থাইল্যান্ডের
ডায়রিঃ
সিঙ্গাপুর হতে ব্যাংককগামি
উড়ালযান মালয় উপদ্বীপের সৈকতরেখা বরাবর অগ্রসর হতে থাকে।
নিচে তাকিয়ে সাগরের তটরেখা, ছোট
ছোট দ্বীপমালা দেখা যাচ্ছে। সাগরে চলমান জাহাজ ও স্পীডবোট ঢেউভেঙ্গে চলাচল করার
ছবিও চোখে ভেসে উঠে। সবচেয়ে সুন্দর হয়ে ধরা দেয় মেঘমালা। সূর্যের উজ্জল কিরন পড়ে
মেঘমালা পেজা পেজা সাদা আলো বিকিরণকারী উজ্জ্বল তুলার পাহাড়ের আকার ধারন করে। আমি
আকাশ হতে অনেকবার মেঘ দেখেছি কিন্তু সূর্যের আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত এমন সুন্দর মেঘের
রূপ আর কখনও উপভোগ করিনি। মালয় উপদ্বীপের উপর দিয়ে উড়োজাহাজ যাবার সময় সেখানকার
বাড়ি, ঘর, রাস্থা, সবুজ পাহাড়, পরিস্কারভাবে দেখা যাচ্ছিল। এবার বিমানটি থাই সাগরে
চলে আসে। ব্যাংকক কাছে আসার আগে সাগরে বেশ কিছু দ্বীপ দেখা যায়। বিকেল ২টা ৪৫
মিনিটে আমরা থাইল্যান্ডের সুবর্নভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যাংককে অবতরন করি।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক সেই শহর যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশী পর্যটক আসেন।
দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন। ব্যাংককে সিলেট থেকে এসে আমাদের
জন্য অপেক্ষা করছেন মুছা রহমান রাসেল। তিনি সিলেট শহরের ঝেরঝেরি পাড়ার বাসিন্দা ও
হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী। এবার রাসেল যোগ হয়ে আমরা পাঁচ জনের দলে পরিনত হই।
ব্যাংকক বিমানবন্দর সিঙ্গাপুরের চেয়ে নিস্প্রভ হলেও ঢাকার চেয়ে অনেক উত্তম।
বিমানবন্দর হয়ে বের হয়ে একটি কার ভাড়া করে আমরা রাসেলের বুকিং করা আল জাজিরা হোটেলের
উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। এই স্থানটির নাম সুকুমভিত। এখানে বিখ্যাত বারুবগ্রাদ
হাসপাতালের অবস্থান। পাকিস্থান এম্বেসির সামনা দিয়ে গিয়ে কাছেই আমরা আল জাজিরা
হোটেলে উঠি। দুইজনের কক্ষের প্রতিদিনের ভাড়া ৫০০ বাথ। এক থাই বাথ সমান ২.৮০
বাংলাদেশি টাকা। মামরুনগ্রাদ হাসপাতালের কাছেই বাংলাদেশি ‘মনিকাজ হোটেলে’ চা সহ
পাচজনের দেশি খাবারের বিল আসে ২৫০০/- বাঃ টাকা। ব্যাংককে থাকাকালে আমরা প্রায়ই এই
হোটেলে খাওয়া দাওয়া করি। হোটেল পরিচালনায় আছেন বাংলাদেশের লোকজন। জিন্সপরা একজন
বিদেশি মহিলা হোটেল পরিচালনা করেন। তিনি বাংলা বুঝেন এবং অনর্গল বাংলায় কথা বলেন।
আমি তাকে বাঙ্গালী মনে করে তিনি বাংলাদেশের কোন জেলার অধিবাসী জানতে চাই। কিন্তু
তিনি আমাকে বিস্মিত করে হেসে হেসে জবাব দেন আমি একজন বার্মিজ। তিনি দীর্ঘ্যদিন ধরে
বাংলাদেশীদের সাথে কাজ করে বাংলা পুরাপুরি রপ্ত করে ফেলেছেন।
ব্যাংকক ওভারব্রিজের শহর,
বিমানবন্দর হতে মাইলের পর মাইল অভারব্রিজ চলে গেছে শহরে, ব্যাংককে রয়েছে বড় বড়
রাস্থা সেই সাথে বড় বড় অভারব্রিজ। দেশটি নাকি ষাটের দশকে আমাদের চেয়ে গরীব ছিল। আজ
উন্নয়নে এবং সমৃদ্ধিতে আমাদেরকে যোজন যোজন পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে। ব্যংকক খালের
শহর, এই পরিকল্পিত খালগুলো নৌ-চলাচলে ব্যবহৃত হয়। খালের পারে পারে পরিকল্পিত
ঘাট-স্টেশন। কাটের নৌকাগুলো ৭০/৮০ জন যাত্রি নিয়ে দ্রুত গতিতে খালপথে চলাচল করে।
প্রতি নৌকায় একজন চালকের সাথে থাকেন দুইজন সহযোগী। নৌকার রয়েছে সুউচ্চ ছাদ, জানালা
দিয়ে মানুষ দ্রুত উঠানামা করতে পারেন। খালপথে যানজট নেই। খালের দুপার সুন্দরভাবে
বাঁধানো। ঘাট-স্টেশনে সুন্দর প্লেটফরম বসানো যেন আমাদের রেলস্টেশন। আমাদের ঢাকাও
খালের শহর কিন্তু আমরা তা যানজট নিরসনে ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা নৌ-স্টেশন
‘নানাচান্দে’ গিয়ে একটি নৌকায় উঠি এবং ঘন্টাখানিক পর অনেক স্টেশনঘাট পার হয়ে
‘পতুনাম’ স্টেশন ঘাটে অবতরন করি। পতুনামের কাছে ব্যাংককের বিখ্যাত পাইকারী বাজার
‘সাম্পাইনং’ পরিদর্শন করি। ব্যাংকক শহরে সিঙ্গাপুরের মত এত ফুলবাগ নেই। তবে শহরটি
পরিকল্পিত ও পরিচ্ছন্ন। এখানে রিকশা, ঠেলাগাড়ি ইত্যাদি যন্ত্রহীন পরিবহন নেই।
এখানে মানুষ উড়াল ও পাতাল ট্রেনে সারাটা শহর সহজেই ঘুরে বেড়ায়। ব্যাংককে রয়েছে
অসংখ্য ম্যাসেজ পার্লার। স্বল্পবসনা সুন্দরী থাই মেয়েরা এসব পার্লার পরিচালনা
করেন। এসব ম্যাসেজ পার্লারের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। আরামদায়ক বেডে শুয়ে বিদেশীরা
আপাদমস্তক ম্যাসেজ করান।
ব্যাংককে রয়েছে অনেক সেক্স
ক্লাব। থাই সমাজে পতিতাবৃত্তি দূষণীয় কিছু নয়। থাইরা আর দশটা বৈধ পেশার মত এটাকে
একটা পেশাই মনে করে। পতিতাদেরকে থাই সমাজে কখনো অমর্যাদার চোখে দেখা হয়না। আসলে
এসব ম্যাসেজ পার্লার ও সেক্স ক্লাবের আকর্ষনে আরবী, নিগ্রো আফ্রিকান এবং পশ্চিমা
উন্নত দেশসমুহের হাজার হাজার জোয়ান-বুড়া ব্যাংককে ছুটে আসে। আমাদের দেশে নলওয়ালা
হুক্কা বিদায় হয়েছে অনেক আগে। অথচ ব্যাংককে দেখলাম বিদেশিরা হুক্কায় সুখটান
দিচ্ছেন। আশিয়ানের সর্ববৃহৎ বানিজ্য কেন্দ্র ব্যাংকক। এখানে পাইকারি দরে সস্তায়
পন্য বিক্রি হয়। যতবেশি একটি পন্য কিনা যায় ততই তার দাম কমে আসে। একজন বিমান
যাত্রি ৪০/৫০ কেজি মাল সাথে নিতে পারেন। ওজন করে করে বিদেশিরা পন্য ক্রয় করে
স্বদেশে নিয়ে যায়। তাই ব্যাংকক পূর্ব এসিয়ার একটি জমজমাট ব্যবসাকেন্দ্রে পরিনত
হয়েছে।
ব্যাংকক মহানগরের এক এক প্রান্তে
এক এক দেশের মানুষের সমাবেশ দেখা যায়। সুকুমভিতে আফ্রিকান কালো মানুষের ভীড় রয়েছে,
নানাচান্দে রয়েছে আরবি ও মিশরীয়দের পদচারনা। এখানে বাজার আরবি, হোটেল আরবি,
ব্যবসাও আরবি। আরব নরনারীরা এখানে গিজ গিজ করছে। আরবি মেয়েরা থাইল্যান্ডের নগ্ন
সমাজে আপাদমস্তক বোরকায় আবৃত হয়ে চলাফেরা করছেন। এযেন দুইটি সম্পূর্ন বিপরীত ধর্মী
তৈল এবং পানির সংমিশ্রন। ব্যাংককে বেশীরভাগ ব্যবসা পরিচালনা করেন সুন্দরী ও
স্বল্পবসনা থাই নারীরা। থাই নরনারীরা অনেকটা চীনাদের মত। আমাদের দেশের মনিপুরী ও
খাসিয়া সুদর্শন ও সুদর্শনারা থাই নরনারীদের প্রতিমূর্তি হিসাবে আমরা ধরে নিতে
পারি। থাইরা শান্তশিষ্ট ও হাসিখুশিমনা। রাস্থার কোথায়ও থাইদেরকে কোন ঝগড়াঝা্টি
করতে দেখিনি। ব্যবসার ফাঁকে ফাঁকে তারা স্যুপ জাতীয় খাবার খায়। মেয়েরা কোলের
বাচ্চা সাথে নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করে। প্রায় ব্যবসা প্রতিস্টানের সামনে খেলনা
আকারের প্যাগোডা থাকে, যেটির ভিতর থাকে ধ্যানমগ্ন বৌদ্ধমূর্তি। মূর্তির সামনে পড়ে
থাকে শরবত ও ফল। প্যাগোডার মিনি কাঠামোর উপর সাজান থাকে ফুলের মালা। থাইদেরে
সিঙ্গাপুরি বৌদ্ধদের চেয়ে অনেক বেশী ধার্মিক মনে হয়েছে। তবে সিঙ্গাপুরের মত এখানেও
ধর্মের প্রভাব আমার কাছে খুব অল্পই মনে হয়েছে। আমার মনে হয়েছে সিঙ্গাপুর এবং
থাইসমাজ ধর্মের পরিবর্তে বরং তাদের মানবিক বিবেকবোধ এবং যুক্তিবোধ দ্বারাই
পরিচালিত হচ্ছে।
থাইল্যান্ডের আয়তন ১,৯৮,৫০০ বর্গমাইল,
যাহা বাংলাদেশের সাড়ে তিন গুনেরও বেশী। অথচ লোকসংখ্যা মাত্র সাড়ে পাঁচ কোটি, যা
আমাদের তিন ভাগের এক ভাগ। দেশটির দেড়কোটি মানুষ অর্থাৎ সাড়ে তিন ভাগের একভাগ মানুষ
ব্যাংকক সিটি ও এর আশপাশে বসবাস করেন। বিশাল সবুজ শ্যামল দেশটির পুরোটাই জন
স্বল্পতায় ভরা। গ্রামের খামারবাড়িতে গরুরা এসি ঘরে ঘুমায়। থাইল্যান্ড নানাধরনের
সুমিষ্ট ফলের জন্য বিখ্যাত। কাচা পাকা দুধরনের আম খুব সুস্বাধু। থাইল্যান্ডের
তেতুল ও বরই চিনির মত মিষ্ট। সুমিষ্ট বড়বড় লিচু খোসা ছড়ালেই রস ঝরে পড়ে।
বৌদ্ধধর্মের এই দেশটি আল্লাহর দানে ধন্য হয়ে আছে। এদেশে সিফুডের বিচিত্র সমাহার
দেখে জিহ্বে জল আসে।
থাইল্যান্ড কখনো পরাধীন হয়নি,
তাই দেশটির আরেক নাম ‘শ্যাম’ বা মুক্তভূমি। বৃটিশরা মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর, দক্ষিন
মালয় দখলে নিলেও থাইল্যান্ড দখল করতে পারেনি। ফরাসিরা থাইল্যান্ডের অন্য প্রতিবেশী
লাওস- কম্বোডিয়া অধিকার করলে থাইল্যান্ড ভাগ্যক্রমে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যকার
বাফার স্টেইট হিসাবে নিজের স্বাধীনতা রক্ষায় সমর্থ্য হয়।
থাইরা ইংরেজদের মত রাজভক্ত জাতি।
ব্যাংককের বিভিন্ন রাস্থার পাশে রাজারানীর বড় বড় তৈলচিত্র সাজানো রয়েছে। বারবার
দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ও সরকার বদল হলেও কেহ রাজতন্ত্র উচ্ছেদে সাহসী হয়নি।
গনতন্ত্রের যুগে এসেও দেশটির রাষ্ট্র প্রধান হিসাবে আমাদের প্রেসিডেন্টের পদে
সেখানে নিয়মতান্ত্রিক রাজা অধিষ্টিত রয়েছেন। সরকার বারবার বদল হলেও রাষ্ট্র প্রধান
হিসাবে রাজা সবসময় সসম্মানে টিকে আছেন। থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক কাঠামো হিসাবে
নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ও গনতন্ত্র প্রাতিষ্টানিক রূপলাভ করেছে। থাইদের বর্তমান
রাজা ভূমিবল এবং প্রধানমন্ত্রী একজন পরমাসুন্দরী ধনী মহিলা ইমলাক সিনাওয়াত্রা।
আমি ব্যাংককে পাকিস্থানী
দূতাবাসের সামনে ২/৩ জন মুসলিম মহিলাকে কোলে বাচ্চা নিয়ে ভিক্ষা করতে দেখেছি। এই
বাচ্চাদের মাথায় টুপি এবং মহিলাদের মাথা কাপড়ে ঢাকা। এরা মালয় উপদ্বীপের থাই
প্রদেশের মালয়ি লোক। শোনলাম মালয়েশিয়া সীমান্তের এই থাই প্রদেশগুলো মুসলিম
অধ্যুষিত এবং অবহেলিত। এলাকাটি দরিদ্র বিধায় কিছু অসহায় মুসলিম ব্যাংকক এসে ভিক্ষা
করতে বাধ্য হন। আমাদের ভাংতি মুদ্রা এই মহিলাদের সামনে রেখে দেই।
২জুলাই ২০১৩ রবিবার। সকাল ১০টায়
সাম্পানং বাজারে গিয়ে ঘুরাঘুরি ও মালামাল ক্রয় করি। একজন নেপালী ভদ্রলোকের দোকানে
প্রবেশ করি। তিনি ঠান্ডা পানি দিয়ে আমাদেরকে আপ্যায়ন করে বললেন ইহা এরাবিয়ান
কালচার। ওইদিন জোহরের নামাজ পড়ে অভার রেলস্টেশনে আরোহন করে উড়াল ট্রেনে ব্যাংকক
স্টেডিয়াম স্টেশনে অবতরন করি। এটাই আমার জীবনের প্রথম উড়াল ট্রেন চড়া। আমাদের
এখানে আসার উদ্দেশ্য হল ব্যাংককের বিখ্যাত এম.বি.কে মার্কেট পরিদর্শন করা। ইহা
সিঙ্গাপুরের মোস্তফা মার্কেটের অনুরূপ একটি ব্যবসাকেন্দ্র। এখানে দেশবিদেশের ধনীরা
আসেন, মালের কোয়ালিটি যেমন ভাল দামও তেমন আকাশ ছোঁয়া। ওইদিন সন্ধ্যায় আমরা আল
জাজিরা হোটেলে ফিরে থাইল্যান্ডের বিখ্যাত পর্যটন নগরী ফুকেট আইল্যান্ড যাবার
সিন্ধান্ত নেই। ব্যাংকক হতে বাসে ফুকেটের ভাড়া ১১০০ বাথ এবং যেতে সময় লাগে ১১ ঘন্টা।
অন্যদিকে উড়োজাহাজে ভাড়া ১৯০০ বাথ এবং মাত্র এক ঘন্টায় সেখানে পৌছা যায়। আমরা
উড়োজাহাজে ফুকেট যাবার সিন্ধান্ত নেই এবং পাচজনের এয়ারটিকেট ক্রয় করি। ব্যাংককের
দ্বিতীয় আরেকটি বিমানবন্দর হতে থাইল্যান্ডের অভ্যন্তরে বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করা
হয়। বিমানবন্দরটি আমাদের সিলেট বিমানবন্দরের মত ছোট ও সুবিধাজনক। ৩রা জুলাই
বুধবার, ওরিয়েন্ট থাই এয়ারওয়েজের ছোট্ট বিমানটি সকাল ৯টায় আমাদেরকে নিয়ে উড়াল দেয়।
ফুকেটের অবস্থান মালয় উপদ্বীপের
থাইভূমিতে যার দক্ষিনে রয়েছে মালয়েশিয়া। ফুকেট ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী এলাকা।
আমাদের কক্সবাজার উপকুল হতে দক্ষিন দিকে অগ্রসর হলে মিয়ানমার উপকুল পার হলেই
থাইল্যান্ডের ফুকেট দ্বীপমালা। অনুচ্চ উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান থেকে নিচে
পর্বতমালা, শিলঙের পাহাড়ি রাস্থার মত একে বেকে চলা পার্বত্য পথ দেখা যায়। বলাকা
বিমানটি ফুকেটের নিকটবর্তী হলে নিচে ভারত মহাসাগরের অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপের ফিচার চোখের সামনে ভেসে উঠে। এখানে
আল্লাহের এক অপার মহিমা দেখে মহান দয়াময়ের প্রশংসা উচ্চারন করতে বাধ্য হই। ছোট ছোট
দ্বীপগুলো মেঘে মেঘে ঢেকে আছে এবং কেবল দ্বীপগুলোর উপর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দ্বীপের
পাশের সমুদ্র তখন মেঘ ও বৃষ্টিহীন রয়েছে। এই দ্বীপমালার উদ্ভিদ ও প্রানীজগতকে
লক্ষ্য করেই যেন মহান প্রভু এই বৃষ্টি ঝরাচ্ছেন। বিমান হতে লক্ষ্য করি ফুকেটের
আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন। বিমানটি অন্ধকার মেঘমালা বেদ করে নিচে নেমে আসতেই চারপাশে
কেবল নীলজল দেখা গেল। বিমান বুঝি সাগরে নেমে যাচ্ছে। ভয়ে অনবরত আল্লাহর নাম জপতে
থাকি। যাক সাগরের জলের উপর দিয়ে নেমে এসে সকাল ১০টায় আমরা সমুদেঘেষা ফুকেট
ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরন করি।
বিমানবন্দর হতে ফুকেট শহরের
দূরত্ব ৪/৫ কিলোমিটার। বিমানবন্দরের বাহিরে আর যাত্রিদের সাথে আমরা একটি বাসে চড়ি।
ফুকেটে তখন আমাদের শ্রাবনের মত নিঝুমধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল। আমাদের অনলাইনে বুকিং
করা ‘স্টানবু গেস্ট হাউস’ শহরের বাংলা
রোডে, বাস আমাদেরকে এই হোটেলের ঠিক সামনে নামিয়ে দিল। এত দূরদেশে এসে স্বদেশের
নামে একটি রাস্থা পেয়ে মনে হল এবুঝি বাংলাদেশ। আমাদের কক্সবাজারের মত ডিসেম্বর হতে
মার্চ ফুকেটের পর্যটন সিজন। এখন জুলাই মাস, তাই অফ সিজন। তাই মাত্র ৫০০ বাথে দুইজন
থাকার মত উত্তম স্যুট পেয়ে যাই স্টানবু গেস্ট হাউসে। চাবি নিয়ে স্যুট খোলে
পরিচ্ছন্ন বিছানায় মুখোমুখি বসা দুইটি রাজহাঁস দেখতে পাই। টাওয়াল দিয়ে শিল্প করে
বানিয়ে এই রাজহংস দুইটি সাজিয়ে রেখেছে হোটেল কর্মিরা। মনে মনে হাসলাম থাইরা শিল্প
জানে। আমরা সবাই যে রাজহংস, আমাদের কারো সাথে কোন রাজহংসী নেই।
আমরা পাঁচজন এবার ছুটে যাই
কোহিনূর ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে, মজা করে রাঁধা চিকেন রাইস সাবাড় করি। ফুকেট
নিরিবিলি পর্যটন শহর। গেস্ট হাউস গুলোর ছাদ ডালু ও রঙ্গীন টালী বসানো। এখানে
সর্বত্র আনন্দের বন্যা বইছে। ব্যবসাপাতি ব্যাংককের মত মেয়েদের দখলে। সন্ধ্যায়
পাশের পাতং সি-বিচে যাই। কক্সবাজারের মত উম্মাদ বাতাস ও উত্তাল ঢেউ। দুচারজন লোক
জলে নামছেন। সি-বিচের দু’দিকে দুইটি পাহাড় ভারত মহাসাগরে ডুকে গেছে। এই দুই পাহাড়ে
রয়েছে অফিস, বাড়িঘর ও গাছপালা। দুই পাহাড়ের ফাক দিয়ে তরংমালা এসে বালুর সৈকতে আছড়ে
পড়ছে। সত্যিই এক বিচিত্র সৈকত পাতং সি-বিচ। ৩রা জুলাই ২০১৩। ফুকেটের একটি বাজারের
সামনে কিছু ছেলেমেয়েকে জিমন্যাস্টিক জাতীয় ক্রীড়া প্রদর্শন করে জনতাকে আনন্দ দিয়ে
টাকা রোজগার করতে দেখি। থাইল্যান্ডে ছেলে ও মেয়ে আলাদা করে দেখা হয়না। অর্ধনগ্ন
ছেলেমেয়েরা জড়াজড়ি করে নানা কসরত প্রদর্শন করছে, যা আমাদের দেশে কল্পনা করা যায়না।
বিকেলে জল্বেষ্টিত একটি মার্কেটে ডুকি, পাশে পানির সুন্দর ফোয়ারা। এখানেও দ্রুত
বোতল ছোড়া ও ও ধরার খেলা দেখে মুগ্ধ হই। পর্যটকরা অভাব বিষ্ময়ে এসব ক্রীড়ানৈপুন্য
দেখে অর্থদান করছেন। ফুকেটের একটি হোটেলে অসংখ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ভাস্কর্য্য,
প্রথম ও দুতলায় বাঘগুলো শিকারে উদ্ধত। এই ভবনের খুটিগুলো বৃক্ষের মত ডালপালা ও
পত্রশোভিত। এই আরসিসি বৃক্ষগুলো ভবনের ভার বহন করছে। বাঘ ও বনের আড়ালে খাবারের
চেয়ার টেবিল পাতা। এযেন এক অনন্য ও বিচিত্র খাবার হোটেল। রাতের আগমনে পাতং সি-বিচ
আতশবাজির আলোকমালায় উজ্জ্বল হয়ে যায়।
৪জুলাই ২০১৩ সাল, বৃহস্পতিবার। গতকাল
আমরা জনপ্রতি ১১০০ বাথে ফুকেটের পাঁচটি ক্ষদ্র পর্যটন দ্বীপের ৭টি সাইট ভ্রমনের
প্যাকেজ ক্রয় করি। প্যাকেজে স্পীডবোট ভাড়া এবং
দুপুরের খাবার অন্তর্ভুক্ত। সকাল ৭টায় একটি ট্যুরিস্ট বাস এসে বিভিন্ন
হোটেলের নানা ভিনদেশী লোকদেরে নিয়ে ভারত মহাসাগরের তীরে একটি স্পীডবোট ঘাটে নিয়ে
যায়। জটলা বাঁধা লোকজনকে বিভিন্ন স্পীডবোটে উঠানো শুরু হয়। প্রতিটি স্পীডবোট বেশ
বড়সড় এবং যাত্রি ধারন ক্ষমতা ৫০/৬০ জনের কম নয়। আমাদের স্পীডবোট পরিচালনায় চালকের
সাথে দুইজন হেল্পার ছিলেন। একজন হেল্পার গাইড হিসাবে কাজ করেন। আমাদের গাইড ছিলেন
একজন দক্ষ কৌতুক অভিনেতা কালো লোক। চীনা জাপানি ৯/১০ বছর বয়েসী মেয়ে শিশুরা তার ডার্লিং
এবং বালকেরা বয়ফ্রেন্ড। সাগরে সাতার কাটার সময় মাছের লেজাকৃতির এক ধরনের নরম জুতা
পরে সাতার কাটতে বেশ আনন্দ লাগে। আমাদের জৌকার গাইড সাগরে মাছ, পোকা ও সাপের
কামড়ের ভয় দেখিয়ে অনেক জুতা ভাড়া দেন। সাপ ও পোকার কামড় খেলে উফ বলে ঢলে পড়ার
অভিনয় এমন আকর্ষনীয় করে দেখায় যে বিদেশীরা ১০০ বাথ ভাড়ায় অনেক জুতা ভাড়া করে এবং
সে প্রচুর অর্থ কামাই করে নেয়। ভারত মাহাসাগরের বুক চুরে ৮/১০ ফুট উঁচু ঢেউয়ের পর
ঢেউ ভেঙে স্পীডবোট তীব্রবেগে দু’দিকে পানির সুউচ্চ ফোয়ারা তৈরী করে অগ্রসর হতে
থাকে। চারপাশে সীমাহীন জলরাশির বুকে কেবল উঁচু উঁচু ঢেউয়ের খেলা। বড় ঢেউয়ে আঘাত
লেগে স্পীডবোট বারবার তীব্র ঝাকুনি খায়, সাগরের জলের ঝাপ্টা এসে গায়ে লাগে। ঢেউয়ের
বিরামহীন দোলায় ব্যামো না হওয়ার জন্য একসময় সবাইকে টেবলেট দেয়া হয়। আমরা সবাই এই
বমি আটকানোর টেবলেট মুখে পুরে দেই। কিছু ফলমূল হাতে হাতে পরিবেশন করা হয়। এই অথৈ
মহাসাগরে বোট নিমজ্জিত হলে সলিল সমাধি ছাড়া ভাগ্যে আর কিছু জুটবেনা। কাছে লাইফ
জ্যাকেট আছে বটে তাই অনবরতঃ পরম করুনাময়ের নাম জপতে থাকি। কিন্তু এই লাইজ জ্যাকেট
পরে আট দশ ফুট উঁচু ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করে টিকবে কতক্ষন। প্রায় আড়াই ঘন্টা
উল্কাবেগে মহাসগরের বুক চুরে অগ্রসর হবার পর আচমকা আমরা মহান আল্লাহর এক অপরূপ
সুন্দর সৃষ্টির সামনে এসে যাই। স্পীডবোট দুইটি সামুদ্রিক পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে গিয়ে
এক ঢেউহীন শান্ত সমুদ্রে এসে পড়ে। শক্ত শিলার পাহাড় সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে আঘাতে
ভেঙে নিচের দিক যেন সুড়ুঙ্গের মত হয়ে গেছে। আহ কি অপূর্ব দৃশ্য সাগরের জলরাশির উপর
ঝুলন্ত শিলার ছোট্ট পাহাড়ি দ্বীপ। সম্ভবতঃ এই দ্বীপটির নাম জেমস বন্ড আইল্যান্ড।
একটু পর স্পীডবোট পাশের গাড় সবুজ দ্বীপে যায়। এখানে ছোট বালুকা সৈকতে অসংখ্য
বানরের দল এবং পানিতে নানাবর্নের মৎস্য ঝাকের ছড়াছড়ি। পর্যটকরা বোট থেকে মাছ ও
বানরদের দিকে পাউরুটি ছুড়ে দেন। সৈকতে বানরের দল এবং পরিস্কার সাগরজলে মাছের ঝাঁক
লাফালাফি করে খাবার খায়। এই সুন্দর দ্বীপটির নাম মাংকি আইল্যান্ড। শিলার এই
দ্বীপটি কলসের মত ভেসে আছে সাগরে যা বেয়ে উপরে যাবার উপযোগী নয়। উপর থেকে নিচে
ঝুলে আছে লতানো সবুজ বন।
মাংকি দ্বীপ হতে হাজার ফুট দূরে
স্পিডবোট আমাদেরকে একটি ধবল বালির দ্বীপে নিয়ে আসে। দ্বীপটির নাম করাল রাচা দ্বীপ।
এই দ্বীপের সৈকতে কেঊ জলে সাঁতরাতে নামেনা। সুন্দর এই সৈকতের উপরের ধাপে এক
শিল্পময় খাবার হোটেল। টিলার উপর প্রাকৃতিক পরিবেশে দেশি বিদেশি মজার মজার খাবারে
সাজানো কয়েকটি টেবিল। এক টেবিলে রুটি, পরোটা, পোলাও এবং নুডুলস। পরের টেবিলে
রান্না করা ঝাল ফ্রাই, সামুদ্রিক মাছফ্রাই, চিংড়ি ও সবজি। অন্য টেবিলে ফিন্নি, দৈ
ও নানা ধরনের ফল-মূল, একদিকে চা-কফি সহকারে বিস্কুট। চীনা, থাই, ভারতীয় খাবারের
ছড়াছড়ি। বুফে খাবার, এত খাবার কত আর খাওয়া যায়।
একটু একটু বৃষ্টি হচ্ছে দেখে
আমরা ছাতা কিনতে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে অপূর্ব সুন্দর রিসোর্টে গমন করি। ছোট্ট
দ্বীপের নিরিবিলি রিসোর্ট ফুলে ফুলে সুসজ্জিত। পাশের ট্রেড সেন্টারে গিয়ে ২৫০ বাথে
আমরা পাঁচটি রেইন কোট ক্রয় করি। এই দ্বীপে খাবারদাবার সমাপ্ত করে গাইড আমাদেরকে
স্পীডবোটে ফেরার ডাক দেয়। স্পিডবোটের দিকে তাকিয়ে দেখি আমাদের জৌকার গাইড বুকে নারীর
সুউচ্চ স্থনওয়ালা বক্ষবেষ্টনী পরে কৌতুক করে সবাইকে ডাকছে। বিদেশি নরনারীরা দেখে
হাসছে, কেউ কিছু মনে করছেনা। কিন্তু বাংলাদেশে এধরনের কৌতুক করলে খবর হত। নিশ্চিত
এই গাইড মানুষের চপেটাঘাত খেত। অথচ থাই নগ্ন সমাজে এটা একটা নিছক কৌতুক মাত্র।
এসমাজে নগ্নতা ও যৌনতায় কোন পাপ নেই, লজ্জাও নেই।
এবার প্রায় দেড়-দুই হাজার ফুট
দূরে আমাদেরকে এক অবর্ণনীয় সুন্দর পীপী দ্বীপে নিয়ে আসে স্পিডবোট। পার্বত্য
দ্বীপটির সৈকতে অজস্র হলুদ ছাতার নিচে ইজিচেয়ার পাতা। সেখানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ।
জাপানি, চীনা, কোরিয়ান, বৃটিশ ও আমেরিকান শত শত অনিন্দ্য সুন্দর মানব- মানবীরা নিজ
নিজ বস্ত্রহরনে লিপ্ত। দশের পুড়ি হতে আশীর বুড়ি। সবার অঙ্গে লেগে আছে কেবল একটা
ন্যাংটি ও ক্ষুদে বক্ষবেষ্টনী। আমরা মামু ভাগনারা লজ্জায় অন্যদিকে পালাই। আমরা
চোখ-মুখ-কানে স্নরকলিং মেশিন লাগিয়ে পিপিদ্বীপের কাছের সাগরে ঝাপ দেই। ধবল স্বচ্ছ
গোলাপি বালির সৈকত পেরিয়ে পরিস্কার নীলজল। পানিতে ডুব দিয়ে দেখি তলায় সাতার কাটছে
লাল-হলুদ-সবুজ-সোনালী- বাসন্তী নানা রঙের মাঝের ঝাঁক। মাছেরা পাঁচ আঙ্গুলের ভিতর
চলে আসে অথচ ধরা যায়না, সটকে পড়ে। মেশিনে নিঃশ্বাস নিয়ে নিয়ে প্রবালের সাদা গর্ত
এবং খাদের উপর হাঁটতে থাকি। গর্তে বাইন মাছের মত সর্পাকার মাছ দেখা যাচ্ছে। আর
দেখা যাচ্ছে চিংড়ি, তারামাছ ইত্যাদি। পিপি দ্বীপের এই এলাকা স্নরকলিঙ্গের জন্য
নির্ধারিত। হলুদ ছাতার সামনে স্বচ্ছ গোলাপি বালির সৈকত, এই সৈকতে বিশাল বিশাল ঢেউ
আছড়ে পড়ছে। এখানে আমাদের কক্সবাজার সৈকতের মত ময়লা বা ঘোলাজল নেই। এই সৈকতের
জলরাশি বৃষ্টির জলের মত পরিস্কার। এই অপূর্ব সুন্দর বিচের বালিতে আচড়ে পড়া পানিকে
পাতলা সবুজ দেখায়। আবার দূরের পানির রঙ্গ গাড় নীল দেখায়। ঢেউগুলো কক্সবাজারের
ঢেঊয়ের চেয়েও উত্থাল মনে হয়েছে। হাফপ্যান্ট ও গ্যাঞ্জি পরে লাইফ জ্যাকেট গায়ে
জড়িয়ে আমরা এই ভারত মহাসাগরে ঝাপ দেই। লাইফ জ্যাকেট আমাদেরকে নিয়ে ঢেউয়ের সাথে
হাসের মত ধুলতে থাকে। চারপাশে অসংখ্য ভিনদেশি নরনারী ঢেউয়ে দোলে জীবনকে ভোগ করছে।
জীবনের সত্যিই এক আনন্দের দিন, বিচিত্র অভিঞ্জতার দিন ৪ঠা জুলাই ২০১৩ এভাবে ধীরে
ধীরে ভারত মহাসাগরের পিপিদ্বীপে হারিয়ে যায়। স্পিডবোটে এবার যাত্রি গুনে গুনে
উঠানো হয়। পিপি হতে স্পিডবোট খুব দ্রুতবেগে ফুকেটের পানে ধাবমান হয়। সামনে পর্যটন
নগরী ফুকেটের অনন্যসুন্দর পর্বতমালা দৃশ্যমান হয়। আমরা গাইডদের হাতে কিছু বখশিস
গুজে দিয়ে ফুকেট সমুদ্রঘাটে নেমে পড়ি। বাংলারোডের স্টানবু গেস্টহাউসে এসে আমরা
হালকা নাস্তা সেরে ভাড়া-কারে ফুকেট আন্তর্যাতিক বিমানবন্দরের দিকে রওয়ানা হই।
ফুকেটের বিশাল সাতলেনের রাস্থা দিয়ে আমরা এগিয়ে যাই, পিছনে পড়ে রয় অনিন্দ্যসুন্দর
শহর ফুকেট। রাত ১১টায় স্টার এসিয়ার বিমানটি ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ফুকেট ত্যাগ করে।
৫ম এবং ৬ষ্ট জুলাই ২০১৩ সাল।
ব্যাংকক শহরে ঘুরাঘুরি করি, নৌকায় সাম্পাইং বাজারে গিয়ে মালামাল কিনি। উড়াল ট্রেনে
ব্যাংককের বিখ্যাত এম.বি.কে মার্কেটে যাই। সিড়ি বেয়ে উপরের স্টেশনে উঠে উড়াল ট্রেন
জীবনে এই প্রথম চড়ি। একশত বাথ ভাড়া দিয়ে বিগ. সি. টেসকো লেটাস সুপার সেন্টারে
প্রবেশ করি।
মশামাছিহীন খালের শহর ব্যংককের
তাপমাত্রা সিঙ্গাপুর- মালয়েশিয়ার চেয়ে খানিকটা বেশী মনে হয়েছে। এখানেও নাকি ঋতু
বৈচিত্র নেই, আবহাওয়া সমভাবাপন্ন। এখানে হোটেলে লকার আছে এবং ঘুম হতে জাগানোর জন্য
এলারাম মেশিন রয়েছে। বৃষ্টির আধিক্যের জন্য সমগ্র দেশটি সবুজে সবুজে ছেয়ে আছে।
থাইরা দুইহাত জোড় করে মাথা খানিক নুয়ায়ে পরস্পরকে অভিবাদন করে। সুখী থাইরা আমাদের
চেয়ে ধনে জনে শান্তিতে অনেক বেশী সৌভাগ্যবান বলে আমার ধারনা হয়েছে। আমি
থাইল্যান্ডের আর উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে থাইভ্রমনের ইতি টানলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন