সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

হুমায়ুন আহমদের নুহাশপল্লী এবং গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একদিনঃ

 হুমায়ুন আহমদের নুহাশপল্লী এবং গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একদিনঃ                                                                   

                                                 

বাংলাদেশের সর্বকালের সর্বাধিক জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমদের বাসা দখিনা হাওয়ার পাশেই কেটে গেল আমার ঢাকাজীবন। ধানমন্ডির এই বাসায় হুমায়ুন আহমদের আবছায়া থাকলেও তাঁকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হলে যেতে হবে তাঁর স্বর্ণহাতে গড়া স্বপ্নের নুহাশপল্লী। ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাজীপুর জেলার চৌরাস্তা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া বাজরের পিরুজালী নামক গ্রামে হুমায়ূন আহমেদ ৪০ বিঘা জমিতে নুহাশপল্লী গড়ে তোলেন। হুমায়ুনের অনেক নাটকই এখানে চিত্রায়িত হয়েছে। নাটকে নুহাশপল্লী বহুবার দেখেছি। তাঁর বিভিন্ন লেখায় নুহাশপল্লী এসেছে বারবার। আকাশস্পর্শী এই লেখক নিউইয়র্কের ভেলভিউ হাসপাতালে মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারা গেলে তাঁকে স্বপ্নের নুহাশপল্লীর নিভৃত সবুজ চত্বরে চিরশায়িত করা হয়। ঢাকায় আসার প্রায় তিনবছর হয়ে গেছে। আচমকা বদলি হয়ে যাবার শংকায় আছি। তাই প্রিয় লেখক হুমায়ুনের নুহাশপল্লীতে এক ঝটিকা সফরের সিন্ধান্ত নেই। সিলেটের বিভিন্ন শাখায় ব্যবস্থাপক থাকাকালে অনেক কর্মকর্তা আমার হাতে যোগদান করেন, যারা এখন ঢাকায় বিভিন্ন অফিসে কাজ করছেন। তাঁদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করি এবং তাঁদেরকে নিয়ে আমি গাজীপুর সফরের আয়োজন করি।

সায়েদ আব্দুল্লা যীসু সফরে অতি উৎসাহী। পরিকল্পনা পাস করে বন্ধদিনের জন্য ব্যাংকের গাড়ি চাই। আগের দিন জানানো হয় গাড়ি হবেনা। আমি পাস করা বিষয় সহজে বাতিল করিনা। ধানমন্ডি বাসায় সমন্দী আজিজ ভাইয়ের বড় গাড়ি গ্যারেজে রাখা। খোকন মিয়া তাঁর বিশ্বস্থ ড্রাইভার, বিগত ২৬ বছর ধরে সে এই বাসার গাড়িচালক। মালিক যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় চালক খোকন মিয়া প্রতিমাসে একবার এসে গাড়ি স্টার্ট দেয় ও বেতন তুলে নিয়ে গ্রামে চলে যায়। তাঁকে ফোন দিতেই জানালো স্যার আমি ঢাকায় আছি। খোকনকে সিডিউল জানিয়ে দিলাম ৫ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার সকাল ৭টায় গাজীপুর নুহাশপল্লী রওয়ানা হব।

মৌলভীবাজার আঞ্চলিক অফিস ও হেডঅফিসের আমার সহকর্মী বশির উল্লাহ, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখার ব্যবস্থাপক খালেদ আহমদ পলাশ, বরইকান্দি শাখার আমার সেকেন্ডব্যান আমিনুল ইসলাম ও ঋণবিভাগের মোঃ হাবিব মহসিন, জিএসডিডির সায়েদ আব্দুল্লা যীশু, নরসিংদীর জামিল আহমেদ রাজুকে নিয়ে পরদিন ছুটলাম। সেদিন তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘট থাকায় রাস্থায় কোন যানজট ছিলনা। দ্রুত উত্তরা পার হয়ে ময়মনসিংহ সড়কের পাশে একটি হোটেলে আমরা প্রাতঃরাশ সেরে নেই। গাজীপুর পেরিয়ে বনভূমি দিয়ে গাড়ি খানিক এগিয়ে যায়। চারলেন মহাসড়কের বামপাশের একটি রাস্থা দিয়ে ঢুকে মিরপুর বাজার পার হই। খালেদ গোগলে নুহাশপল্লীর নির্দেশক চালু করেন। সেই নির্দেশনা আমাদেরকে এলোমেলো শালবনের ভিতর দিয়ে নুহাশপল্লীর সামনে নিয়ে যায়। আশপাশে কোন লোকালয় নেই। উঁচু ডিবিগুলোতে একটার পর একটা শালবন। মাটির রঙ হলুদ। ফাঁকে ফাঁকে নিম্নভূমিতে ধান ও মাছক্ষেত। চারপাশ নীরব নির্জন। একজন লোক রাস্থার ওপাশে খানিক উচ্চভূমিতে গাড়ি পার্কিং স্পেস দেখান। পঞ্চাশ টাকার টিকেট কেটে গাড়ি পার্কিংস্পেসে পাঠিয়ে দিলাম। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়নাবিরাম।

নুহাশপল্লীর গেটের সামনে কিছুলোক বসে স্থানীয় কলা, পেঁপে, পান সুপারী, বিস্কুট, কুক, পানি ইত্যাদি বিক্রি করছে। প্রচুর দর্শনার্থী আসেন প্রতিদিন। পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। আমরা বিচিদার হাটুকলা কিনে খাই। আমাদের গ্রামের বাড়ির হাটুকলা ছিল বাদুরের খাবার। বহুদিন পর হাটুকলা খেতে বেশ স্বাধ পাই।

গেটের ভিতরে ঢুকেই টিকেট অফিস। বারশত টাকায় ছয়টি টিকেট নেই, ড্রাইভার ফ্রি। মনে মনে ভাবি হুমায়ুন আহমদ জাতির সম্পদ, তাঁর কাছে যেতে দুইশত টাকা ফি কেন? তখনি টিকেটের গায়ে লিখা দেখি, টিকেটের আয়ে পুরোটাই নুহাশপল্লীর রক্ষণাবেক্ষণ, কর্মচারীদের বেতবভাতা এবং হুমাউন আহমদ কতৃক তাঁর জন্মভূমি নেত্রকোনার কুতুবপুরে প্রতিষ্ঠিত শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের যাবতীয় খরচ মেঠানোর জন্য ব্যয় করা হয়। হুমায়ুন জন্মেছিলেন নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জের কুতুবপুর গ্রামে ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর।

সামনেই ডানদিকে হুমায়ুন আহমদের টালিনির্মিত একটি বড় মুরাল। মুরালের পাশেই একটি আপেল গাছ, বাংলাদেশে এই প্রথম কোন আপেল বৃক্ষ দেখলাম। অন্যপাশে বামনাকৃতির জাপানি বটবৃক্ষ। এই সুন্দর বামন বটের শিকড় গোলাকারে পাকা করে বাঁধানো, যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাকা বটমূল। একটি সুরম্য পাকা বাংলোর সামনে অভিনব ডিজাইনের সুইমিংপুল। মা ও সন্থানের বড় ভাস্কর্য্য, সর্বত্র ফুলগাছ লাগানো। বাংলোর পিছনে যেতেই আরেকটি নারীর ভাস্কর্য্য একটি ঢালা ভর্তি ফলফুল নিয়ে যেন আপনাকে বরণ করতে দাঁড়িয়ে আছে। একটি বালিকার ব্রুঞ্চমূর্তি চৌকিতে শুয়ে পাদুটি পিঠে ফেলে নিচে দিকে মুখ রেখে কি যেন ভাবছে। দোলানাতে দোল খাবার সুযোগ পাশেই। সবুজলতার সাজানো গেটের সামনে চৌবাচ্চাভর্তি মাছ, পারে পারে নানান ফুলগাছ। এখানেও ছোট্ট কংক্রিটের নারী। বৃষ্টিবিলাসে ঢুকে মনে হল এটি চাবাগানের বিশাল টিনের বাংলো। এই রেস্টহাউসের সামনে বিশালাকার এল আকৃতির বারান্দা, বারান্দাজুড়ে অনেকগুলো কাটের ভাস্কর্য্য। বারান্দার সাথে একটার পর একটা শয়নকক্ষ বাথসহ সাজানো। বাহিরে একটি আলাদা ঘরে একসাথে কিচেন এবং বিশাল খোলা ডাইনং হল। পাকঘরে মোরগ রান্না হচ্ছে। দুপুরের খাবারের প্যাকেজ জনপ্রতি ৪০০ টাকা।                                                   

এখানে নানা স্থাপনা তৈরির পাশাপাশি অসংখ্য ফলজ, বনজ গাছের পাশাপাশি ঔষধি গাছের বাগান করেন হুমাউন আহমদনুহাশপল্লী হুমায়ুন আহমদের স্বপ্নজগত। ছেলের নামে রাখা নুহাশপল্লীক হুমায়ূন আহমেদ মনের মতো করে গড়ে তুলেন নিজের হাতে লাগানো আড়াইশ প্রজাতির সবুজ গাছের এই নন্দনকাননে তিনি বারবার ছুটে যেতেন। ঢাকার ধানমণ্ডিতে বাসস্থান হলেও তিনি সুযোগ পেলেই নুহাশপল্লীতে গিয়ে সম কাটাতে। কখনো আসতেন সপরিবারে, কখনো আসতেন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে রাতভর আড্ডা দিতে। প্রতি বছর ১লা বৈশাখে নুহাশ পল্লীতে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হতো।

নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ স্যুটিং স্পট, কাটের দাবাখেলার খোলা ঘর, গাছের আগায় দুটি ছোট্ট টংঘর,  দিঘি আর তিনটি সুদৃশ্য বাংলো গড়ে তুলেন। একটিতে তিনি থাকতেন আর বাকি দুটিতে তিনি তার শৈল্পিক চিন্তাধারার বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। অকালে মৃত্যুবরবকারী কন্যার নামে স্থাপিত লীলাবতী দিঘির  দুইপারে ভিন্ন ডিজাইনের শানবাঁধানো দুটি ঘাট, দিঘির দিকে মুখ করে বানানো ছোট্ট কটেজকে তিনি ভূত বিলাসনাম দেন লীলাবতী পুকুরের মাঝখানে একটি ছোট্টদ্বীপ, বাঁশের সেতু দিয়ে এই দ্বীপে যেতে হয়। দুর্লভ সব ঔষধি গাছ নিয়ে যে বাগান তৈরি করেছেন, তার পেছনেই শাপলা সরোবরে রূপকথার মৎস্যকন্যা আর রাক্ষসের ভাস্কর্য কাছাকাছি আছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের ডায়নুসারের তিনটি বৃহদাকার ভাস্কর্য্য। পল্লবঘন বকুলতলায় টালিনির্মিত নামাজপড়ার খোলা আসন। নুহাশপল্লীতে একটি বড় কবুতর খামার এবং কয়েকটি গরুও বিচরণ করতে দেখি।

নুহাশপল্লীর একপ্রান্তে লিচু বাগানে হুমাউন আহমদের কাচঘেরা সাদা টালিনির্মিত সমাধি। আমরা বাহিরের রাস্থা দিয়ে হুমায়ুনের সমাধিতে প্রবেশ করি। এক অনন্য কারুকাজে এই সমাধি নির্মিত। ভিতরে লাইন ধরে ঢুকা ও বের হবার রাস্থা সাজানো। সমাধি প্রাঙ্গন বেশ প্রশস্ত, একসাথে অনেক লোক ঢুকে জেয়ারত করতে পারেন। সমাধিতে ঢুকেই হুমায়ুনের লিখা একটি গান মনে পড়ে গেল, ‘তোমার কাছে একখান জিনিস চাইগো দয়াময়/ চান্নিপ্রহর রাইতে যেন আমার মরণ হয়’। আমরা জানি হুমায়ুন আহমদ জ্যোৎস্না, বৃষ্টির শব্দ, বর্ষায় ব্যাঙের ডাক, বাদলের কদমফুল পছন্দ করতেন। তিনি যে রাতে মারা যান, নিউইয়র্কের সে রাত চাঁদনিপ্রহর ছিল কিনা জানিনা, তবে নিউইয়র্ক রাতে ঘুমায় না, সেখানে রাতও দিনের মত আলোঝলমলে।

হুমায়ুন ঝুমবৃষ্টি ভালবাসতেন। তখন সারা বাংলাদেশে ছিল ঝুমবৃষ্টির খেলা।     

এবার নুহাশপল্লীকে বিদায় জানিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে যাত্রা শুরু করি। গোগল ম্যাপ দেখে দেখে শালবনের ভিতর দিয়ে গাড়ি এগিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সামনে সামনে আসতেই একজন লোক পার্কিং ফি আদায়ে এগিয়ে আসেন। ফি কত বলতেই তিনি ২০০ টাকা চান। কয়েক বিঘা জায়গা জুড়ে খোলা সমতল পার্কিং স্পেস। অনেক অনেক গাড়ি এসেছে। পার্কিং ফি ১০০ টাকাই বেশি ছিল। পার্কিং স্পেসে গাড়ি ঢুকাতেই একজন যুবক এসে বললেন, আমাদের হোটেলে আসেন, ভাল খাবার এবং দামে সস্তা। সময় বাঁচানোর জন্য নুহাশপল্লীর পাকশালায় আমরা খেয়ে আসিনি। এখানে দুপুরের খাবার খেয়ে গাড়ি নিয়ে দূরে শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের গেটে চলে যাই। পার্কের এন্ট্রি ফি জনপ্রতি পঞ্চাশ।

বনবিভাগের কয়েকশত একর জায়গা জুড়ে এই সাফারি পার্ক। গেটে ঢুকেই বামদিকে এগিয়ে গিয়ে আবার টিকেট কেটে একটি সংগ্রহশালায় প্রবেশ করি। এখানে বিভিন্ন স্থলচর ও জলচর প্রাণীর গ্লাসের জারে রাখা মমি ঘুরে দেখি। একাংশে হাতির কংকাল, নানা জাতের পাখির ও সাপের নির্মিত প্রতিলিপি দেখা হয়। একটি পুকুরপারে ক্রকোডাইল জাতীয় কয়েকটি বড়কুমির এবং অন্য পুকুরপারে অলিগ্রেটার নামক ছোট কুমির শুয়ে থাকতে দেখি। পুকুর দুটি লোহার খাচায় আবদ্ধ। ধনেশ, কলিম ও বুনো হাঁস দেখে হিমালয়ান শকুনের খাচায় আসি। আমাদের ছোটকালে দেখা শকুনের ঝাঁক আবার উড়তে দেখি। প্রায় এক একর জায়গা জুড়ে ৪০ ফুট উঁচু সবুজ খাঁচা। শকুনের বংশবৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম বাসা রয়েছে। শকুন উপকারী পাখি। এরা মৃতপ্রাণী খেয়ে পরিবেশকে রোগ ও দুর্গন্ধমুক্ত করে। তাই শকুনকে বলা হয় সুইপার বার্ড। একটি সুন্দর ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে ওপারে গিয়ে হাতি দেখে আসি এবং সিলেটের টিলায় জন্মে এমন সব লতাগ্লুগ্নের দেখা পাই।

ফিরে এসে প্রজাপতি যাদুঘরে ঢুকে প্রজাপতির জীবনচক্র প্রত্যক্ষ করি। একটি পাত্রের সবুজ পাতায় লেগে আছে প্রজাপতির ডিম, পরের পাত্রে ডিম ফুটে বিছাকৃতি সবুজ মুককিট বের হয়ে পাতা খাচ্ছে, পরের পাত্রে এই বিছা মুখ দিয়ে লালা বের করে গাঁয়ের চারপাশে শক্ত খোলশ তৈরি করে গোলাকার ডিমে পরিণত হয়। সবশেষে এই ডিম কেটে বেরিয়ে এসেছে খুব সুন্দর প্রজাপতি। চোখের সামনে বিকট বিছা সুন্দর প্রজাপতিতে রূপান্তরিত হতে দেখে মহান আল্লাহের প্রশংসায় বলে ফেলি, সোবহান আল্লাহ।

এবার প্রজাপতির খাচায় ঢুকি। প্রায় দুইবিঘা জায়গা জুড়ে নানা প্রজাতির পুস্পবাগ এই খাঁচা। ঘন ফুলগাছের ভিতর দিয়ে চক্রাকার রাস্থা। ফুলে ফুলে রঙ বেরঙ্গের প্রজাপতি দেখে বের হই। জলহস্থীর পুকুরে আসি। পুকুরের ঘোলাজলে জলহস্তীর মস্তক খানিক ভাসতে দেখি। একটি বিশাল খাচায় সবুজ টিয়া ও আমাজানের নীলবর্ণের মাকাও পাখিরা ক্যাচ ক্যাচ করছে। দর্শকরা খাচার ভিতর ঢুকে পাখিদের সাথে খেলা করছে। লেমুর, বানর এবং ময়ুরের খাঁচায় সবার মুখোমুখি হই। সিঙ্গাপুর ও ফ্লোরিডার ডিজনিওয়াল্ডের বিশাল সাফারি পার্কে গাড়ি চড়ে ঘুরেছি। কক্সবাজার সাফারিতে গাড়ি নেই, হেঁটে হেঁটে দেখতে হয়। গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ঘুরে আসার জন্য বাস রয়েছে। একশত টাকার টিকেট কেটে বাসে চড়ি। অভয়ারণ্যে ঢুকেই হলুদ চিত্রাহরিণ, মায়া হরিণ, গন্ডার, বুনো মহিষ ইত্যাদির অবাধ বিচরণ বাসে বসে দেখা হয়। জেব্রা ও জিরাফের পাল দেখে বাঘের প্রাঙ্গণে গাড়ি প্রবেশ করে। বেশ কয়েকটি বাঘ আমাদের গাড়ির একদম পাশে দেখতে পাই। সিংহের রাজ্যে এসে রাস্তায় একটি কেশরহীন মেয়ে সিংহ ঘুমাতে দেখি। সিংহী আমাদের পানে চেয়ে অলস ঘুমিয়ে থাকে। এখানেও কয়েকটি পশুরাজের সাথে মোলাকাত হয়। এত এত খোলা চত্বরে বিচরণশীল প্রাণিজগত পার হয়ে গেটে আসতে প্রায় অর্ধ ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু সাফারির সিনেমাহলে সিক্স ডায়মেনশন ছবি দেখানো হয়। সময়ের স্বল্পতায় ছবি দেখে আসা আমাদের হয়নি। পথে পথে সবাইকে নামিয়ে দিয়ে ধানমন্ডি বাসায় পা রাখি তখন রাত ১০ টা বাজে। জুনিয়র সহকর্মীদের সাথে সেই দিনটি সত্যই উপভোগ্য হয়েছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন