শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

একটি ল্যান্ডফোন লাভ, কি বিচিত্র বিড়ম্বনাঃ

 

একটি ল্যান্ডফোন লাভ, কি বিচিত্র বিড়ম্বনাঃ

সেই সময়ে আজকের নিত্য প্রয়োজনীয় হস্থযন্ত্র মোবাইল ফোনের কোন অস্থিত্ব ছিলনা। ডাঃ নুরজাহানের সাথে পাশের ফ্ল্যাটের ল্যান্ডফোনের মাধ্যমে ক্লিনিক ও রগীরা যোগাযোগ করত। ৪৬, কাজলশাহের বাসার নিচতলার বামফ্ল্যাটে আমরা ও ডানফ্ল্যাটে লন্ডন প্রবাসী ভবন মালিক জালাল আহমদের সৎ মাতা ও শালক আমির আলী অবস্থান করতেন। এই ভবনে দাপটের সাথে রাজত্ব চালিয়ে যেতেন লন্ডনির কৃষ্ণকায় অকৃতদ্বার এই শালা আমির আলী জগন্নাথপুরের শিরামিসী গ্রামের আমির আলী এই ভবনের আটঘর ভাড়াটিয়ার উপর হুমকি ধমকি ও মাতব্বরী করে বেশ আনন্দ পেতেন। মনে হত দোলাভাই নন, তিনিই যেন এই বাসাটির আসল মালিক। দেশ বিদেশের আত্মীয়স্বজনরাও ফোন করলে আমাদের ঐ পাশের ফ্ল্যাটে দৌড়াতে হয়ত।

পাশের ফ্ল্যাটের খালাম্মা ছিলেন একজন উদারমনা আমায়িক ভদ্রমহিলা তার সব আত্মীয়রা আমার গিন্নীর মাধ্যমে ফ্রি চিকিৎসা ও ঔষধ সুবিধা পেতেন তাই আমাদের কল এলে তিনি খুশি হয়ে আমার গিন্নীকে ডেকে দিতেন। তারপরও অন্যকে অযথা বিরক্ত করা হতে বিরত হতে আমি ২০,৩০০/-টাকার পে অর্ডার দাখিলপুর্বক নুতন ল্যান্ডফোনের জন্য আবেদন করলাম। একখান খাসামাল আমাদের সরকারি টি এন্ড টি বিভাগ। মাস যায়, বছর যায়, ফোনের কোন খবর নেই। প্রায় এক বছর পার হলে তালতলা টি এন্ড টি অফিসে তাগদা দিতে গেলে তারা বলল তাড়াতাড়ি টেলিফোন পেতে হলে মন্ত্র কিংবা এম পি র সুপারিশ লাগবে। একটা ল্যান্ডফোন বের করতে পুবালী ব্যাংকের রেস্টহাউসে গিয়ে দক্ষিণসুরমার এমপি চাচাত ভাই শফি এ চৌধুরীকে বিরক্ত করে তার সুপারিশ আনলাম।

আমার টেলিফোন সংযোগ অতীব প্রয়োজন, অথচ সরকারের অচলপ্রায়  টি এন্ড টি বিভাগের সিলেট অফিসে এক বছর ধরে ছুটাছুটি করে আমার জুতার তলা নষ্ট হয়ে গেছে। লন্ডনের ভাই তাহমিদ চৌধুরী বললেন লন্ডনে আবেদন করার মাত্র আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে বাসায় ল্যান্ডফোন সংযোগ হয়ে যায়। বছর পেরিয়েও কেন একটা টেলিফোন সংযোগ হয়না ভেবে তিনি বিষ্মিত ও হতবাক হন আসলে এভাবেই বাংলাদেশে চলে সরকারি অফিসের ব্যবসা ও গ্রাহকসেবার লীলাখেলা। 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন