।
আমি আজ এক আশ্রয়হীন নারী,
আমি নীড়হীন পাখি,
অবলম্বনহীন লতা।
তোমার লাগিয়া এক
গৃহহীন উদ্বাস্তু।
বসন্তের সঙ্গীহীন অতৃপ্ত কোকিলা।
তোমার বক্ষ তাই আমার নিরাপদ নীড়,
তোমার বক্ষে আমার ভালবাসার খনি,
তোমার বক্ষ পার্বতির চোখের নিযুম বৃষ্টি,
দেবদার বুকের বিষ নিঃশ্বাস,
অথচ তুমি আমার,
শান্তি-সুখের সোনালী পরশ।”
দেবদার বুকের বিষ নিঃশ্বাস,
অথচ তুমি আমার,
শান্তি-সুখের সোনালী পরশ।”
বলতে সাগরের ঢেউয়ের মতন-
“হাস্যজ্জ্বোল বসন্তের রোদে আমরা বাঁধবো বাসা,
কোন এক অচেনা লোকহীন সুদৃশ্য দ্বীপবনে,
তুমি আর আমি
দু’টি উদম বুনো পাখি।”
রচনাকালঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন
রচনাকালঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন