পিবিএল, সিলেট শাখা, বন্দরবাজার, দ্বিতীয়
পর্বঃ
অবস্থান
কালঃ ১৬ আগষ্ট ১৯৯৫ সাল হতে ৭ মার্চ ২০০৪
সাল।
অবস্থানঃ
৮বৎসর ৬মাস ২১দিন।
১৬ আগষ্ট
১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে সেইকালের অফিস সুচনার সময় সকাল ৯ঘটিকায় আমি বন্দরবাজারে পূবালী
ব্যাংকের নিজস্ব ভবনে অবস্থিত সিলেট শাখায় প্রবেশ করি। অফিসটিতে দ্বিতীয়বারের এই
প্রবেশ হল আমার চাকুরী জীবনে কোন অফিসে সবচেয়ে দীঘ্যমেয়াদী কার্যকাল। এই একই অফিসে
আমাকে একটানা কাটাতে হল পরবর্তী আট বৎসর ছয় মাস একুশ দিন। ফেলে আসা কদমতলী শাখার
ব্যবস্থাপক মিনহাজুল ইসলাম কতৃক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ সূত্র নং পিবিএলঃ কদমতলীঃ
সিলঃ স্টাফ- ০১ / ৫৭৯ / ১৯৯৫ তারিখঃ ১৫।০৮।১৯৯৫ এর
নির্দেশে আমি সিলেট শাখায় যোগদান করি। আগের মেয়াদের বিদায়বেলা এখানে রেখে যাওয়া
ব্যবস্থাপক ইলিয়াস উদ্দিন আহমদকে আবার যথাস্থানে অধিষ্টিত পেলাম। কিন্তু মাত্র
দেড়মাস পর ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ তিনি বদলি হয়ে যান ও তার স্থলাবিষিক্ত হন সহকারী
মহাব্যবস্থাপক এ কে এম মহিউদ্দিন।
টাঙ্গাইলের
অধিবাসী এ কে এম মহিউদ্দিন ছিলেন কট্টর আওয়ামি লীগ। তিনি রাখডাক ছাড়াই আওয়ামী
লিগের গুণকীর্তন করতেন। বসের অনুসরনে অফিসের
বসকে খুশি করতে গিয়ে সবাই আওয়ামী লিগের প্রশস্তি গাওয়া শুরু করেন। স্যারের চেম্বার
বঙ্গবন্ধুর বন্দনাকেন্দ্রে পরিণত হয়। একদিন
কোন এক অনুষ্ঠানে তিনি ও বৈদেশিক বিনিময় কর্মকর্তা
খলিলুর রহমান আমার দাউদপুরের বাড়িতে গিয়ে দুপুরের খাবার খান। বিগত
তেরমাস কদমতলী শাখার জলপান করে ফিরে এসে এখানে সামান্য অদল বদল ছাড়া প্রায় সবাইকে
স্বস্বস্থানে বসা দেখতে পেলাম।
বিদ্যুৎবিল
আদায়ে বসতেন ক্যাশিয়ার আব্দুল ওয়াহাব। এখানে প্রচন্ড ভিড় হত। লোকজন দীর্ঘ্য লাইনে
দারিয়ে অধৈর্য্য প্রায়ই তাদের নিজেদের মধ্যে কিংবা ক্যাশিয়ারের সহিত ঝগড়াঝাটি করত।
অনেক সময় মহিউদ্দিন স্যারকেও চেম্বার হতে বেরিয়ে ঝগড়া থামাতে হত। একদিন মহিউদ্দিন
স্যার আমাকে বললেন এই ঝামেলার বিদ্যুৎবিল কাউন্টার আমরা চাইলেও বন্ধ করতে পারব না,
বলুন তো এখানে লোকজনের এই নিত্যদাঙ্গা কিভাবে থামান যায়। আমি বেশ চিন্তা করে বললাম
এই চেয়ারে কোন এক সুন্দরী মেয়েকে বসিয়ে দিলে এই ঝগড়াঝাটি আমার মনে হয় কমে যাবে।
স্যার আমার পরামর্শে এবার সুন্দরী ক্যাশিয়ার রাজিনকে সেখানে বসালেন। কিছুদিন পর
মহিউদ্দিন স্যার আমাকে বললেন, কুরেশী সাহেব আপনার পরামর্শে বেশ ভাল ফলাফল আসছে।
এখন বিদ্যুৎবিল কাউন্টারে তেমন কোন গ্যাঞ্জাম হচ্ছেনা, আপনার পরামর্শের জন্য
ধন্যবাদ। সোনালী ব্যাংকের একজন অফিসারের কন্যা রাজিন এখন ক্যানাডা প্রবাসী।
৫ নবেম্বর
১৯৯৫ সাল। দিনটি আনন্দের কারণ এইদিন আমাদের
পরবর্তী প্রজন্মের প্রথম সদস্য আমার অগ্রজ তাহমিদুর রহমান চৌধুরীর পুত্র আজফার
রহমান চৌধুরী লন্ডনের এক হাসপাতালে জন্মগ্রহণ
করেন। আমাদের এই প্রজন্মের প্রথম পুরুষের আগমনে আম্মাআব্বাসহ পরিবারের সবাই
আল্লাহর দরবারে শোকরানা আদায় করেন। বেশ আড়ম্বরে আমাদের দাউদপুরের বাড়িতে তার দাদা
দাদি আকিকা অনুষ্ঠান করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন