দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা- মাস্যাসুসেট, মিশিগান এবং ক্যানাডা
সফরপর্ব- ষোল
হেদায়েত চৌধুরীর সুন্দরী তরুনী পত্নী কাওসার খানম চৌধুরী। একমাত্র পুত্র ইয়াসিন এবং তিনকন্যা লাবিবা, আলিয়া, আমিরাকে নিয়ে তাদের সংসার। রাতে বড় শালক বেলায়েত চৌধুরীর বাসায় যাই। দূরত্ব মাত্র অর্ধ মাইল। বাসাটি বেশ বড় ও ডাউন পেমেন্টে কেনা। এখানে ডিনার করে আবার হেদায়েতের বাসায় ফিরে আসি। বেলায়েত চৌধুরীর কন্যার বিয়ে অত্যাসন্ন তাই বাসায় প্রচুর মেহমানের ভীড়। থাকার জন্য ভাবীর চাপাচাপি উপেক্ষা করে তাই চলে আসি।
কাওসার খানম যেমন সুন্দরী, তেমন কর্মঠ। চার সন্থান লালন-পালন, রান্না-বান্না সহ ঘরে বাইরে সব কাজ সামাল দেন। তার স্বামী হেদায়েত চৌধুরীর সময় নেই, সারাদিন ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। তার ফাস্টফুডের দোকানে কাজ করে আমার ভাগ্নি উর্মি ও তার একজন শালা-বউ।
কাওসার ভাবীর আতিথেয়তা অবর্ননীয়। তার বাড়ি মৌলভীবাজার শহরের গোবিন্দশ্রী মহল্লায়। সেখানে তার জন্ম ও বেড়ে উঠা।
কাওসার খানম পরদিন ডাইভ করে আমাদেরকে টরেন্টো হাইড পার্কে নিয়ে যান। এটি টরেন্টো শহরের বৃহৎ ও শ্রেষ্ট নেচার পার্ক। এই পার্কটি এত বড় যে হেঁটে দেখতে হলে পুরোদিন লেগে যাবে। এখানে আছে অসংখ্য টিলা, খেলার মাট, পিকনিক সেন্টার, ফিসিং লেক, ফোয়ারা, কুসুমবাগ এবং চিড়িয়াখানা। এই পার্কে এই প্রথম পূর্ন পেখম মেলা ময়ুর-ময়ুরীর প্রনয় নৃত্য উপভোগ করি। নীল সবুজ ও ধুয়া রঙের অপরূপ বিশাল ছাতা মেলে পুরুষ ময়ুর ছবির নায়কের মত নাচতে থাকলে নারী ময়ুরী আকৃষ্ট হয়ে তার চারদিকে মাথা নেড়ে নেড়ে বৃত্তাকারে নায়িকার মত ঘুরতে থাকে। এযেন প্রকৃতির রাজ্যে দুইজন মানব-মানবীর বল ড্যান্স।
হাইডপার্কের ফিসিং লেকটি চারপাশে পাহাড়ঘেরা, যা আয়তনে আমাদের রাজনগরের ৫/৬ টি কমলারানীর দীঘির সমান হবে। লেকের পানির উপর স্থাপিত ফিসিং প্লেটফর্মে বসে লোকজন বরশি দিয়ে মাছ ধরছেন। পার্কের ভিতর বিভিন্ন বেবী সিটিং ও বিদ্যালয়ের বাচ্চারা এসেছে বড় বড় স্কুল বাসে করে। তারা পড়ছে,খেলছে, হাতে কলমে শিখে নিচ্ছে প্রতিটি বৃক্ষলতা ও পশুপাখির নাম। সবুজ ঘাসের গালিচায়, বৃক্ষতলায় প্রকৃতির সাথে একাকার হয়ে যায় এদেশের বাচ্চারা। তারা মহানন্দে টিলায় গায়ে ও ঢালুতে গড়াগড়ি খায়। তাদের টিচাররা প্রত্যেকে এক এক জন বয়স্ক শিশু। শিশুদের সাথে তারা বাচ্চাদের মত একাত্ম হয়ে যান।(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন