দাউদিয়া জি ইউ সিনিয়র মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচিতঃ
জুন ২০২০ সাল। আমি বাসে ঢাকা
যাচ্ছি। হঠাৎ মোবাইলে রিং কল হয়। ফোন ধরতেই দাউদপুর জি ইউ সিনিয়র মাদ্রাসার
প্রিন্সিপাল মোঃ রিয়াজ উদ্দীন জানালেন, স্যার আপনাকে আমরা দুই বৎসরের জন্য
মাদ্রাসা কমিটির প্রতিস্টাতা সদস্য নির্বাচন করেছি। যা এইমাত্র সরকার হতে অনুমোদিত
হয়ে এসেছে। এটা বিনামেঘে বজ্রপাতের মত ঘটনা। আমার জানা ছিলনা আমি এই দায়িত্ব পাবো।
এই মাদ্রাসা আমাদের জায়গায় আমার পূর্বপুরুষরা প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমার পিতামহ মোঃ
মোফজ্জিল চৌধুরীর সহোদর আবুল বাশার চৌধুরীর পত্নী সফর চান্দ বানু ও শ্বাশুড়ি
কোনারবাড়ির ফজিরা খাতুন একটি ওয়াকফ দলিলের মাধ্যমে এই মাদ্রাসায় ১৮৯১ সালে ভিন্নাকান্দি
মৌজায় একথাকে প্রায় ২২ একর ভুমিদান করেন। আমার পিতা সফিক চৌধুরীও এখানে তিনতলা ভবন
নির্মাণের জন্য ভূমিদান করেন। তাই এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে আমাদের বাড়ির কেউ না কেউ সব সময় দায়িত্ব পালন করেন। অতীতে
আমার পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ, চাচা, চাচাতো ভাইরা বিভিন্ন যুগে এই মাদ্রাসা
পরিচালনার পবিত্র দায়িত্ব পালন করে গেছেন। এই মাদ্রাসার সদস্য হওয়া আমার কাছে
তাই বংশীয় দায়িত্বই মনে হল। তাই আমি মনে মনে খুশি হলাম ও মহান
আল্লাহের দরবারে শোকরিয়া প্রকাশ করলাম।
সেপ্টেম্বরে এই কমিটির প্রথম সভা
হয়, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে আমি যেতে পারি নি। আমি চাকুরির সুবাদে ঢাকায় থাকি, তাই জরুরী সভাসমুহ ব্যাংকের সাপ্তাহিক ছুটির দিন
শনিবারে করার সিন্ধান্ত হয়। ১৪ নভেম্বর ২০২০ শনিবার। কমিটির দ্বিতীয় সভার আমি ঢাকা
হতে গিয়ে যোগদান করি। এই সভায় যোগদান করতে ঢাকা হতে দাউদপুর
যান হংকং সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশনের বাংলাদেশ কাউন্ট্রি প্রধান রিয়াজ এ চৌধুরী।
তিনি আমার চাচাতো ভাই প্রাক্তন পুলিশ প্রধান ই এ চৌধুরীর সুযোগ্য পুত্র। রিয়াজ
চৌধুরী প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে এই
মাদ্রাসায় উত্তর ভবনে ২য় ও ৩য় তলা এবং দক্ষিণ ভবনে ২য় তলা
নির্মাণ করে দেন। আমার দাদি মেহের চান্দ বানুর দেয়া বাইশ একর
জায়গা বুলডজারের দিয়ে খনন করে রিয়াজ এ চৌধুরী একটি বিশাল মৎস্য খামারে পরিণত করেন।
এত এত অবদানের জন্য তিনি এই মাদ্রাসার আজীবন দাতা সদস্য পদ লাভ করেন।
এই ১৪ নভেম্বর ২০২০ দাউদপুর মাদ্রাসার
কমিটি সভায় এসে আমি একটি ঐতিহাসিক ঘটনায় শরিক হবার সৌভাগ্য লাভ করি। সেইদিন
মাঝেরবাড়ির পিছনে ই এ চৌধুরী টেকনিকেল কলেজের উদ্বোধন
অনুষ্ঠান হয়। একটি ছোট প্যান্ড্যাল টাঙ্গিয়ে রিয়াজ এ চৌধুরী তাঁর পিতা ই এ চৌধুরীর
স্মরণে সম্পূর্ণ নিজ খরচে কয়েক কোটি টাকার বাজেটে কলেজ
নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তাঁর সাথে ছিল নির্মাণ কন্ট্রাক্টর, জরিপ দল ও সিভিল
ইঞ্জিনিয়ারিং টিম। দাউদপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রিয়াজ উদ্দিন, লতিফা শফি চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আমিরুল আলম খান, জাপান বাংলাদেশ
ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের প্রধানশিক্ষক সহ অনেক গণ্যমান্য লোক উদ্ভোধন সভায় যোগ দেন।
রিয়াজ এ চৌধুরী বললেন, তিনি আবুলেইস ভাইসহ আর অনেকের কাছ থেকে এইসব জমি ক্রয় করে
এখানে এই কলেজ নির্মাণ করছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন