আবু
শফিক ভাই ও একজন পাগলের কাহিনি
প্রতিদিন
আমি বিশ পঁচিশটি ড্রাফট ইস্যু করি। গ্রাহকরা টাকা জমা দিয়ে একে একে সবাই চলে যেত
এবং বিকেলে এসে ড্রাফট নিয়ে যেত। একদিন বিকেলে এক দারুন বিপদে পড়লাম, গ্রাহক তার
ড্রাফট নিতে এলে একলক্ষ টাকার একটি ইস্যুকরা ড্রাফট ক্লিফে নেই। সেইদিন তন্নতন্ন
করে অনেক খুজেও ড্রাফটটির সন্ধান পেলামনা।
পাশের
টেবিলের আবুশফিক সাহেবের সহোদর ভাই কোন এককালে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে হঠাৎ হারিয়ে
যান। আবুশফিক ভাই প্রায়ই তার এই ভাইয়ের কথা স্মরণ করে হাহুতাশ
করতেন এবং কোন পাগল লোক দেখলে খুবস্নেহ করতেন।অন্যরা কিছুটা বিরক্ত
হলেও তিনি অর্ধপাগল লোকদেরকে সামনে বসিয়ে চানাস্তা করাতেন।
অফিসবেলা
শফিক ভাইয়ের আদর পাওয়া এমন একজন অর্ধপাগল লোক আমার সামনের চেয়ারে এসে বসেছিলেন।
আবু শফিক ভাইকে বললাম আমার সন্দেহ হচ্ছে এই পাগল হয়ত আমার সামনে রাখা ড্রাফটটি
নিয়ে গেছে। আবু শফিক ভাই বললেন, কোন চিন্তা করবেন না, আমি এই পাগলের বাড়িঘর সব
চিনি, অফিসের কাজ শেষে আপনাকে নিয়ে পাগলের বাসায় যাব। আমি অনবরতঃ আমার মায়ের
শিখানো হারান জিনিস ফিরে পাবার দোয়া ‘ইন্নালল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহির রাজেউন’ জপতে
থাকি।
শফিক ভাই
বিকেলে আমাকে নিয়ে পাগলের সোফানিঘাটের বাসায় হানাদেন। সারাটা বাসা খোজাখুজি করে না
পেয়ে হতাশ হয়ে এবার আমরা ঘরের বাহিরের চারপাশে খুঁজতে থাকি। হঠাৎ
ময়লার স্থুপে একটি সিগারেটের পকেট পড়ে থাকতে দেখে শফিক ভাই বলে উঠেন এই সিগারেট
বক্স নিয়ে পাগলটি ব্যাংকে গিয়েছিল। তিনি এই সিগারেটের বাস্ক খোলামাত্রই ভিতরে ড্রাফটটির সন্ধান পেয়ে যান। এযেম বিশাল খড়ের
স্থুপ হতে সূচ খোঁজে বের করার মত ঘটনা। আলৌকিকভাবে হারানো ড্রাফটটি ফিরে পেয়ে মনে
হল মায়ের শেখানো দোয়াটির বদৌলতে মহান আল্লাহ যেন আমাকে এক মহাবিপদ হতে রক্ষা
করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন